সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা/চাঁদনী রাতে
চাঁদনী রাতে
এসো এসো ভোলানাথ,
এই হেথা খোলা ছাত,
ফুর ফুরে হাওয়া বয়
ফুট ফুটে জ্যোৎস্না;
আয় আয় ত্বরিতে,
কোথা যাস্ মরিতে,
নির্জনে আয় আয়
এইখানে বোস্ না!
নীল খোলা আশমান
সাদা-মেঘ ভাসমান,
ঢল ঢলে চাঁদা-মামা
ঝল মলে চাঁদ্নী,
ঐ শোন্ দূরেতে
ব্যথা-ভরা সুরেতে
ক্যাঁচ ক্যাঁচ—বিটকেল
পেচকের কাঁদ্নি।
আজ মোর বুকে রে
গান ওঠে রুখে রে,
লোক নাই যার কাছে
মন খুলে গাই রে;
তুই এই সন্ধ্যায়
চলেছিস কোন্ গাঁয়?
প্রাণ ভ’রে গান গাব,
ডাকি তোরে তাই রে।
প্রাঞ্জল ভাবে মোর
প্রাণ জল হবে তোর—
সঙ্গীতে মন তোর
হয়ে যাবে মশগুল;
আয় আয় দাদা রে,
মিছে বন-বাদাড়ে
ঘুরে ঘুরে সারা হলি
মারা গেলি বিলকুল।
শোন্ কথা অধীনের
জীবনটা ক’দিনের?
সব সাফ একবার
চক্ষুটা বুজলে;—
তাই দাদা, হেথা আয়,
সময়টা বৃথা যায়,
মরে গেলে সব গেল,
পাবি কোথা খুজলে?
বল দাদা গুছিয়ে—
কোন্ গানে রুচি হে;
কোন্ গীত ভালো লাগে,
সঙ্গীত কোন্ রে?
হাঁই-ফাঁই প্রাণারাম;
গোবেচারা কেনারাম
ডাকে তোরে সকাতরে;
আয় দাদা, শোন্ রে।
টল্টলে নীল জল
জ্যোৎস্নায় টল্মল,
দঙ্গল বেঁধে ভাসে
চঞ্চল মাছরা;
নীল খোলা আশমান;
সাদা মেঘ ভাসমান;
আকাশের সারা গায়ে
তারকার পাঁচড়া।
ডেকে মরে শিবা রে,
বিদঘুটে কিবা রে,
খ্যাঁক্ খ্যাঁক্ ফেউ ডাকে
জুড়ি’ সারা পল্লী;
হেই দাদা, কোথা যাস?
আয় আয়, মাথা খাস—
এই ম’লো, এত ডাকি
তবু ফিরে চল্লি?