উৎসর্গ/১০
আমার মাঝারে যে আছে কে গো সে
কোন্ বিরহিণী নারী ?
আপন করিতে চাহিনু তাহারে ,
কিছুতেই নাহি পারি ।
রমণীরে কে বা জানে —
মন তার কোন্খানে ।
সেবা করিলাম দিবানিশি তার ,
গাঁথি দিনু গলে কত ফুলহার ,
মনে হল সুখে প্রসন্নমুখে
চাহিল সে মোর পানে ।
কিছু দিন যায় , একদিন হায়
ফেলিল নয়নবারি —
‘ তোমাতে আমার কোনো সুখ নাই '
কহে বিরহিণী নারী ।
রতনে জড়িত নূপুর তাহারে
পরায়ে দিলাম পায়ে ,
রজনী জাগিয়া ব্যজন করিনু
চন্দন - ভিজা বায়ে ।
রমণীরে কে বা জানে —
মন তার কোন্খানে ।
কনকখচিত পালঙ্ক ' পরে
বসানু তাহারে বহু সমাদরে ,
মনে হল হেন হাসিমুখে যেন
চাহিল সে মোর পানে ।
কিছু দিন যায় , লুটায়ে ধুলায়
ফেলিল নয়নবারি —
‘ এ - সবে আমার কোনো সুখ নাই '
কহে বিরহিণী নারী ।
বাহিরে আনিনু তাহারে , করিতে
হৃদয়দিগ্বিজয় ।
সারথি হইয়া রথখানি তার
চালানু ধরণীময় ।
রমণীরে কে বা জানে —
মন তার কোন্খানে ।
দিকে দিকে লোক সঁপি দিল প্রাণ ,
দিকে দিকে তার উঠে চাটুগান ,
মনে হল তবে দীপ্ত গরবে
চাহিল সে মোর পানে ।
কিছু দিন যায় , মুখ সে ফিরায় ,
ফেলে সে নয়নবারি —
‘ হৃদয় কুড়ায়ে কোনো সুখ নাই '
কহে বিরহিণী নারী ।
আমি কহিলাম , ‘ কারে তুমি চাও
ওগো বিরহিণী নারী । '
সে কহিল , ‘ আমি যারে চাই , তার
নাম না কহিতে পারি । '
রমণীরে কে বা জানে —
মন তার কোন্খানে ।
সে কহিল , ‘ আমি যারে চাই তারে
পলকে যদি গো পাই দেখিবারে ,
পুলকে তখনি লব তারে চিনি
চাহি তার মুখপানে । '
দিন চলে যায় , সে কেবল হায়
ফেলে নয়নের বারি —
অজানারে কবে আপন করিব '
কহে বিরহিণী নারী ।