কথামালা (১৯৪৪)/জ্যোতির্বেত্তা

জ্যোতির্ব্বেত্তা

এক জ্যোতির্ব্বেত্তা, প্রতিদিন রাত্রিতে নক্ষত্র দর্শন করিতেন। একদিন তিনি আকাশে দৃষ্টিপাত করিয়া, নিবিষ্টমনে নক্ষত্র দেখিতে দেখিতে পথে চলিয়া যাইতেছিলেন। সম্মুখে এক কূপ ছিল; দেখিতে না পাইয়া, তাহাতে পড়িয়া গেলেন। তিনি কূপে পতিত হইয়া নিতান্ত কাতরস্বরে এই বলিয়া লোকদিগকে ডাকিতে লাগিলেন, “ভাই রে, কে কোথায় আছ, সত্বর আসিয়া কূপ হইতে উঠাইয়া, আমার প্রাণরক্ষা কর।” এক ব্যক্তি নিকট দিয়া চলিয়া যাইতেছিলেন, তিনি তাঁহার কাতরোক্তি শুনিয়া, কূপের নিকটে উপস্থিত হইলেন, এবং পড়িয়া যাইবার কারণ জিজ্ঞাসিয়া, সমস্ত অবগত হইয়া বলিলেন, “কি আশ্চর্য! তুমি যে পথে চলিয়া যাও, সেই পথের কোথায় কি আছে, তাহা জানিতে পার না; কিন্তু আকাশের কোথায় কি আছে, তাহা জানিবার জন্য ব্যস্ত হইয়াছিলে।”


জ্যোতির্ব্বেত্তা—জ্যোতিঃশাস্ত্রজ্ঞ।
কাতরস্বরে—ব্যাকুল—ব্যাকুল স্বরে।
অবগত হইয়া—জানিয়া।


নিবিষ্টমনে—একমনে।
কাতরোক্তি—কাতরতাসূচক বাক্য।
ব্যস্ত—ব্যগ্র।