কথামালা (১৯৪৪)/ঘোটকের ছায়া
ঘোটকের ছায়া।
এক ব্যক্তির একটি ঘোড়াা ছিল। সে, ঐ ঘোড়া ভাড়া দিয়া জীবিকানির্ব্বাহ করিত। গ্রীষ্মকালে একদিন, কোনও ব্যক্তি চলিয়া যাইতে যাইতে, অতিশয় ক্লান্ত হইযা, ঐ ঘোড়া ভাড়া করিল। মধ্যাহ্ন কাল উপস্থিত হইলে, সে ব্যক্তি ঘোড়া হইতে নামিয়া, খানিক বিশ্রাম করিবার নিমিত্ত, ঘোড়ার ছায়ায় বসিল। তাহাকে ঘোড়ার ছায়ায় বসিতে দেখিয়া, যাহার ঘোড়া সে বলিল, “ভাল, তুমি ঘোড়ার ছায়ায় বসিবে কেন? ঘোড়া তোমার নয়; এ আমার ঘোড়া, আমি ইহার ছায়ায় বসিব, তোমায় কখনও বসিতে দিব না।” তখন সে ব্যক্তি বলল, “আমি সমস্ত দিনের জন্য ঘোড়া ভাড়া করিযাছি; কেন তুমি আমায় ইহার ছায়ায় বসিতে দিবে না?” অপর ব্যক্তি বলিল, “তোমাকে ঘোড়াই ভাড়া দিয়াছি, ঘোড়ার ছায়া ত ভাড়া দি নাই।” এইরূপে ক্রমে ক্রমে বিবাদ উপস্থিত হওয়াতে, উভয়ে ঘোড়া ছাড়িয়া দিয়া মারামারি করিতে লাগিল। এই সুযোগে, ঘোড়া বেগে দৌড়িয়া পলায়ন করিল, আর উহার সন্ধান পাওয়া গেল না।
|
|
|