অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও
সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক
আন্তর্জাতিক চুক্তি

জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্র, ঢাকা

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও
সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক
আন্তর্জাতিক চুক্তি

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি

type=

জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্র, ঢাকা।

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক
অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি
International Covenant on Economic,
Social and Cultural Rights


প্রকাশক: জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্র
 ঢাকা, বাংলাদেশ
Published by: UN Information Centre
 Dhaka, Bangladesh
প্রকাশকাল: নভেম্বর ২০০৫
Published in: November 2005
 unic/pub/2005/02/1500
প্রচ্ছদ: নাসিমুল করিম
Cover Design: Nasimul Karim
সম্পাদনা উপদেষ্টা: প্রফেসর নূরুল মোমেন
Editorial Advice: Prof. Nurul Momen
নির্বাহী সম্পাদক: কাজী আলী রেজা
Executive Editor: Kazi Ali Reza

১৯৬৬ সালের ১৬ই ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত ২২০০ ক (২১) মোতাবেক স্বাক্ষরদান, অনুসমর্থন ও যোগদানের জন্য গৃহীত ও উন্মুক্ত। চুক্তির ধারা ৪৯ অনুযায়ী ১৯৭৬ সালের ২৩শে মার্চ থেকে কার্যকর।

প্রস্তাবনা

এই চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ,

জাতিসংঘ সনদের ঘোষিত নীতিমালা অনুসারে মানব পরিবারের সকল সদস্যের সহজাত মর্যাদা এবং সমান ও অবিচ্ছেদ্য অধিকারের স্বীকৃতি যে বিশ্বে স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং শান্তির ভিত্তি তা বিবেচনা করে;

এই অধিকারগুলো যে মানব-ব্যক্তিত্বের সহজাত মর্যাদা থেকে উদ্ভূত তা স্বীকার করে;

মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা’ অনুসারে, নাগরিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং ভয় ও অভাব থেকে মুক্তি লাভের মানবিক আদর্শ অর্জন কেবল তখনই সম্ভব যদি এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি তার অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকারসমূহের সাথে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারও ভোগ করতে পারে এ কথা মেনে নিয়ে;

জাতিসংঘ সনদের অধীন মানবাধিকার ও স্বাধিকারসমূহের প্রতি সর্বজনীন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও সেগুলো উন্নয়নকল্পে রাষ্ট্রসমূহের দায়িত্বের কথা বিবেচনা করে;

প্রত্যেক ব্যক্তির যেমন অপর ব্যক্তি ও তার সমাজের প্রতি কর্তব্য রয়েছে তেমনই বর্তমান চুক্তিতে স্বীকৃত অধিকারসমূহের উন্নতিবর্ধন ও পালনের জন্য কঠোর চেষ্টা করা যে প্রত্যেকেরই দায়িত্ব তা উপলব্ধি করে;

নিম্নলিখিত ধারাসমূহ সম্পর্কে একমত হয়েছে:

প্রথম পরিচ্ছেদ

ধারা ১

১.১ সকল জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে। সে অধিকারবলে তারা অবাধে তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা নির্ধারণ করে এবং স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখে।
১.২ সকল জনগোষ্ঠী, পারস্পরিক সুবিধার নীতির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক আইন থেকে উদ্ভূত দায়িত্বসমূহ ক্ষুণ্ণ না করে, নিজেদের স্বার্থে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও সংস্থান স্বাধীনভাবে ব্যবহার করবে। কোনক্রমেই কোন জনগোষ্ঠীকে তাদের জীবিকার উপায় থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
১.৩ অ-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং অছিভুক্ত অঞ্চল প্রশাসনের দায়িত্ব যেসব রাষ্ট্রের ওপর ন্যস্ত রয়েছে সেসব রাষ্ট্রসহ, বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষগুলো আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার বাস্তবায়নের উন্নতিবর্ধন করবে এবং জাতিসংঘ সনদ অনুসারে ঐ অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবে।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

ধারা ২

২.১ বর্তমান চুক্তির প্রত্যেক পক্ষ এককভাবে এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য-সহযোগিতা বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সাহায্য ও সহযোগিতার মাধ্যমে লভ্য সম্পদ সর্বাধিক ব্যবহার করে সকল প্রকার উপযুক্ত উপায়ে এবং বিশেষভাবে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে, বর্তমান চুক্তিতে স্বীকৃত অধিকারসমূহের পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
২.২ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এরকম অংগীকার করে যে, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, নারী-পুরুষ, রাজনৈতিক বা অন্য মতামত, জাতীয় বা সামাজিক উৎপত্তি, জন্ম অথবা অন্য কোন মর্যাদার ভিত্তিতে কোনরূপ বৈষম্য না করে চুক্তিতে বর্ণিত অধিকারসমূহ ভোগের নিশ্চয়তা দান করবে।
২.৩ উন্নয়নশীল দেশসমূহ মানবাধিকর এবং নিজেদের জাতীয় অর্থনীতির কথা যথাযথ বিবেচনা করে বর্তমান চুক্তিতে স্বীকৃত অর্থনৈতিক অধিকারগুলোর কতটুকু বিদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা দিবে তা নির্ধারণ করতে পারবে।

ধারা ৩

বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ চুক্তিতে উল্লিখিত সকল অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে।

ধারা ৪

বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ স্বীকার করে যে, চুক্তি অনুযায়ী রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত অধিকারসমূহ উপভোগের ক্ষেত্রে আইনের দ্বারা এরূপ অধিকারগুলোর ওপর এমন বাধানিষেধ আরোপ করতে পারে যা এসব অধিকারের বৈশিষ্ট্যের সাথে সংগতিপূর্ণ এবং যা একটি গণতান্ত্রিক সমাজে কেবল সাধারণ কল্যাণ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন।

ধারা ৫

৫.১ এই চুক্তির কোন কিছুরই এমন ব্যাখ্যা প্রদান করা যাবে না যার অর্থ এই দাঁড়ায় যে, এতে স্বীকৃত অধিকার অথবা স্বাধিকারগুলো বিকাশ সাধনের উদ্দেশ্যে অথবা বর্তমান চুক্তিতে যেরূপ বাধানিষেধের বিধান রয়েছে তা অপেক্ষা অধিক বাধানিষেধ আরোপ করার উদ্দেশ্যে কোন কাজে প্রবৃত্ত হওয়ার অথবা কোন কাজ সম্পাদন করার অধিকার কোন রাষ্ট্রগোষ্ঠী অথবা ব্যক্তির রয়েছে।
৫.২ কোন দেশের আইন, প্রথা, নিয়ম-কানুন, অথবা রীতিনীতি অনুসারে স্বীকৃত অথবা প্রচলিত মৌলিক মানবাধিকারগুলোর ওপর এ অজুহাতে বাধানিষেধ আরোপ করা কিংবা সেগুলো হ্রাস করা যাবে না যে, চুক্তি অনুরূপ অধিকার স্বীকার করে না অথবা অপেক্ষাকৃত গৌণরূপে স্বীকার করে।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

ধারা ৬

৬.১ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষগুলো কর্মের অধিকার স্বীকার করে। এই স্বীকৃতির অন্তর্ভুক্ত থাকবে স্বাধীনভাবে প্রত্যেকের কাজ পছন্দ বা গ্রহণ করার অধিকার যার মাধ্যমে সে তার জীবিকা অর্জনের সুযোগ লাভ করতে পারে। রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এই অধিকার সংরক্ষণের জন্য যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
৬.২ এই অধিকারের পূর্ণ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষগুলো যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তার মধ্যে থাকবে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক দিকনির্দেশনা এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সুষম ও নিয়মিতভাবে অর্জনের জন্য নীতি, কৌশল ও কর্মসূচি; এবং ব্যক্তির মৌলিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সংরক্ষণকারী শর্তের অধীনে পূর্ণ ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান।

ধারা ৭

 বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ প্রত্যেক ব্যক্তির ন্যায়সঙ্গত ও সুবিধাজনক কর্মের শর্ত উপভোগের অধিকার স্বীকার করে; অনুরূপ শর্তাদি বিশেষভাবে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ নিশ্চিত করবে:
(ক) সকল শ্রমিকের জন্য পারিশ্রমিকের এমন ব্যবস্থা যার মধ্যে কমপক্ষে থাকবে—
১. ন্যায্য মজুরি এবং কোনরূপ তারতম্য না করে সমান মানের কাজের জন্য সমান পারিশ্রমিক; বিশেষ করে নারীদেরকে সমান কাজের জন্য সমান বেতনসহ পুরুষদের অপেক্ষা নিকৃষ্ট নয় এমন কর্মের শর্তাবলি সম্পর্কে নিশ্চয়তা দান;
২. বর্তমান চুক্তির বিধানাবলি অনুসারে শ্রমিকদের এবং তাদের পরিবারের জন্য সন্তোষজনক জীবিকার সংস্থান;
(খ) নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ;
(গ) কেবল জ্যেষ্ঠতা ও যোগ্যতার শর্তসাপেক্ষে প্রত্যেক ব্যক্তির চাকরিক্ষেত্রে যথোপযুক্ত উচ্চতর পদে পদোন্নতি লাভের সমান সুযোগ;
(ঘ) বিশ্রাম, অবকাশ ও যুক্তিসংগত কর্মসময় এবং নির্দিষ্ট সময়ান্তরে বেতনসহ ছুটি ও সরকারি ছুটির দিনসমূহের জন্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা।

ধারা ৮

৮.১ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ নিম্নোক্তগুলো নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে:
(ক) প্রত্যেক ব্যক্তির তার অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বার্থের উন্নতি সাধন ও সংরক্ষণের জন্য কেবল সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নিয়ম-কানুন সাপেক্ষে, শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন ও নিজের পছন্দমত শ্রমিক ইউনিয়নে যোগদানের অধিকার; এই অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে, একটি গণতান্ত্রিক সমাজে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা, অথবা অন্যের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে যেরূপ বাধানিষেধ আবশ্যক এবং যেগুলো আইনের দ্বারা নির্ধারিত হবে সেসব ব্যতীত অন্য কোন বাধানিষেধ আরোপ করা যাবে না।
(খ) শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর জাতীয় ফেডারেশন অথবা কনফেডারেশন গঠন করার অধিকার বা শেষোক্তটির আন্তর্জাতিক শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার এবং এতে যোগদানের অধিকার;
(গ) একটি গণতান্ত্রিক সমাজে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা অথবা অন্যের অধিকার ও স্বাধীনতা সংরক্ষণের স্বার্থে যেরূপ প্রয়োজন এবং যা আইনের দ্বারা নির্ধারিত কেবল সেরূপ বাধানিষেধ সাপেক্ষে শ্রমিক ইউনিয়নসমূহের অবাধে কাজ করার অধিকার;
(ঘ) ধর্মঘট করার অধিকার অর্জন তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট দেশের আইনের সংগে সংগতি রেখে এ অধিকার প্রয়োগ করতে হবে;
৮.২ সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ বাহিনী অথবা প্রশাসনিক সদস্যদের ক্ষেত্রে এসব অধিকার প্রয়োগের ওপর আইনসংগত বিধিনিষেধ আরোপ করতে এই ধারা নিবৃত্ত করে না;
৮.৩ এই ধারার কোন কিছুই সংগঠনের স্বাধীনতা এবং সংঘবদ্ধ হওয়ার অধিকার সংরক্ষণ সম্পর্কিত ১৯৪৮ সালের আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা কনভেনশন-এর রাষ্ট্রপক্ষগুলোকে আইন প্রণয়ন অথবা কোন আইনকে এমনভাবে প্রয়োগ করার ক্ষমতা প্রদান করে না যার ফলে উক্ত কনভেনশন কর্তৃক প্রদত্ত নিশ্চয়তাসমূহ ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

ধারা ৯

 বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সামাজিক বীমাসহ সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার স্বীকার করে।

ধারা ১০

 বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ স্বীকার করে যে:
১০.১ পরিবার সমাজের স্বাভাবিক ও মৌল গোষ্ঠী-একক। এই প্রতিষ্ঠানকে যথাসম্ভব ব্যাপক সংরক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করা উচিত, বিশেষ করে এর সংস্থাপনের জন্য এবং নির্ভরশীল সন্তানদের লালন ও শিক্ষাদানের দায়িত্ব পালনকালে অনুরূপ সাহায্য দানের প্রয়োজন রয়েছে। ভাবী দম্পতির অবাধ সম্মতির ভিত্তিতেই বিবাহবন্ধন স্থাপন করতে হবে।
১০.২ শিশুর জন্মদানের পূর্বে এবং পরে একটি যুক্তিসংগত নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত মাতাদেরকে বিশেষ সংরক্ষণ প্রদান করা উচিত। এ সময় চাকরিতে নিযুক্ত মাতাদের বেতনসহ ছুটি অথবা পর্যাপ্ত সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধাসহ ছুটি দেওয়া উচিত।
১০.৩ পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব বা অন্য কোন অবস্থার কারণে কোনরূপ বৈষম্য ছাড়া সকল শিশু ও তরুণদের পক্ষ থেকে তাদের সুরক্ষা ও সহায়তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। অর্থনৈতিক ও সামাজিক শোষণ থেকে শিশু ও তরুণদের রক্ষা করতে হবে। তাদের নৈতিকতা ও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর বা জীবনের পক্ষে বিপজ্জনক অথবা তাদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত করতে পারে এমন কোন কাজে তাদেরকে নিয়োগ করা আইনত দণ্ডনীয় হওয়া উচিত। রাষ্ট্রের এমন বয়ঃসীমা স্থির করা উচিত যে ঐ সীমার নিম্নবয়স্ক শিশুদের মজুরিযুক্ত কোন কাজে আইনত নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় হবে।

ধারা ১১

১১.১ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ স্বীকার করে যে প্রত্যেক ব্যক্তির নিজের এবং নিজ পরিবারের জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানসহ জীবনযাত্রার পর্যাপ্ত মান অর্জন এবং জীবনযাত্রা নিরবচ্ছিন্নভাবে উন্নত করার অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এই উদ্দেশ্যে অবাধ সম্মতির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার অপরিহার্য গুরুত্ব স্বীকারপূর্বক এই অধিকার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
১১.২ প্রত্যেকের ক্ষুধামুক্ত থাকার মৌলিক অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এককভাবে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কর্মসূচিসহ এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে যেগুলো নিম্নলিখিত উদ্দেশ্যে প্রয়োজন
(ক) কারিগরি ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের পূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে পুষ্টিনীতি সম্পর্কিত জ্ঞানের বিস্তারের দ্বারা এবং যাতে প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের সর্বাধিক উন্নয়ন ও ব্যবহার অর্জন করা যায় তেমনভাবে কৃষি-ভূমি ব্যবস্থার উন্নয়ন অথবা সংস্কার সাধনের দ্বারা খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বণ্টন পদ্ধতির উৎকর্ষ সাধন করা;
(খ) খাদ্য আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক দেশ উভয়েরই সমস্যাদি বিবেচনা করে প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্বে সুষ্ঠু খাদ্য সরবরাহের নিশ্চিত করা।

ধারা ১২

১২.১ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ প্রত্যেকেরই মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য অর্জনের সর্বোচ্চ মান ভোগ করার অধিকার স্বীকার করে।
১২.২ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এই অধিকার বাস্তবায়নের জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে নিম্নলিখিতগুলো সেসবের অন্তর্ভুক্ত থাকবে:
(ক) মৃত অবস্থায় জন্ম এবং শিশু অবস্থায় মৃত্যুর হার কমানোর এবং শিশুর সুস্থ বিকাশের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ;
(খ) পরিবেশ ও শিল্প সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধির সকল দিকের উন্নতি সাধন;
(গ) সংক্রামক, এলাকাভিত্তিক ও পেশাগত এবং অন্যান্য রোগের প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ;
(ঘ) অসুস্থতার ক্ষেত্রে সবরকম চিকিৎসাসেবা ও যন্ত্রের নিশ্চয়তা বিধান করে এমন অবস্থার সৃষ্টি।

ধারা ১৩

১৩.১ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষগুলো প্রত্যেক ব্যক্তির শিক্ষার অধিকার স্বীকার করে। তারা একমত যে মানব-ব্যক্তিত্ব এবং শিক্ষা, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান ও মৌলিক স্বাধীনতাকে জোরদার করবে। তারা ঐকমত্য পোষণ করে যে, মুক্ত সমাজে কার্যকর অংশগ্রহণ, অন্যের অনুভূতির প্রতি সহমর্মিতা বৃদ্ধি, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবার মধ্যে সহনশীলতা ও প্রীতির সম্পর্ক তৈরি এবং শান্তি সুরক্ষায় জাতিসংঘের কাজে অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষা সকল ব্যক্তিকে সমর্থ করে তুলবে।
১৩.২ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষগুলো স্বীকার করে যে, এই অধিকারের পূর্ণ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে:
(ক) প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক এবং সকলের জন্য বিনা খরচে সহজলভ্য করতে হবে;
(খ) কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাসহ যেকোন ধরনের মাধ্যমিক শিক্ষা যথার্থ পন্থায় বিশেষভাবে অবৈতনিক শিক্ষাক্রম বর্ধিষ্ণুহারে প্রবর্তনের মাধ্যমে সবার জন্য সাধারণভাবে সহজলভ্য ও অর্জনযোগ্য করে তোলার ব্যবস্থা থাকবে;
(গ) সকল প্রকার উপায়ে এবং বিশেষভাবে ক্রমান্বয়ে অবৈতনিক শিক্ষা প্রবর্তনের মাধ্যম উচ্চশিক্ষাকে সামর্থ্যের ভিত্তিতে সকলের নিকট সমভাবে সুগম করতে হবে;
(ঘ) যারা প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেনি বা সমাপ্ত করেনি তাদের জন্য মৌলিক শিক্ষাকে যতদূর সম্ভব উৎসাহিত ও জোরদার করতে হবে;
(ঙ) সর্বস্তরে বিদ্যালয় ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করতে হবে, পর্যাপ্ত শিক্ষাবৃত্তি (ফেলোশিপ) ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং শিক্ষকদের বৈষয়িক অবস্থার ক্রমাগতভাবে উন্নতি সাধন করতে হবে।
১৩.৩ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ পিতামাতাকে (যেখানে প্রযোজ্য, বৈধ অভিভাবককে) প্রতিশ্রুতি প্রদান করে যে, নিজেদের সন্তান-সন্ততিদের শিক্ষার জন্য সরকার-প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয় অথবা রাষ্ট্র কর্তৃক নির্ধারিত বা অনুমোদিত ন্যূনতম মানসম্পন্ন বিদ্যালয় বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা এবং তাদের নিজেদের বিশ্বাস অনুযায়ী ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা নিশ্চিত করার।
১৩.৪ এই ধারার কোন অংশেরই এমনভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে না যার ফলে কোন ব্যক্তি বা সংস্থার কোন প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং পরিচালনা করার স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ করা যেতে পারে। তবে এই স্বাধীনতা সর্বদা ধারা ১৩.২(ক)তে উল্লিখিত নীতিমালার অধীনে প্রয়োগযোগ্য এবং এটাও প্রয়োজন যে, অনুরূপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত শিক্ষা রাষ্ট্র কর্তৃক নির্ধারিত একটি ন্যূনতম মানের সংগে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।

ধারা ১৪

 বর্তমান চুক্তির যেসব রাষ্ট্রপক্ষ চুক্তি স্বাক্ষরের সময় তাদের মূল ভূখণ্ডে বা এখতিয়ারভুক্ত অন্য এলাকায় বিনা বেতনে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা চালু করতে সমর্থ হয়নি সেসব রাষ্ট্র ঐ লক্ষ্য দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য দু’বছরের মধ্যে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও গ্রহণ করবে এবং পরিকল্পনা নির্দিষ্টকরণের মাধ্যমে কয়েক বছরের মধ্যে সবার জন্য বিনা বেতনে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা চালু করবে।

ধারা ১৫

১৫.১ বর্তমান চুক্তির সকল রাষ্ট্রপক্ষ প্রত্যেকের নিম্নলিখিত অধিকারগুলো স্বীকার করে:
(ক) সাংস্কৃতিক জীবনে অংশগ্রহণ করার;
(খ) বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও এর প্রয়োগের কল্যাণ উপভোগ করার;
(গ) তার লেখা কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক সাহিত্যিক বা শৈল্পিক সৃষ্টি থেকে স্বাভাবিক প্রাপ্তি হিসাবে নৈতিক এবং বস্তুগত সকল সংরক্ষণের মাধ্যমে গ্রহণ করার।
১৫.২ এই অধিকার পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সেগুলোর মধ্যে বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ, উন্নয়ন এবং পরিব্যপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
১৫.৩ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ সৃজনশীল কাজের জন্য অপরিহার্য স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
১৫.৪ বৈজ্ঞানিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা উৎসাহিতকরণের দ্বারা উন্নয়ন থেকে যে সুফল লাভ করা যায়, বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ তা স্বীকার করে।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

ধারা ১৬

১৬.১ বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ চুক্তিতে স্বীকৃত অধিকারসমূহ পালনের ক্ষেত্রে তাদের গৃহীত পদক্ষেপ এবং অর্জিত অগ্রগতি সম্পর্কিত প্রতিবেদন চুক্তির এই পর্বের সাথে সঙ্গতি রেখে পেশ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১৬.২
(ক) সকল প্রতিবেদন জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট পেশ করতে হবে। তিনি প্রতিবেদনের অনুলিপি অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের নিকট বর্তমান চুক্তির ধারা অনুযায়ী বিবেচনার জন্য প্রেরণ করবেন।
(খ) বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহের নিকট থেকে পাওয়া প্রতিবেদন বা এর থেকে প্রাথমিক অংশের কোন বিষয় বিশেষায়িত এজেন্সিসমূহের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এদের দায়দায়িত্বের মধ্যে পড়লে জাতিসংঘ মহাসচিব সেই প্রতিবেদনের অনুলিপি বা প্রাসঙ্গিক অংশ সেই বিশেষায়িত সংগঠনসমূহের নিকটও প্রেরণ করবেন।

ধারা ১৭

১৭.১ বর্তমান চুক্তি বলবৎ হওয়ার এক বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষ ও বিশেষায়িত সংস্থাসমূহের পরামর্শক্রমে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাষ্ট্রপক্ষগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের প্রতিবেদন পেশ করবে।
১৭.২ প্রতিবেদনগুলো বর্তমান চুক্তির অধীনে দায়িত্ব পূরণের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী বিভিন্ন উপাদান ও কারণ সম্পর্কে ইঙ্গিত দিতে পারে।
১৭.৩ যেক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি বর্তমান চুক্তির কোন রাষ্ট্রপক্ষ কর্তৃক পূর্বেই জাতিসংঘে বা কোন বিশেষায়িত সংগঠনে সরবরাহ করা হয়েছে সেক্ষেত্রে তা পুনঃউপস্থাপনের প্রয়োজন নেই। তবে এমন অবস্থায় সরবরাহকৃত তথ্যাদির নির্দেশনা সংক্ষেপই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হবে।

ধারা ১৮

 অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিষদ মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধিকারের ব্যাপারে জাতিসংঘ সনদ মোতাবেক এর দায়িত্ব অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বিশেষায়িত সংস্থার সাথে প্রতিবেদন পেশের ব্যবস্থা করতে পারে। এদের আওতাভুক্ত বিষয়াবলির ব্যাপারে বর্তমান চুক্তিতে অর্জিত অগ্রগতি বিশেষায়িত সংস্থাগুলোর উপযুক্ত অঙ্গসমূহ চুক্তির বিধানাবলি কার্যকর করার উদ্দেশ্যে যে সকল সিদ্ধান্ত ও সুপারিশ গ্রহণ করবে সেগুলোর সুনির্দিষ্ট বিবরণ এ সকল প্রতিবেদনের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ধারা ১৯

 অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ ধারা ১৬ এবং ১৭ অনুযায়ী বিভিন্ন রাষ্ট্র এবং ধারা ১৮ অনুযায়ী বিশেষায়িত সংস্থাগুলো কর্তৃক প্রদত্ত মানবাধিকার সম্পর্কিত প্রতিবেদনসমূহ সাধারণ সুপারিশের উদ্দেশ্যে অথবা উপযুক্ত ক্ষেত্রে অবগতির জন্য মানবাধিকার কমিশনের নিকট প্রেরণ করবে।

ধারা ২০

 বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষ সংস্থাগুলো ধারা ১৯ অনুযায়ী মানবাধিকার কমিশনের দেওয়া যে-কোন সুপারিশ বা কোন প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ সম্পর্কে তথ্য দিবে যাতে উল্লেখ করা কোন দলিল সম্পর্কে মতামত অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে পেশ করতে পারে।

ধারা ২১

 অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ সময়ে সময়ে সাধারণ ধরনের সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন এবং বর্তমান চুক্তিতে স্বীকৃত অধিকারসমূহের সাধারণ প্রতিপালন অর্জনের ক্ষেত্রে গৃহীত ব্যবস্থাবলি ও অগ্রগতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপক্ষ ও বিশেষায়িত এজেন্সিসমূহের থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদির একটি সারাংশ সাধারণ পরিষদে পেশ করতে পারে।

ধারা ২২

 অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ বর্তমান চুক্তির এই পরিচ্ছেদে উল্লিখিত প্রতিবেদনসমূহ থেকে এমন যে কোন বিষয় জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ ও কারিগরি সহায়তাদানের সংগে সংশ্লিষ্ট বিশেষায়িত সংস্থাসমূহের দৃষ্টিগোচরকৃত করতে পারে। উল্লিখিত সংস্থাসমূহের প্রত্যেককে তাদের যোগ্যতার ক্ষেত্রে বর্তমান চুক্তির কার্যকর দ্রুত বাস্তবায়নে সম্ভাব্য অবদান রাখতে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের যৌক্তিকতার ওপর সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করতে পারে।

ধারা ২৩

 বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ একমত যে, এই চুক্তিতে স্বীকৃত অধিকারগুলো বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদন, সুপারিশ গ্রহণ, কারিগরি সাহায্য প্রদান এবং পরামর্শ ও অনুশীলনের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারসমূহের সহযোগিতায় আঞ্চলিক ও কারিগরি বৈঠক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবে।

ধারা ২৪

 বর্তমান চুক্তির কোন কিছুরই এমন ব্যাখ্যা করা যাবে না যাতে চুক্তির বিষয়বস্তু জাতিসংঘ সনদ এবং বিশেষায়িত সংস্থাসমূহের বিধানাবলি কর্তৃক নির্ধারিত জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গের এবং বিশেষায়িত সংস্থাগুলোর স্ব স্ব দায়িত্ব ক্ষুণ্ণ করতে পারে।

ধারা ২৫

 বর্তমান চুক্তির কোন কিছুরই এমন ব্যাখ্যা করা যাবে না যার ফলে সকল জনগোষ্ঠীর নিজেদের প্রাকৃতিক সম্পদ উপভোগ করার এবং পূর্ণ অবাধ ব্যবহারের সহজাত অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

ধারা ২৬

২৬.১ জাতিসংঘের যে কোন সদস্যরাষ্ট্র বা এর যে কোন বিশেষায়িত সংস্থার সদস্য, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের অনুমোদনপ্রাপ্ত যে কোন রাষ্ট্রপক্ষ এবং বর্তমান চুক্তির পক্ষ হওয়ার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মাধ্যমে আমন্ত্রিত যে কোন রাষ্ট্র কর্তৃক স্বাক্ষরের জন্য বর্তমান চুক্তি উন্মুক্ত।
২৬.২ বর্তমান চুক্তি অনুসমর্থন সাপেক্ষ। অনুসমর্থনের দলিলসমূহ জাতিসংঘের মহাসচিবের নিকট জমা দিতে হবে।
২৬.৩ এই ধারার প্রথম অনুচ্ছেদে উল্লিখিত যে কোন রাষ্ট্র কর্তৃক যোগদানের জন্য বর্তমান চুক্তি উন্মুক্ত থাকবে।
২৬.৪ জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট সংযোজন দলিল জমা দেওয়ার মাধ্যমে সংযোজন কার্যকর হবে।
২৬.৫ জাতিসংঘ মহাসচিব বর্তমান চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বা এর সমর্থনকারী সকল রাষ্ট্রকে অনুমোদন বা সংযোজনের প্রতিটি দলিল জমাদানের বিষয়টি অবহিত করবেন।

ধারা ২৭

২৭.১ জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট পঁয়ত্রিশতম অনুসমর্থনপত্র বা যোগদানপত্র জমাদানের তিন মাস পর বর্তমান চুক্তি বলবৎ হবে।
২৭.২ পঁয়ত্রিশতম অনুসমর্থনপত্র বা যোগদানপত্র জমাদানের পর যেসব রাষ্ট্র বর্তমান চুক্তি অনুসমর্থন করবে বা এতে যোগদান করবে সেসব রাষ্ট্রের দলিল জমাদান থেকে তিন মাস পর বর্তমান চুক্তি কার্যকর হবে।

ধারা ২৮

কোন রকম সীমাবদ্ধতা বা ব্যতিক্রম ছাড়া বর্তমান চুক্তির ধারাসমূহ যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সব অংশে সম্প্রসারিত হবে।

ধারা ২৯

২৯.১ বর্তমান চুক্তির যে কোন রাষ্ট্রপক্ষ সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট তা পেশ করতে পারে। এরপর জাতিসংঘ মহাসচিব প্রস্তাবিত সংশোধনীসমূহ বর্তমান চুক্তির সকল রাষ্ট্রপক্ষকে জানাবেন এবং অনুরোধ করবেন যেন তারা প্রস্তাবনাসমূহ বিবেচনা করে এবং ঐগুলোর ওপর ভোটাভুটির লক্ষ্যে কোন সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য তাদের আগ্রহ আছে কিনা সে বিষয়ে তাঁকে অবহিত করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষসমূহের এক-তৃতীয়াংশ যদি এমন সম্মেলনের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে তবে মহাসচিব জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় এমন একটি সম্মেলন আহ্বান করবেন। উক্ত সম্মেলনে উপস্থিত ও ভোটদানকারী রাষ্ট্রপক্ষসমূহের অধিকাংশ কর্তৃক কোন সংশোধনী গৃহীত হলে তা অনুমোদনের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পেশ করতে হবে।
২৯.২ সংশোধনীসমূহ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হলে এবং বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহের দুই-তৃতীয়াংশ নিজ নিজ সাংবিধানিক পদ্ধতি অনুসারে গ্রহণ করলে সেগুলো কার্যকর হবে।
২৯.৩ সংশোধনীসমূহ যখন বলবৎ হবে তখন যেসব রাষ্ট্রপক্ষ এগুলো গ্রহণ করেছে কেবল তাদের জন্য বাধ্যতামূলক হবে এবং অন্যান্য রাষ্ট্রপক্ষ যারা বর্তমান চুক্তির ধারাসমূহ মানার ব্যাপারে শর্তাধীন এবং যারা পূর্বে কোন সংশোধনী মেনে নিয়েছে।

ধারা ৩০

 জাতিসংঘের মহাসচিব ধারা ২৬.৫ মোতাবেক বিজ্ঞপ্তি নির্বিশেষে একই ধারার ১ম অনুচ্ছেদে উল্লিখিত সকল রাষ্ট্রকে নিমের বিষয়গুলো অবহিত করবেন:
(ক) ধারা ২৬ অনুযায়ী স্বাক্ষরদান, অনুসমর্থন এবং যোগদান সম্পর্কিত তথ্যাবলি।
(খ) ধারা ২৭ অনুযায়ী বর্তমান চুক্তি কার্যকর হওয়ার তারিখ এবং ধারা ২৯ অনুযায়ী কোন সংশোধনী কার্যকর হওয়ার তারিখ।

ধারা ৩১

(১) বর্তমান চুক্তির চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ এবং স্পেনীয় ভাষায় রচিত লিপি সমভাবে প্রমাণসিদ্ধ এবং তা জাতিসংঘের সেরেস্তায় গচ্ছিত রাখতে হবে।
(২) জাতিসংঘের মহাসচিব ধারা ২৬-এ উল্লিখিত সকল রাষ্ট্রকে বর্তমান চুক্তির সত্যায়িত অনুলিপি সরবরাহ করবেন।

বিশ্বস্ততার সাথে নিম্নস্বাক্ষরকারী নিজ সরকার কর্তৃক বিধি মোতাবেক ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন যা স্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত করা হয় নিউইয়র্কে; তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ১৯৬৬।

এই লেখাটি জাতিসংঘের প্রাতিষ্ঠানিক নথি থকে গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘ প্রকাশনার সম্ভাব্য চিন্তাভাবনা যতদূর সম্ভব ছড়িয়ে দেওয়ার উদেশ্যে এই সংস্থা তাদের বেশির ভাগ নথি পাবলিক ডোমেইনে সকলের জন্য মুক্ত রেখেছে।

জাতিসংঘের প্রশাসনিক দিগ্‌নির্দেশনা (ইংরেজি) অনুসারে, নিম্নলিখিত নথিগুলি সারা বিশ্বব্যাপী পাবলিক ডোমেইনে মুক্ত:

  1. প্রাতিষ্ঠানিক রেকর্ড (সম্মেলনের কার্যবিবরণী, আক্ষরিক ও সারসংক্ষেপ, ...)
  2. জতিসংঘের চিহ্নযুক্ত জাতিসংঘের নথি
  3. জাতিসংঘের কার্যাবলী সম্বন্ধে জনগণকে অবহিত করার প্রাথমিক উদ্দেশ্যে তৈরি তথ্য উপাদান (বিক্রয়ের জন্য প্রযোজ্য তথ্য উপাদান নয়)