১৩ বরদা প্রসাদ বাবুর উপদেশ দেওন –তাঁহার বিজ্ঞতা

ও ধর্ম্মনিষ্ঠা এবং সুশিক্ষার প্রণালী। তাঁহার নিকট

রামলালের উপদেশ, তজ্জন্য তাঁহার পিতার

ভাবনা ও ঠকচাচার সহিত পরামর্শ। রামলালের

গুণ বিষয়ে মনান্তর ও তাঁহার বড় ভগিনীর পীড়া ও

বিয়োগ।


 বরদাপ্রসাদ বাবুর বিদ্যাশিক্ষা বিষয়ে বিজাতীয় বিচক্ষণতা ছিল। তিনি মানব স্বভাব ভালো জানিতেন। মনের কি২ শক্তি কি২ ভাব এবং কি২ প্রকারে ঐ সকল শক্তি ও ভাবের চালনা হইলে মনুষ্য বুদ্ধিমান ও ধার্ম্মিক হইতে পারে তদ্বিষয়ে তাঁহার বিশেষ বিজ্ঞতা ছিল। শিক্ষকের কর্ম্মটি বড় সহজ নহে। অনেকে যৎকিঞ্চিৎ ফুলতোলা রকম শিখিয়া অন্য কর্ম্ম কাজ না জুটিলে শিক্ষক হইয়া বলেন—এমত সকল লোকের দ্বারা ভালো শিক্ষা হইতে পারে না। প্রকৃত শিক্ষক হইতে গেলে মনের গতি ও ভাব সকলকে ভাল রূপে জানিতে হয় এবং কিপ্রকারে শিক্ষা দিলে কর্ম্মে আসিতে পারে তাহা সুস্থির হইয়া দেখিতে হয়ও শুনিতে হয় ও শিখিতে হয়। এ সকল না করিয়া তাড়াহুড়া রকমে শিক্ষা দিলে কেবল পাথরে কোপ মারা হয়—একশত বার কোদাল পড়িলেও এক মুঠা মাটি কাটা হয় না, বরদাপ্রসাদ বাবু বহুদর্শী ছিলেন—অনেক কালাবধি শিক্ষার বিষয়ে মনোযোগী থাকাতে শিক্ষা দেওয়ার প্রণালী ভাল জানিতেন, তিনি যে প্রকারে শিক্ষা করাইতেন তাহাতে সার শিক্ষা হইত। এক্ষণে সরকারী বিদ্যালয়ে যে প্রকার শিক্ষা হয় তাহাতে শিক্ষার আসল অভিপ্রায় সিদ্ধ হয় না কারণ মনের শক্তি ও মনের ভাবাদির সুন্দর রূপ চালনা হয় না, ছাত্রেরা কেবল মুখস্থ করিতে শিখে তাহাতে কেবল স্মরণ শক্তি জাগরিত হয়—বিবেচনা শক্তি প্রায় নিদ্রিত থাকে, মনের ভাবাদির চলনার তো কথাই নাই। শিক্ষার প্রধান তাৎপর্য্য এই যে ছাত্রদিগের বয়ঃক্রম অনুসারে মনের শক্তি ও ভাব সকল সমানরূপে চালিত হইবেক। এক শক্তির অধিক চালনা ও অন্য শক্তির অল্প চালনা করা কর্ত্তব্য হয় না। যেমন শরীরের সকল অঙ্গকে মজবুত করিলে শরীরটি নিরেট হয় তেমনি মনের সকল শক্তিকে সমানরূপে চালনা করিলে আসল বুদ্ধি হয়। মনে সদ্ভাবাদিরও চালনা সমানরূপে করা আবশ্যক। একটি সদ্ভাবের চালনা করিলেই সকল সদ্ভাবের চালনা হয় না। সত্যের প্রতি শ্রদ্ধা জন্মিলেও দয়ার লেশ না থাকিতে পারে —দয়ার ভাগ অধিক থাকিয়া দেনাবপাওনা বিষয়ে কাণ্ডজ্ঞান না থাকা অসম্ভব নহে —দেনা পাওনা বিষয়ে খাড়া থাকিয়াও পিতা মাতা এবং স্ত্রী পুত্রের উপর অযত্ন ও নিস্নেহ হইবার সম্ভাবনা —পিতা মাতা স্ত্রী-পুত্রের প্রতি স্নেহ থাকিতে পারে অথচ সরলতা কিছু মাত্র না থাকা অসম্ভব নহে। ফলেও বরদাপ্রসাদ বাবু ভাল জানিতেন যে মনের ভাবাদির চালনার মূল পরমেশ্বরের প্রতি ভক্তি —ঐ ভক্তির যেমন বৃদ্ধি হইবে তেমনি মনের সকল ভাবের চালনা হইতে থাকিবে, তাহা না হইলে ঐ কর্ম্মটি জলের উপরে আঁক কাটার প্রায় হইয়া পড়ে।

 রামলাল ভাগ্যক্রমে বরদা বাবুর শিষ্য হইয়াছিল। রামলালের মনের সকল শক্তি ও ভাবের চালনা সুন্দররূপে হইতে লাগিল। মনের ভাবের চালনা সৎ লোকের সহবাসে যেমন হয়, তেমন শিক্ষা দ্বারা হয় না। যেমন কলমের দ্বারা জাম গাছের ডাল আঁব গাছের ডাল হয়, তেমন সহবাসের দ্বারা এক রকম মন অন্য আর এক রকম হইয়া পড়ে। সৎমনের এমন মহাত্ম্য যে তাহার ছায়া অধম মনের উপর পড়িলে, অধম রূপ ক্রমে২ সেই ছায়ার স্বরূপ হইয়া বসে।

 বরদা বাবুর সহবাসে রামলালের মনের ঢাঁচা প্রায় তাঁহার মনের মত হইয়া উঠিল। রামলাল প্রাতঃকালে উঠিয়া শরীরকে বলিষ্ঠ করিবার জন্য ফর্দা জায়গায় ভ্রমণ ও বায়ু সেবন করেন —তাঁহার দৃঢ় সংস্কার হইল যে, শরীরে জোর না হইলে মনের জোর হয় না। তাহার পরে বাটীতে আসিয়া উপাসনা ও আত্মবিচার করেন এবং যে সকল বহি পড়িলে ও যে২ লোকের সহিত আলাপ করিলে বুদ্ধি ও মনের সদ্ভাব বৃদ্ধি হয় কেবল সেই সকল বহি পড়েন ও সেই সকল লোকের সাহিত আলাপ করেন। সৎ লোকের নাম শুনিলেই তাঁহার নিকট গমনাগমন করেন —তাঁহার জাতি অথবা অবস্থার বিষয় কিছুমাত্র অনুসন্ধান করেন না। রামলালের বোধ শোধ এমত পরিষ্কার হইল যে, যাহার সঙ্গে আলাপ করেন তাহার সহিত কেবল কেজো কথাই কহেন —ফাল্‌তো কথা কিছুই কহেন না, অন্য লোক ফাল্‌তো কথা কহিলে আপন বুদ্ধির জোরে কুরুনির ন্যায় সার২ কথা বাহির করিয়া লয়েন। তিনি মনের মধ্যে সর্ব্বদাই ভাবেন পরমেশ্বরের প্রতি ভক্তি, নীতিজ্ঞান ও সদ্বুদ্ধি যাহাতে বাড়ে তাহাই করা কর্ত্তব্য। এই মতে চলাতে তাঁহার স্বভাব-চরিত্র ও কর্ম্মসকল উত্তর২ প্রশাংসনীয় হইতে লাগিল।

 সততা কখনই চাপা থাকে না —পাড়ার সকল লোকে বলাবলি করে —রামলাল দৈত্যকূলের প্রহ্লাদ। তাহাদিগের বিপদ-আপদে রামলাল আগে বুক দিয়া পড়ে। কি পরিশ্রম দ্বারা, কি অর্থ দ্বারা, কি বুদ্ধির দ্বারা, যাহার যাতে উপকার হয় তাহাই করে। কি প্রাচীন, কি যুবা, কি শিশু, সকলেই রামলালের অনুগত ও আত্মীয় হইল—রামলালের নিন্দা শুনিলে তাহাদিগের কর্ণে শেল সম লাগিত—প্রশংসা শুনিলে মহা আনন্দ হইত। পাড়ার প্রাচীন স্ত্রীলোকেরা পরস্পর বলাবলি করিতে লাগিল—আমাদিগের এমন একটি ছেলে হলে বাছাকে কাছ ছাড়া হতে দিতুম না—আহা! ওর মা কত পূণ্য করেছিল যে এমন ছেলে পেয়েছে। যুবতী স্ত্রীলোকেরা রামলালের রূপ গুণ দেখিয়া শুনিয়া মনে২ কহিত, এমনি পুরুষ যেন স্বামী হয়।

 রামলালের সৎ স্বভাব ও সৎ চরিত্র ক্রমে২ ঘরে বাহিরে নানা প্রকারে পাইতে লাগিল, তাঁহার পরিবার মধ্যে কাহারও প্রতি কোন অংশে কর্ত্তব্য কর্ম্মের ত্রুটি হইত না।

 রামলালের পিতা তাঁহাকে দেখিয়া এক একবার মনে করিতেন, ছোট পুত্রটি হিন্দুয়ানী বিষয় আল্‌গা২ রকম —তিলক সেবা করে না —কোশা কোশী লইয়া পূজা করে না—হরিনামের মালাও জপে না, অথচ আপন মত অনুসারে উপাসনা করে ও কোন অধর্ম্মে রত নহে —আমরা ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যা কথা কহি —ছেলেটি সত্য বৈ অন্য কথা জানে না —বাপ মার প্রতি বিশেষ ভক্তিও আছে, অধিকন্তু আমাদের অনুরোধে কোনো অন্যায় কর্ম্ম করিতে কখনই স্বীকার করে না —আমার বিষয়-আশয়ে অনেক জোর আছে —সত্য মিথ্যা দুই চাই। অপর বাটীতে দোল দুর্গোৎসব ইত্যাদি ক্রিয়াকলাপ হইয়া থাকে —এসকল কি প্রকারে রক্ষা হইবে? মতিলাল মন্দ বটে কিন্তু সে ছেলেটির হিন্দুয়ানি আছে —বোধ হয় দোষে গুণে বড় মন্দ নয় —বয়েস কালে ভারিত্ব হইলে সব সেরে যাবে। রামলালের মাতা ও ভগিনীরা তাঁহার গুণে দিন২ আর্দ্র হইতে লাগিলেন। ঘোর অন্ধকারের পর আলোক দর্শনে যেমন আহ্লাদ জন্মে তেমনি তাঁহাদিগের মনে আনন্দ হইল মতিলালের অসদ্ব্যবহারে তাঁহারা ম্রিয়মাণ ছিলেন, মনে কিছুমাত্র সুখ ছিল না—লোক গঞ্জনায় অধোমুখ হইয়া থাকিতেন, এক্ষণে রামলালের সদ্গুণে মনে সুখ ও মুখ উজ্জ্বল হইল। দাসদাসীরা পূর্ব্বে মতিলালের নিকট কেবল গালাগালি ও মার খাইয়া পালাই২ ডাক ছাড়িত—এক্ষণে রামলালের মিষ্ট বাক্যে ও অনুগ্রহে ভিজিয়া আপন২ কর্ম্মে অধিক মনোযোগী হইল। মতিলাল, হলধর ও গদাধর রামলালের কাণ্ড কারখানা দেখিয়া পরস্পর বলাবলি করিত, ছোঁড়া পাগল হল—বোধ হয় মাথায় দোষ জন্মিয়াছে। কর্ত্তাকে বলিয়া ওকে পাগ্‌লা গারদে পাঠান যাউক—একরত্তি ছোঁড়া, দিবারাত্রি ধর্ম্ম২ বলে —ছেলে মুখে বুড়ো কথা ভালো লাগে না। মানগোবিন্দ, রামগোবিন্দ ও দোলগোবিন্দ মধ্যে মধ্যে বলে —মতিবাবু! তুমি কপালে পুরুষ —রামলালের গতিক ভাল নয় —ওটা ধর্ম্ম২ করিয়া নিকেশ হবে, তারপর তুমিই সমস্ত বিষয়টা লইয়া পায়ের উপর পা দিয়া নিছক মজা মার। আর ওটা যদিও বাঁচে তবু কেবল জড়ভরতের মত হবে। আ মরি! যেমন গুরু তেমন চেলা —পৃথিবীতে আর শিক্ষক পাইলেন না! একটা বাঙ্গালের কাছে গুরুমন্ত্র পাইয়া সকলের নিকট ধর্ম্ম২ করিয়া বেড়ান। বড় বাড়াবাড়ি কর্‌লে ওকে আর ওর গুরুকে একেবারে বিসর্জন দিব। আ মর! টগ্‌রে ছোঁড়া বলে বেড়ায়, দাদা কুসঙ্গ ছাড়্‌লে বড় সুখের বিষয় হবে —আবার বলে বরদা বাবুর নিকট গমনাগমন করিলে ভাল হয়। বরদা বাবু—বুদ্ধির ঢেঁকি। গুণবানের জেঠা! খবরদার মতিবাবু, তুমি যেন দমে পড়ে সেটার কাছে যেও না। আমরা আবার শিখ্‌ব কি? তার ইচ্ছা হয় তো সে আমাদের কাছে এসে শিখে যাউক। আমরা এক্ষণে রং চাই —মজা চাই —আয়েস চাই।

 ঠকচাচা সর্ব্বদাই রামলালের গুণানুবাদ শুনেন ও বসিয়া বসিয়া ভাবেন। ঠকের আঁচ সময় পাইলেই বাবুরামের বিষয়ের উপর দুই এক ছোবল মারিবেন। এপর্য্যন্ত অনেক মামলা গোলমালে গিয়াছে —ছোবল মারিবার সময় হয় নাই কিন্তু চারের উপর চার দিয়া ছিপ ফেলার কসুর হয় নাই। রামলাল যে প্রকার হইয়া উঠিল তাহাতে যে মাছ পড়ে এমন বোধ হইল না —পেঁচ পড়িলেই সে পেঁচের ভিতর যাইতে বাপকে মানা করিবে। অতএব ঠকচাচা ভারি ব্যাঘাত উপস্থিত দেখিল এবং ভাবিল আশার চাঁদ বুঝি নৈরাশ্যের মেঘে ডুবে গেল, আর প্রকাশ বা না পায়। তিনি মনোমধ্যে অনেক বিবেচনা করিয়া একদিন বাবুরামকে বলিলেন, বাবু সাহেব! তোমার ছোট লেড়্‌কার ডৌল নেকা করে মোর বড়ো গর্মি হচ্ছে। মোর মালুম হয় ওনা দেওয়ানা হয়েছে—তেনা মোর উপর বড় খাপ্পা, দশ আদমির নজ্‌দিগে বলে মুই তোমাকে খারাপ কর্‌লাম —এ বাত শুনে মোর দেলে বড় চোট লেগেছে। বাবু সাহেব! এ বহুত বুরাবাত —এজ এসমাফিক মোরে বল্‌লে—কেল তোমাকেও শক্ত২ বল্‌তে পারে। লেড়্‌কা ভাল হবে —নরম হবে —বেতমিজ ও বজ্জাত হলো, এলাজ দেয়া মোনাসেব। আর যে রবক সবক পড়ে তাতে যে জমিদারি থাকে এতনা মোর এক্কেলে মালুম হয় না।

 যে ব্যক্তির ঘটে বড় বুদ্ধি নাই সে পরের কথায় অস্থির হইয়া পড়ে। যেমন কাঁচা মাজির হাতে তুফানে নৌকা পড়িলে টল্‌মল্‌ করিতে থাকে —কুল-কিনারা পেয়েও পায় না— সেই মত ঐ ব্যক্তি চারিদিকে অন্ধকার দেখে— ভাল মন্দ কিছুই স্থির করিতে পারে না। একে বাবুরাম বাবুর মাজা বুদ্ধি নহে তাতে ঠকচাচার করা ব্রহ্মজ্ঞান, এই জন্য ভেবাচেকা লেগে তিনি ভদ্রজংলার মতো ফেল্‌২ করিয়া চাহিয়া রহিলেন ও ক্ষণেক কাল পরে জিজ্ঞাসা করিলেন—উপায় কি! ঠকচাচা বলিলেন—মোশার লেড়্‌কা বুরা নহে, বারদা বাবুই সব বদের জড় —ওনাকে তফাত করিলে লেড়্‌কা ভাল হবে—বাবুসাহেব! হেন্দুর লেড়্‌কা হবে হেন্দু মাফিক পাল পার্ব্বণ করা মোনাসেব, আর দুনিয়াদারি করিতে গেলে ভালা বুরা দুই চাই —দুনিয়া সাচ্চা নয় —মুই একা সাচ্চা হয়ে কি কর্‌বো?

 যাহার যেরূপ সংস্কার সেইমত কথা শুনিলে ঐ কথা বড় মনের মত হয়। হিন্দুয়ানি ও বিষয় রক্ষা সংক্রান্ত কথাতেই লক্ষ্য সিদ্ধ হইবে তাহা ঠকচাচা ভালো জানিতেন ও ঐ কথাতেই কর্ম্ম কেয়াল হইল। বাবুরাম বাবু উক্ত পরামর্শ শুনিয়া তা বটেতো২ বলিয়া কহিলেন —যদি তোমার এই মত তো শীঘ্র কর্ম্ম নিকেশ কর —টাকাকড়ি যাহা আবশ্যক হবে আমি তাহা দিব কিন্তু কল কৌশল তোমার।

 রামলালের সংক্রান্ত ঘষ্টি ঘর্ষণা এইরূপ হইতে লাগিল। নানা মুনির নানা মত —কেহ বলে ছেলেটি এ অংশে ভাল —কেহ বলে ও অংশে ভাল নহে —কেহ বলে এই মুখ্য গুণটি না থাকাতে এক কলসী দুগ্ধে এক ফোঁটা গোবর পড়িয়াছে —কেহ বলে ছেলেটি সর্ব্ব বিষয়ে গুণান্বিত, এইরূপ কিছুকাল যায় —দৈবাৎ বাবুরাম বাবুর বড় কন্যার সাংঘাতিক পীড়া উপস্থিত হইল। পিতা-মাতা কন্যাকে ভারি ভারি বৈদ্য আনাইয়া দেখাইতে লাগিলেন। মতিলাল ভগিনীকে একবারও দেখিতে আইল না।—পরম্পরায় বলিয়া বেড়াইতে লাগিল ভদ্র লোকের ঘরে বিধবা হইয়া থাকা অপেক্ষা শীঘ্র মরা ভাল, এবং ঐ সময়ে তাহার আমোদ আহ্লাদ বাড়িয়া উঠিল—কিন্তু রামলাল আহার-নিদ্রা ত্যাগ করিয়া ভগিনীর সেবা শুশ্রূষা করিতে লাগলেন ও ভগিনীর আরোগ্যের জন্য অতিশয় চিন্তান্বিত ও যত্নবান হইলেন। ভগিনী পীড়া হইতে রক্ষা পাইলেন না—মৃত্যুকালীন ছোট ভ্রাতার মস্তকে হাত দিয়া বলিলেন—রাম! যদি মরে আবার মেয়ে জন্ম হয় তবে যেন তোমার মত ভাই পাই—তুমি আমার যা করেছ তাহা আমি মুখে বলিতে পারিনে—তোমার যেমন মন তেমনি পরমেশ্বর তোমাকে সুখে রাখিবেন —এই বলিতে২ ভগিনী প্রাণ ত্যাগ করিলেন।