গ্রন্থপরিচয়

ভগ্নহৃদয়


এই বিচিত্র নাট্য-কাব্যখানি ১৮০৩ শকে [২৩ জুন ১৮৮১] মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা-সংখ্যা ছিল ১৯৬। ইহা পুনর্‌মূদ্রিত হয় নাই।

সমগ্র পুস্তক মোট ৩৪ সর্গে সমাপ্ত। ১২৮৭ সালের কার্তিক হইতে ফাল্গুন অবধি 'ভারতী' পত্রে ধারাবাহিকভাবে ইহার প্রথম ছয় সর্গ বাহির হয়।

'ভগ্নহৃদয়' সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ জীবনস্মৃতি'তে লিখিয়াছেন–

বিলাতে আর একটি কাব্যের পত্তন হইয়াছিল। কতকটা ফিরিবার পথে কতকটা দেশে ফিরিয়া আসিয়া ইহা সমাধা করি। "ভগ্নহৃদয়" নামে ইহা ছাপান হইয়াছিল।... 'ভগ্নহৃদয় যখন লিখতে আরম্ভ করেছিলেম তখন আমার বয়স আঠারো।' –প্রথম সংস্করণ, পৃ.১২৭

এই পুস্তক সম্বন্ধে কয়েকটি কথা উল্লেখযোগ্য। বিখ্যাত 'তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা' গানটি 'ভারতী'তে 'ভগ্নহৃদয়ে'র "উপহার"-রূপে মূদ্রিত হইয়াছিল। পুস্তকাকারে প্রকাশ করিবার সময় "উপহার"টি সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হইয়াছে।

'ভগ্নহৃদয়' স্বতন্ত্রাকারে বিলুপ্ত হইলেও ইহার বহু অংশ সংগীতরূপে রবীন্দ্রনাথের নানা সংগীত ও কাব্য -সংগ্রহগ্রন্থে স্থান পাইয়া আসিতেছে। আজও গাওয়া হইয়া থাকে বা গাওয়া যাইতে পারে তাহা গীতবিতান, বিশেষতঃ উহার প্রচল তৃতীয় খণ্ড (১৩৭৬ বা ১৩৭৯), দেখিলে বুঝা যাইবে। রবীন্দ্রনাথের প্রথম-প্রকাশিত 'কাব্য গ্রন্থাবলী'তে (আশ্বিন ১৩০৩) ভগ্নহৃদয়ের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব না থাকিলেও যেমন ইহার কয়েকটি গান আছে তেমনি ২২টি সর্গ হইতে (মোট সর্গসংখ্যা ৩৪) অন্যূন ২৯টি রচনাংশ, স্বয়ংপূর্ণ কবিতা হিসাবে, 'বাসকসজ্জা' 'শ্যামা' 'চাঞ্চল্য' প্রভৃতি শিরোনাম "কৈশোরক" অংশে (দ্রষ্টব্য পৃ. ৫-১৫) দেওয়া হইয়াছে। সুতরাং পূর্ণ বর্জনের অপমান এটিকে সহিতে হয় নাই। বস্তুতঃ, নানা রূপে রূপান্তরে সামগ্রিক রবীন্দ্র-রচনাধারায় সূক্ষ্মভাবে ইহার মিলিয়া মিশিয়া আছে।

"ভগ্নহৃদয়" পাতায় ফেরত যান।