হিরাত

 ইয়াকুব বলছিল “দেখলেন ত আফগানজাতির আর্থিক দুর্গতি কত নীচস্তরের, এই জাতের ভবিষ্যৎ আমাদের উপরই নির্ভর করছে। জানিনা স্টুডেণ্ট ফণ্ট বলতে কি বুঝা যায় কিন্তু আমি মনে করি আফগানিস্থানের প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্কলোকের পক্ষে গুরু মহাশয়ের কাছে বসে না থেকে রাস্ট্রনৈতিক দল গঠন করে ভবিষ্যৎ উন্নতির পথ সুগম করাই কর্তব্য। আপনি স্বচক্ষে দেখছেন আমি দরিদ্র নই, বেশ আরামে দিন কাটত, কিন্তু সে আরামের কোন মূল্য আছে কি?”

 নিশ্চয়ই নেই ইয়াকুব, তোমাদের দেশ প্রায় ভ্রমণ শেষ করে এনেছি এখন মনের কথা তোমার কাছে বলতে একটুও ইতস্তত করব না, তবে আজ নয়, আরও কয়েক দিন পর, এখনও ইরাণের ভিসা পাই নি, ইরাণের ভিসা না পাওয়া পর্যন্ত তুমি এখানে থেকো। থাকা তোমার কর্তব্য, থাকতে পারবে কি? ইয়াকুবকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম।

 নিশ্চয়ই থাকব, আপনি কোথায় থাকবেন?

 কোথায় থাকি কাল সকালে ঠিক করব। এখানে অনেক ধরমশালা আছে। একটাতে উঠলেই হল। তুমি বোধহয় এখানে নূতন লোক।

 আপনার মতই, তবে হিরাত আমাদের এদেশেরই অন্তর্গত; সেজন্য থাকা-খাওয়ার অসুবিধা হবে না।

 থাকা-খাওয়ার জন্য তুমি মোটেই না, চলে যাবার পূর্বে অন্তত রুশ-সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছার খরচ দিয়ে যাব।

 রুশিয়ায় যাবনা ইয়াকুব বললে।

 কেন যাবে না জিজ্ঞাসা করলাম।

 সেখানে যাবার কারণ থাকলে ত যাব? যে কারণে লোক রুশিয়ায় যায় সে সব আমি জানি, এখন আমার কাজ হল দেশকে উদ্বুদ্ধ করা। এটাই আসল কাজ। আপনাকে বিদায় দিয়ে আমি কোনও গ্রামে যাব এবং গ্রামে গেলে গ্রামের লোককে এগিয়ে যাবার পথ দেখাব।

 বুঝলাম ইয়াকুব সহজ ছেলে নয়। রাত কাটিয়ে পরের দিন তাকে নিয়েই একজন কোটিপতি হিন্দুর বাড়িতে গেলাম। লোকটা আফগান ব্যাঙ্কের অর্ধেক শেয়ারের মালিক। একজন পাঠান ছেলেকে সংগে দেখে বুঝতে পেরেছিল আমার প্রতি মুসলমানদের সহানুভূতি আছে। একটি কথাও জিজ্ঞাসা না করে একজন বয়কে ডেকে বললে, এই মুসাপীরকে একটি ভাল ঘর দেখিয়ে দাও এবং এখনই খাওয়ার বন্দোবস্ত কর। বয় আমাকে নিয়ে চলার সময় কোটিপতি বলেন, যতদিন ইচ্ছা থাকতে পারবেন এবং এই বয়ই আপনার খাদ্য এবং আদেশ প্রতিপালন করবে।

 বয়ের সঙ্গে ঘরে গেলাম। ঘরটা কুড়িহাত লম্বা এবং সেই অনুপাতে চওড়া। সমস্তটা মেজে মোটা কারপেট দিয়ে মোড়া। এক পাশে একখানা চার পাই, তাতে লেপ, তোবক, সবই ছিল কিন্তু সাজানো ছিল না। আমাদের বসিয়ে রেখেই বয় বিছানা করল এবং কারপেটের উপরে আর একখানা কারপেট বিছিয়ে বসতে বল্‌ল। ইয়াকুব গড়াল না, সে আমার সাইকেল এবং পিঠ-ঝোলা আনতে গেল। ইত্যবসরে আমি পাশের কামরায় গরম জলে স্নান করতে সক্ষম হলাম। গরম জলের তদারক করত আর একটি বয়। ইয়াকুব এসেই দেখল স্নান করে আমি পথের ক্লান্তি মুছে ফেলতে সক্ষম হয়েছি। ইয়াকুবকেও স্নান করতে বললাম। সে স্নান করল না। বললে, এতে শরীরে শৈথিলা আসে এবং অত্যধিক ঘুম হয়। বাস্তবিক পক্ষে স্নানের পরই আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল।

 কতক্ষণ পরে বয় নানারকমের খাদ্য সমেত একখানা থাকা নিয়ে আসল। ইয়াকুবকে খেতে বল্লাম। সে মাত্র এক পেয়ালা ইংলিশ চা খেয়েই সন্তুষ্ট হল; বেশী খেল না। খাওয়া শেষে ইয়াকুবকে নিয়ে পথে বের হলাম। উদ্দেশ্য ইংরাজী সংবাদপত্র অথবা যা হক কিছু কেনা। অনেক অন্বেষণ কোরে একজন লোকের কাছে স্কটলেণ্ড হতে প্রকাশিত সংবাদপত্র পেলাম। এই সংবাদপত্র জিনিষ বাঁধার কাজে ব্যবহার হয়। প্রকৃতপক্ষে হিরাতে সিভিল মিলিটারী গেজেট ছাড়া আর কোন সংবাদপত্র পৌঁছে না। এই সংবাদপত্রের গ্রাহক হিরাতের গভর্ণর। তাঁর বাড়ী হতে সিভিল মিলিটারী গেজেট পাবার বন্দোবস্ত পরে করেছিলাম। ইয়াকুবকে বিদায় দিয়ে সেদিন বিশ্রাম করি।

 পথে শুনেছিলাম হিরাতের মেডিকেল অফিসার একজন বাঙ্গালী। বাঙ্গালী বাবুর সঙ্গে দেখা করার জন্য সকালে রওয়ানা হই এবং দশটার পূর্বেই তাঁর দর্শন পাই। এখানে বলে রাখা ভাল বাঙ্গালী বাবু ধর্মে মুসলমান। বঙ্গদেশের সীমানা পেরিয়ে মজফরপুরে তার পিতা বাসস্থান করেছিলেন কিন্তু বাংলাভাষা পবিত্যাগ করেন নি। আমাকে পেয়ে ডাক্তার বাবু বড়ই সুখী হন এবং সেদিনই তার বাড়ীতে নিয়ে যান।

 বিকালে তাঁর সঙ্গে হসপিটাল দেখতে যাই। মাত্র এক শত বেডের হসপিটাল। তাতে নানা রকমের রোগী। রোগীর মধ্যে যে সকল চোরের হাত অথবা পা কেটে ফেলা হয়েছে তাদেরও দেখতে পেলাম। সরিয়তের মতে চোরের হাত কেটে ফেলাই ব্যবস্থা ছিল। ডাক্তার আমাকে সে কথা বললেন।

 ডাক্তারকে যখন জিজ্ঞাসা করলাম সরিয়ত দরিদ্র জনগণকে শোষণের হাত থেকে রক্ষা পাবার কি ব্যবস্থা করেছে?

 ডাক্তার বললেন ‘ভিক্ষা’।

 আমি বললাম ভিক্ষা হতে চুরি অথবা ডাকাতি অনেক অংশে ভাল।

 সেদিন ডাক্তার বাবু হিরাতের গভর্ণরের সংগে পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু যেতে পারি নি। শরীর অসুস্থ ছিল, মনও ভাল ছিল না। ঘরে এসে ডায়রী লিখতে হয়েছিল। যখন ডায়রী লিখছিলাম তখন ইয়াকুব এসে বললেন তিনি হিরাতে অতিকষ্টে একটি আস্থানা পেয়েছেন এবং এখানেই তিনি সাধারণ ভাবে সাধারণের সংগে মেলামেশার সুযোগ করে নিতে পারবেন। হিরাতের গুরুত্বও কম ছিল না। একদিকে পারস্য অন্যদিকে রুশিয়া। বিপদে আপদে যে কোন দেশে পালিয়ে যাবার সুযোগ ছিল। ইয়াকুব হিরাতের মাহাত্ম্য বলার পর তাঁকে বললাম যদি ভাল মনে করেন তবে এখানেই কর্মক্ষেত্র করে নিন। তিনি হিরাতেই কর্মক্ষেত্র করবেন বলেছিলেন।

 হিরাতে পর্যটকদের কতকগুলি নিয়ম মানতে হয়। সে নিয়মগুলি হল যে-কোন পর্যটকই হিরাতে আসুন না কেন, তাঁকে গভর্ণরের কাছে যেতে হবে। পর্যটকের অভাব অভিযোগ জেনে গভর্ণর তার প্রতিকার করেন উপরন্তু প্রত্যেক পর্যটককে একশত টাকা করে দক্ষিণাও দেন। আমি হিরাত গভর্ণরের কাছে উপস্থিত হয়ে একখানি ছোট ছুরি এবং এক জোড়া রংগিন চশমার প্রার্থনা জানাই। এ দুটি জিনিসের অভাবে আমি বিশেষ অসুবিধা ভোগ করছিলাম। গভর্ণর আমার প্রার্থনা পূরণ করে বললেন “আফগানিস্থান এখনও ততটা উন্নত হয়নি, আফগানিস্থানে এসে হয়তো আপনার অনেক দুঃখ-কষ্টই হয়েছে, আফগানিস্থানের লোকের পক্ষ হতে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। আফগানজাতের যদি কেউ আপনার কোন অনিষ্ট করে থাকে, তবে তাদের ক্ষমা করবেন। পর্যটকদের পীড়ন করে কোন লাভ হয় না। তাদের খুশী করাই ভাল, কারণ তাঁরা অমর নন এটা সত্য। কিন্তু দুনিয়ার যে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা তাঁরা লিপিবদ্ধ করে যান তা অনন্তকাল মানবসমাজের বহু কাজেই আসে। আপনার প্রতি যদি আমার দেশের লোক অন্যায় ব্যবহার করে থাকে তবে তা আপনি নিশ্চয় লিখবেন, সে কলংক আমাদের চিরন্তন হয়ে থাকবে। এজন্যই আমি ভূপর্যটকদের বৈদেশিক আক্রমণকারীদের চেয়েও বেশী ভয় করি।” এই বলে হিরাত গভর্ণর একশত টাকার একটি থলি আমার হাতে দিয়ে বিদায় নিলেন।

 আফগানিস্থান স্বাধীন দেশ। সে দেশ সম্বন্ধে প্রতিকুল কিছু লিখলে তার প্রতিবাদ করার লোক আছে। সেজন্যই হয়তো আফগানিস্থানের বিরুদ্ধে কেউ কিছু লিখতে সাহস করে না। কিন্তু ভারতেরই অন্ন খেয়ে ভারতবাসীরই আর্থিক সাহায্য পেয়ে অনেক বিদেশী পর্যটক অবশেষে যখন বই লিখেন তখন ভারতের বিরুদ্ধে নানা অসত্য এবং কাল্পনিক তথ্য প্রচার করতে কুণ্ঠিত হন না। এরূপ একটি লোককে আমি জানি। তার নামধাম বলে লাভ নেই, তবে এই পর্যন্ত বলতে আপত্তি নেই যে তিনি একজন পলাতক রুশ। দাস্যবৃত্তিতে তাঁর অরুচি নেই। যারা রুশদের ইতিহাস পাঠ করেছেন তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন, ডনদীর তীরের অধিবাসীরা ১৯১৭ সনেও ক্রীতদাসই ছিল। মহামতি লেনিন এদের দাসত্ব-শৃঙ্খল মুক্ত করেন। পলাতক রুশেরা দীর্ঘকাল দাস্যবৃত্তিতে অভ্যস্ত ছিল, সেজন্যই স্বাধীনতা তাদের মনঃপূত হয় নি। তারা বিদেশে পালিয়ে এসেছিল। এসব ক্রীতদাসদেরই একটি ভারতের নুন খেয়ে ভারতের বিরুদ্ধে অসত্য, অর্ধসত্য ও বিকৃত সত্য উল্লেখ করে এক বই লিখেছিলেন। তাতে দুঃখ করার কিছুই ছিল না। মনে করতে হবে এটা তার দাসত্ব-কলঙ্কিত জঘন্য মনোবৃত্তিরই পরিচায়ক, প্রকৃত পর্যটকের সত্য-দৃষ্টি তাঁর ভ্রমণবৃত্তান্তে ছিল না। এই লোকটি ইণ্টার-নেশনেল পাসপোর্ট-এর সাহায্যে পৃথিবীর বেশ খানিকটা বেড়িয়েছিল। পৃথিবী পর্যটন করার সময় আমিও নানারূপ দুঃখকষ্ট ও অসৎব্যবহারে তিক্ত অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলাম। কিন্তু সেজন্য কখনও কোন জাতের বিরুদ্ধে বিকৃত তথ্য লিপিবদ্ধ করবার প্রবৃত্তি আমার হয় নি। ভাল করেই জানি কোন জাতিই চিরকাল অবনতির নিম্নতম সোপানে পড়ে থাকবে না।

 হিরাত শহর বর্তমান যুগে যেমন মধ্য-এশিয়ায় প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। অতীত যুগেও তেমনি খ্যাতি ছিল। তখন ছিল শৈবদের হিরাত, এখন হয়েছে কূটনৈতিকদের। বাস্তবিক পক্ষে এখানে আর ধর্মের স্থান নেই। মসজিদগুলিতে অতি অল্প লোকই প্রার্থনা করতে যায়—তারা যেন ধর্মকে এড়িয়ে চলতে চায়। আফগানিস্থানের অন্যান্য অঞ্চলের মত হিরাতে এখনও চোরের হাত কেটে দেওয়া হয়। এতে বোঝা যায় ধর্মকে ছেঁটে ফেললেও নৈতিক আদর্শ এখনো সেখানকার সমাজে অমর্যাদা লাভ করে নি। যে দেশের লোক ধর্মাচরণ করে না অর্থাৎ লোক শাস্ত্রের ছক-কাটা গোলকধাঁধায় কলুর বলদের মত শুধু অভ্যাসবশেই ঘুরে বেড়ায় না, অনেকের মতে সে দেশ ঘোর অধপতিত, সেখানকার লোকের বাস্তবজ্ঞান নাই। কিন্তু জগতে ধর্মানুসারণকারী জাতিমাত্রেই নৈতিক উৎকর্ষের পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছে এমন কথা অতি বড় ধর্মধ্বজীও বলতে পারবেন না। প্রকৃত মনুষ্যত্বের মাপকাঠি যে সব গুণ তার বিকাশ ধর্মমানা-না-মানার ওপর নির্ভর করে না। স্বাধীন ভাবে যারা চিন্তা করতে শিখেছে তারা ধর্মের খোলস নিয়ে আর সময় নষ্ট করতে রাজি নয়।

 এত দিন থাকার পরও হিরাতের বাজার দেখতে যাইনি। একদিন বাজার দেখতে গেলাম। বাজারের গঠন দেখে মনে হল যেন ত্রিপুরা স্টেটের আগরতলায় এসেছি। আগরতলার ব্যবসায়ের স্থানের সংগে হিরাতের বাজারে গঠন অনেক সাদৃশ্য রয়েছে।

 বাজারে গিয়ে দেখলাম সেখানে জাপানী মালে বাজার একবারে ছেয়ে আছে। হিরাতবাসী ব্যবসায়ীরা বেলুচিস্থানের ভেতর দিয়ে নিয়ে এসে সেই মাল সস্তায় বিক্রি করছে। একটি দোকানে দেখলাম ভারতীয় সিগারেট বিক্রি হতে। এক পেকেট সিগারেট কিনে ইয়াকুবকে বললাম, দেখলেন এটাকেই বলে নেশনেলিজম্ বা স্বদেশিয়ানা। ভারতে হয়তো সিগারেটের পেকেটটি মাত্র তৈরী হয়েছে, তবু আমার মন আপনা থেকেই ‘ভারতে প্রস্তুত’ জিনিসটির প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। সেজন্য বলি, স্বদেশে তৈরী জিনিস দেখলেই যে ভাবে গদগদ হতে হবে তার হেতু নেই। আমরা দেখি জিনিসের প্রকৃত নির্মাতা যারা তারা উপযুক্ত পারিশ্রমিক পেল কি না। যদি শ্রমিকরা উপযুক্ত মজুরি না পেয়ে থাকে, তবে সে জিনিস দেশের হলেও অস্পৃশ্য এবং অস্পৃশ্য জিনিস সর্বথা পরিত্যজ্য।

 ইয়াকুব আমার কথায় সায় দিয়ে ঘাড় নাড়লেন।

 হিরাতে দেখার মত যদিও কিছুই ছিল না তবুও আমাকে থাকতে হয়েছিল ইরাণের ভিসা তখনও পাই নি। ইরাণ কন্‌সাল ভিসা দেই দিচ্ছি করে সময় কাটাচ্ছিলেন। একদিন ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম ইরাণ কন্‌সাল ভিসা দিচ্ছেন না কেন?

 ডাক্তার বললেন ইরাণ স্বাধীন দেশ। ইরাণী কন্‌সাল হয়ত ভাবছেন আপনি একজন বৃটিশ স্পাই সেজন্যই ভিসা দিতে দেরী করছেন। আপনার পক্ষে অনেক কিছু জানতে হবে। যখন ইরাণ যাবেন তখন দেখবেন দক্ষিণ ইরাণে বৃটিশ সরকার কত রকমের জাল ফেলেছে। সেই জাল ফেলার কাজে আপনি যাচ্ছেন কি প্রকৃত পক্ষে ভ্রমণ করতেই যাচ্ছেন সে কথাই ভাবছেন।

 ডাক্তারের কাছে এ সম্বন্ধে আর কিছু বললাম না। পরের দিন কন্‌সাল আফিসে যেয়ে অটোগ্রাফ বইখানা কন্‌সালের সামনে ফেলে দিয়ে বললাম “সম্মানিত মহাশয়! দয়া করে আমার ভ্রমণের অটোগ্রাফ বই দেখুন এবং আপনারও নাম সই করে দিন। কন্‌সাল মহাশয় অতি সাবধানে অটোগ্রাফ বইখানা দেখলেন। অটোগ্রাফ বই দেখতে প্রায় দুই ঘণ্টা লেগেছিল। অটোগ্রাফ বই দেখার পর প্রসন্নচিত্তে তিনি আমার পাসপোের্ট ভিসা লিখে দিলেন। ইরাণ যাবার পথ পরিষ্কার হল দেখে আমি নিশ্চিন্ত মনে ঘরে ফিরে এসেছিলাম। এবার ইরাণ যাবার পালা। আফগানিস্থানের শেষ গ্রাম ইসলাম কিল্লা। সেই গ্রাম সম্বন্ধে পারস্য ভ্রমণে সবিস্তারে বলা হয়েছে।

—সমাপ্ত—