উইকিসংকলন:নির্বাচিত লেখা/২
বড়দিদি প্রখ্যাত সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি সামাজিক উপন্যাস। ১৯১৩ সালে পুস্তকাকারে প্রকাশিত লেখকের নামে প্রকাশিত প্রথম রচনা। রচনাটি দশটি পরিচ্ছেদে সমাপ্ত। ১৩১৪ বঙ্গাব্দ (১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে) সরলা দেবী সম্পাদিত ‘ভারতী’ পত্রিকার বৈশাখ-আষাঢ় সংখ্যায় উপন্যাসটি ধারাবাহিকভাবে প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রথম দুই সংখ্যায় লেখকের কোনো নাম মুদ্রিত হয়নি। বড়দিদি প্রকাশের পাঁচ বছর আগে ‘মন্দির’ নামে একটি গল্প ‘কুন্তলীন পুরস্কার ১৩০৯’ নামের একটি সাহিত্য স্মরণিকায় প্রথম ছাপা হয়েছিলো। ‘মন্দির’ গল্পটি যদিও শরৎচন্দ্রের লেখা, কিন্তু এটি তখন তাঁর মামা ও বাল্যবন্ধু সুরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে মুদ্রিত হয়েছিলো। ১৯০৭ সালে ‘ভারতী’তে বড়দিদি প্রকাশকালে শরৎচন্দ্র বার্মার রেঙ্গুনে বাস করতেন। ‘ভারতী’ পত্রিকায় বড়দিদি প্রকাশের বিষয়ে শরৎচন্দ্র কিছুই জানতেন না। প্রকাশের পূর্বে তো নয়ই, প্রকাশের সময়ও নয়। বড়দিদি প্রকাশের বিষয়ে শরৎচন্দ্রের কিছুই না জানার কারণ হলো- ‘ভারতী’তে বড়দিদি প্রকাশের সার্বিক দায়িত্বটি পালন করেন তাঁর বাল্যবন্ধু সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন-“১৯০১ সালে ভাগলপুর ছেড়ে যাবার আগে গল্পে-উপন্যাসে তিনটি খাতা ভরে উঠেছিলো শরৎচন্দ্রের-তিন খণ্ডের সে-ই সঙ্কলনের নাম ছিলো ‘বাগান’। ‘বাগান’ সঙ্কলনের প্রথম খণ্ডে ছিলো ‘বোঝা’, ‘কাশিনাথ’, ‘অনুপমার প্রেম’ আর ‘সুকুমারের বাল্যকথা’; দ্বিতীয় খণ্ডে ‘কোরেল’, ‘শিশু’ (বড়দিদি), ‘চন্দ্রনাথ’ আর তৃতীয় খণ্ডে ছিলো ‘দেবদাস’।”
এই উপন্যাসের কাহিনীর নায়িকা যুবতী হওয়ার আগেই অকাল বৈধব্যের শিকার হয়। জমিদারী প্রথা এবং তৎকালীন ধনী সম্প্রদায়কে লেখক খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সুরেন্দনাথ জমিদারের সন্তান, নিজ খেয়ালের মালিক। সে যেমন চায় জীবনটাকে সেই খাতে নিয়ে যেতে চায়। গৃহ শিক্ষকের ভূমিকায় তার কাহিনীতে মাধুরীর সাথে আলাপ। ক্রমে ক্রমে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে আবার তাদের পুনরায় সাক্ষাৎ হয়।