আকাশ-প্রদীপ/আমগাছ
এ তো সহজ কথা,
অঘ্রাণে এই স্তব্ধ নীরবতা
জড়িয়ে আছে সামনে আমার
আমের গাছে;
কিন্তু ওটাই সবার চেয়ে
দুর্গম মোর কাছে।
বিকেল বেলার রোদ্দুরে এই চেয়ে থাকি,
যে রহস্য ঐ তরুটি রাখল ঢাকি
গুঁড়িতে তার ডালে ডালে
পাতায় পাতায় কাঁপনলাগা তালে
সে কোন্ ভাষা আলোর সোহাগ
শূন্যে বেড়ায় খুঁজি।
মর্ম তাহার স্পষ্ট নাহি বুঝি,
তবু যেন অদৃশ্য তার চঞ্চলতা
রক্তে জাগায় কানে কানে কথা,
মনের মধ্যে বুলায় যে অঙ্গুলি
আভাস-ছোঁওয়া ভাষা তুলি
সে এনে দেয় অস্পষ্ট ইঙ্গিত
বাক্যের অতীত।
ঐ যে বাকলখানি
রয়েছে ওর পর্দা টানি
ওর ভিতরের আড়াল থেকে আকাশ-দূতের সাথে
বলা কওয়া কী হয় দিনে রাতে,
পরের মনের স্বপ্ন কথার সম
পৌছবে না কৌতুহলে মম।
দুয়ার দেওয়া যেন বাসর ঘরে
ফুলশয্যার গোপন রাতে কানাকানি করে,
অনুমানেই জানি
আভাসমাত্র না পাই তাহার বাণী।
ফাগুন আসে বছর শেষের পারে
দিনেদিনেই খবর আসে দ্বারে।
একটা যেন চাপা হাসি কিসের ছলে
অবাক শ্যামলতার তলে
শিকড় হতে শাখে শাখে
ব্যাপ্ত হয়ে থাকে।
অবশেষে খুশির দুয়ার হঠাৎ যাবে খুলে
মুকুলে মুকুলে॥