সাবাইস বুদ্ধি/তৃতীয় পরিচ্ছেদ
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
থানা হইতে যে সকল পুলিস কর্ম্মচারীগণ আসিয়া উপস্থিত হইলেন, তাহাদিগের মধ্যে সর্বপ্রধান কর্ম্মচারী ছিলেন একজন ইংরাজ। তিনিও ঐ জহুরির নিকট সমস্ত অবস্থা অবগত হইয়া পরিশেষে আমাকে কহিলেন, “এখন আমাদিগের কি কর্তব্য? আমি যতদুর শুনিতে পাইলাম, তাহাতে বেশ বুঝিতে পারিতেছি, এই মোকদ্দমার সহিত আমাদিগের কোন রূপ সংস্রব নাই, ইহা সম্পূর্ণরূপ দেনা পাওনা ঘটিত মোকদ্দমা। সেই ভদ্রস্ত্রীলোকটা অলঙ্কারের মূল্য স্থির করিয়া খরিদ করিয়া লইয়া গিয়াছে। এখন যদি সে তাহার মূল্য না দেয়, তাহা হইলে দেওয়ানি আদালত আছে,—দেওয়ানি মোকদ্দ্মায় আমরা হস্তক্ষেপ করিব কেন?”
ইংরাজ-কর্ম্মচারীর কথা শুনিয়া আমি কহিলাম, “আমার মতে ইহা দেনা পাওনার মোকদ্দমা নহে; সেই ভদ্র স্ত্রীলোকটী যে বঞ্চনার অপরাধ করিয়াছেন, তাহাতে আর কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। তাহার উপর যে ব্যক্তি ঐ অলঙ্কার বহন করিয়া লইয়া গিয়াছে, তাহারও আর কোন সন্ধান পাওয়া যাইতেছে না। পরিশেষে যদি তাহার মৃতদেহ পাওয়া যায়, তাহা হইলেও কি দেওয়ানি আদালতে ঐ মোকদ্দমা চলিবে?”।
ইংরাজ কর্ম্মচারী। তাহাকে যদি জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়? যাহা হউক, যখন আমরা এখানে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছি, তখন ইহার অনুসন্ধান হউক। আমার সহিত যে সকল কর্ম্মচারী আসিয়াছে, তাহারা রহিল, আপনিও আছেন। যে যে অনুসন্ধান করার প্রয়োজন বিবেচনা করেন, তাহা আপনারা করুন, আমি এখন চলিলাম। আমার হস্তে আরও কতক গুলি বিশেষ কার্য্য আছে।
এই বলিয়া ইংরাজ-কর্ম্মচারী সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিলেন। তাঁহার সহিত যে কয়েকজন কর্ম্মচারী আসিয়াছিলেন, তাহার মধ্যে একজন পশ্চিম দেশবাসী বহু পুরাতন কর্ম্মচারী ছিলেন; কলিকাতা সহরের অনেক অবস্থা তিনি উত্তমরূপে জানিতেন। তাঁহার উর্দ্ধতন ইংরাজ কর্ম্মচারী সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিলে তিনি কহিলেন, “উহার গতিকই ঐরূপ, মামলা মোকদ্দমা উনি ঐরূপ ভাবেই অনুসন্ধান করিয়া থাকেন, আর অনুসন্ধানের উনি জানেনই বা কি? উনি উপস্থিত থাকিলে কার্য্য আরও নষ্ট হইত, প্রস্থান করিয়াছেন ভালই হইয়াছে। এখন কোন পন্থা অবলম্বন করিয়া এই মোক-
দ্দমার অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইতে হইবে, তাহাই বলুন, সেই পন্থা অবলম্বন করিয়া আমরা ক্রমেই অগ্রসর হই।”
ঐ কর্ম্মচারীর কথা শুনিয়া আমি অতিশয় সন্তোষ হইলাম ও তাহাকে কহিলাম, “যাহার দ্বারা এই কার্য্য সম্পন্ন হইয়াছে, তাহা আমি বুঝিতে পারিয়াছি, অনুসন্ধান করিয়া এখন তাহাকে বাহির করিতে পারিলেই আমাদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হইবে।”
কর্ম্ম। কাহার দ্বারা এই কার্য্য সম্পন্ন হইয়াছে?
আমি। তুমি সুশীলাকে চিন?
কর্ম্ম। কোন্ সুশীলা?
আমি। যে সুশীলা পূর্ব্বে মেহিদীবাগানে বাস করিত। সে বেশ্যার কন্যা, প্রথমে কোন নূতন সম্প্রদায় বিশেষের মতে বিবাহ করিয়া কিছুদিবস দিনযাপন করে, পরে আপন স্বামীকে পরিত্যাগ করিয়া একজন কৌন্সলির প্রণয়ে কিছুদিবস মুগ্ধ থাকে। পরিশেষে নানারূপ জুয়াচুরি ব্যবসা অবলম্বন করিয়া দিনপাত করিতে আরম্ভ করে। সে শিক্ষিত, ইংরাজি বাঙ্গলা বেশ জানে, ও প্রায়ই বড় বাড়ীতে বড়মানুষি ধরণে বাস করিয়া থাকে। সর্বশেষে যখন সে একটী জুয়াচুরি কার্যে লিপ্ত থাকার অপরাধে ধৃত হয়, সেই সময় সে মেহেদীবাগানে একখানি সাহেবি ধরণের পাকা বাড়ীতে বাস করিত। ঐ মোকদ্দমায় সে অব্যাহতি পায়। তাহার পর আমি শুনিয়াছি যে, সে ঐ বাড়ী পরিত্যাগ করিয়া অপর কোন স্থানে বাস করিতেছে। যদি অনুসন্ধান করিয়া উহাকে বাহির করিতে পারেন, তাহা হইলে এই মোকদ্দমার কিনারা হইতে আর ক্ষণমাত্রও বিলম্ব হয় না। আমি শপথ করিয়া বলিতে
পারি, এ কার্য সুশীলা ভিন্ন অপর আর কাহার দ্বারা সম্পন্ন হয় নাই।
কর্ম্ম। না মহাশয়, আমি তত তাহাকে চিনি না বা তাহার অবস্থা আমি পুর্ব্বে জানিতাম না, কিন্তু আপনি আমাকে তাহার সেই মেহিদীবাগানের বাড়ী দেখাইয়া দিন, আমি অনুসন্ধান করিয়া সে এখন যেখানে আছে, তাহা নিশ্চয় বাহির করিয়া দিব।
কর্ম্মচারীর এই কথা শুনিয়া আমি তাহাকে সঙ্গে লইয়া তখনই মেহিদীবাগান অভিমুখে গমন করিলাম, দোকানের অধিকারী সেই জহুরিও অমাদিগের সঙ্গে গমন করিলেন।
মেহেদীবাগান গমন করিবার পূর্ব্বে ভাবিলাম, যে কর্মচারীর দ্বারা সুশীলা ইতিপূর্ব্বে ধৃত হইয়াছিল, একবার তাহার সহিত প্রথম দেখা করা আবশ্যক। মনে মনে ইহা স্থির করিয়া সেই কর্ম্মচারী এখন যে থানায় আছেন, সেই থানায় গমন করিলাম। সেইস্থানে গিয়া তাহার সহিত সাক্ষাৎ হইল না, কিন্তু জানিতে পারিলাম, হাসপাতালে এক ব্যক্তি জখম হইয়া ভর্তি হইয়াছে। এই সংবাদ পাইয়া তাহার অনুসন্ধানার্থ তিনি সেই হাসপাতালে গমন করিয়াছেন। ঐ স্থান হইতে মেহেদীবাগান গমন করিতে হইলে ঐ হাসপাতাল প্রায় আমাদিগের রাস্তাতেই পড়ে, সুতরাং ঐ হাসপাতালে ঐ কর্ম্মচারীর সহিত সাক্ষাৎ করিয়া মেহেদীবাগান গমন করাই স্থির করিলাম।
হাসপাতালে গমন করিয়া দেখিলাম, সেই কর্ম্মচারী সেই স্থানেই আছেন। তাঁহার নিকট হইতে অবগত হইলাম, এক ব্যক্তি মস্তকে অতিশয় জখম পাইয়া বেহুস অবস্থায় ময়দানে পড়িয়াছিল, একজন প্রহরী তাহাকে ঐরূপ অবস্থায় পাইয়া হাসপাতালে আনয়ন করে, কিন্তু ঐ ব্যক্তি যে কে, কোথা হইতে সে ময়দানে আসিল ও কিরূপেই বা সে মন্তকে আঘাত প্রাপ্ত হইল, তাহার কিছুই বুঝিয়া উঠিতে পারিতেছি না। সে এখনও অচৈতন্য অবস্থায় রহিয়াছে, চৈতন্য হইবে কি না, জানি না। যদি চৈতন্য হয়, তাহা হইলেই উহার নিকট হইতে সমস্ত অবস্থা অবগত হইতে পারিব, নতুবা কোন্ উপায় যে অবলম্বন করিতে হইবে, তাহার কিছুই স্থির করিয়া উঠিতে পারিতেছি না।
কৌতূহলের বশবর্ত্তী হইয়া আমরাও উহাকে দেখিবার নিমিত্ত গমন করিলাম, আমাদিগের সমভিব্যাহারী জহুরিও অমাদিগের সহিত গমন করিলেন। উহাকে দেখিবামাত্র জহুরি চীৎকার করিয়া উঠিলেন ও কহিলেন, “আমরা যাহার অনুসন্ধান করিতেছি, ইনিই আমার সেই কর্ম্মচারী, কে ইহার এইরূপ সর্ব্বনাশ করিল?”
জহুরির কথা শুনিয়া আমরাও অতিশয় বিস্মিত হইলাম ও মনে করিলাম, সেই স্ত্রীলোকটা কি ইহাকে এইরূপে আহত করিয়া হতজ্ঞানে ময়দানে নিক্ষেপ করিয়া চলিয়া গিয়াছে? স্ত্রীলোকের দ্বারা কি এইরূপে হত্যাকার্য্য সম্পাদিত হইতে পারে? কি দস্যুগন এইরূপ একটা দল সৃষ্টি করিয়া কার্য্যক্ষেত্রে পদবিক্ষেপ করিয়াছে? ঐ স্ত্রীলোকটীও কি তাহাদিগের দলের একজন। ঈশ্বর করুন, ইহার শীঘ্র চৈতন্যলাভ হউক, ইহার নিকট সমস্ত অবস্থা শুনিতে পাইলেও আমরা অনেক বিষয় অবগত হইতে পারিব। আমাদিগের যেমন অনেকটা কার্য্য সম্পন্ন হইল, যে কর্ম্মচারীর সহিত সাক্ষাৎ করিতে গিয়াছিলাম, তাহারও সেইরূপ অনেকটা কার্য্য সম্পন্ন হইল। তিনি অকুল পাথারে পড়িয়া ভাবিতে ছিলেন, এখন আমাদিগের ন্যায় তাহারও কূল পাইবার অনেকটা সম্ভাবনা হইল। এখন আমরা কি অনুসন্ধানে নিযুক্ত ও কি নিমিত্তই বা তাহার নিকট আগমন করিয়াছি, তাহার সমস্ত অবস্থা তাহাকে কহিলাম। তিনিও এখন হৃষ্টান্তঃকরণে সুশীলাকে খুঁজিয়া বাহির করিবার নিমিত্ত আমাদিগকে সম্যকরূপে সাহায্য প্রদানে সম্মত হইয়া আমাদিগের গাড়ীতে আসিয়া আরোহণ করিলেন।
সেইস্থান হইতে প্রস্থান করিবার সময় সেই হাসপাতালের ডাক্তারকে বিশেষ করিয়া বলিয়া গেলাম, যেন ঐ ব্যক্তির কোনরূপে সেবা শুশ্রুষার ত্রুটী না হয় ও যাহাতে উহার শীঘ্র জ্ঞানের উদয় হয়, তদ্বিষয়ে যেন বিশেষরূপ লক্ষ্য রাখা হয়। ডাক্তারবাবু আমাদিগের কথা শুনিয়া আমাদিগের অনুবোধ রক্ষা করিতে প্রবৃত্ত হইলেন।
আমরা মেহেদীবাগানে গমন করিলাম, সেইস্থানের যে গৃহে সুশীলা বাস করিত, এখন সেই গৃহে একজন সাহেব বাস করিতেছেন, তিনি সুশীলা সম্বন্ধে কোন কথাই বলিতে পারিলেন না, কিন্তু প্রতিবেশীগণের নিকট হইতে অবগত হইতে পারিলাম যে, প্রায় এক বৎসর হইল, সে ঐ গৃহ পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া গিয়াছে, কিন্তু এখন যে কোথায় বাস করিতেছে, তাহা কেহ বলিতে পারে না। তবে প্রায় ৬ মাস হইল, সুশীলার একটা চাকরের সহিত এক ব্যক্তির সাক্ষাৎ হইয়াছিল, তাহার নিকট হইতে অবগত হন, যে সুশীলা এখন চন্দননগরে বাস করিতেছে, কিন্তু চন্দননগরের কোন্ স্থানে যে বাস করিতেছে, তাহা কিন্তু তিনি ঐ চাকরকে জিজ্ঞাসা করেন নাই।
যাহা অবগত হইলাম, তাহাতে চন্দননগরে গিয়া উহার অনুসন্ধান করাই সাব্যস্ত হইল।
চন্দননগর ফরাসী রাজ্যের অন্তভূর্ত, সুতরাং সেইস্থানে গিয়া কোনরূপ অনুসন্ধান করিতে হইলে ফরাসী গবর্ণমেণ্টের আদেশ অগ্রে গ্রহণ করিতে হয় ও তাহাদিগের কর্ম্মচারীর সাহায্য ব্যতীত কোনরূপ অনুসন্ধান করিবার উপায় নাই। এদিকে প্রকাশ্যভাবে ফরাসী রাজ্যের কর্ম্মচারীগণের সাহায্য লইতে গেলে প্রায়ই নানারূপ গোলযোেগ ঘটে, সুতরাং অনুসন্ধান করিবার সময় প্রায়ই বিপরীত ফল হইয়া থাকে, ইহা আমি অনেকবার নিজেই দেখিয়াছি। এরূপ অবস্থায় প্রকাশ্য অনুসন্ধান না করিয়া যদি ছদ্মবেশে অনুসন্ধান করিয়া সুশীলার কোনরূপ সন্ধান পাওয়া যায়, তাহার নিমিত্ত পুর্ব্বকথিত সেই পশ্চিম দেশীয় কর্মচারীকে প্রেরণ করিলাম। তাহাকে বিশেষ করিয়া বলিয়া দিলাম, যে কার্য্যের নিমিত্ত তিনি গমন করিতেছেন, সেই কার্য্য তিনি যত করিতে পারুন বা না পারুন, তিনি যে ইংরাজ রাজকর্মচারী, তাহা যেন তাহারা কোনরূপে অবগত হইতে না পারে। আর তাহার দোষে যদি তাহার কথা প্রকাশিত হইয়া পড়ে, তাহা হইলে তাহার জন্য তাঁহাকে দণ্ড গ্রহণ করিতে হইবে, অথচ ইংরাজরাজ হইতে তিনি কোনরূপ সাহায্য প্রাপ্ত হইবেন না। ইতিপূর্ব্বে একবার আমরা ঐ স্থানে গুপ্ত অনুসন্ধান করিতে যাওয়ায় আমাদিগের মধ্যস্থিত একজন কর্ম্মচারী যেরূপ বিপদগ্রস্ত হইয়াছিলেন, তাহাও তাহাকে কহিলাম। কহিলাম, “কয়েক বৎসর পূর্বে আমি, একজন, মুসলমান কর্ম্মচারী ও একজন পশ্চিমদেশীয় কর্ম্মচারী এক টী খুনী মোকদ্দমায় আসামীর অনুসন্ধান করিবার নিমিত্ত ঐ স্থানে গমন করি। কারণ, আমরা এইরূপ সংবাদ পাইয়াছিলাম যে, ঐ হত্যাকারী গোপনভাবে ঐ স্থানে বাস করিতেছে ও ঐ স্থানের কয়েকজন নিম্নপদস্থ কর্ম্মচারী এই অবস্থা অবগত আছেন। এই সংবাদ জানিতে পারিয়া, আমরা তিনজন উহার অনুসন্ধান করিবার নিমিত্ত সেইস্থানে গমন করি। সেইস্থানে যখন আমরা গুপ্ত অনুসন্ধানে নিযুক্ত ছিলাম, সেই সময় সেই স্থানের পুলিস কি প্রকারে ইহা জানিতে পারে, ও আমাদিগকে ধৃত করিয়া লইয়া যাইবার নিমিত্ত কয়েকজন বরকন্দাজ প্রেরণ করেন। আমরাও এই সংবাদ জানিতে পারিয়া উর্দ্ধশ্বাসে সেইস্থান হইতে পলায়ন করিতে আরম্ভ করি। ইংরাজ রাজত্বের ভিতর উপস্থিত হইয়া দেখি, যে মুসলমান কর্ম্মচারীও আমার সহিত সেইস্থানে উপস্থিত হইয়াছেন, কিন্তু পশ্চিমদেশীয় সেই হিন্দু কর্ম্মচারী আসিয়া উপস্থিত হইতে পারেন নাই। পরে সংবাদ লইয়া জানিতে পারিলাম, যে তিনি বরকন্দাজদিগের হস্তে পতিত হইয়াছেন ও তাঁহাকে থানায় ধরিয়া লইয়া গিয়াছে। আরও জানিতে পারিলাম, যে তাহাকে “তোরং” দ্বারা আবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছে। এই অবস্থা জানিতে পারিয়া আমরা কলিকাতা প্রত্যাগমন করি ও অমাদিগের প্রধান কর্ম্মচারীর নিকট এই সকল কথা জ্ঞাপন করি।
তিনি লাট সাহেবের সহায়তায় ঐ কর্ম্মচারীকে ঐ স্থান হইতে খোলসা করিয়া আনিতে সমর্থ হন। বলা বাহুল্য, যে কয়দিবস তিনি ঐ স্থানে আবদ্ধ ছিলেন, সেই কয়দিবস তাহার কষ্টের পরিসীমা ছিল না।
আমার কথা শুনিয়াও ঐ কর্ম্মচারী ঐ স্থানে গমন করিয়া গোপন অনুসন্ধানে সুশীলাকে বাহির করিবার চেষ্টা করিতে সম্মত হইলেন। সুতরাং তখনই তাঁহাকে চন্দননগরে প্রেরণ করিলাম। দুই দিবস পরে তিনি সেইস্থান হইতে প্রত্যাগমন করিলেন ও কহিলেন, “সুশীলা নাম্নী একটী স্ত্রীলোক ঐ স্থানে বাস করেন সত্য, কিন্তু যে তারিখে এই জুয়াচুরির কার্য্য সম্পন্ন হইয়াছে, সেইদিন হইতে তিনি ঐস্থানে গমন করেন নাই; তাহার লোকজন ও পরিচারক প্রভৃতি সকলেই সেইস্থানে আছে, কেবল তিনিই নাই ও তিনি যে কোথায় গমন করিয়াছেন, তাহাও তাহাদিগের মধ্যে কেহই বলিতে পারে না।