কথামালা (১৯৪৪)/নেকড়ে বাঘ ও মেষের পাল
নেকড়ে বাঘ ও মেষের পাল।
কোনও স্থানে কতকগুলি মেষ চরিত। কতিপয় বলবান্ কুকুর তাহাদের রক্ষণাবেক্ষণ করিত। ঐ সকল কুকুরের ভয়ে, নেকড়ে বাঘ, মেষদিগকে আক্রমণ করিতে পারিত না। একদা বাঘেরা পরামর্শ করিল, এই সকল কুকুর থাকিতে, আমরা কিছুই করিতে পারিব না; কৌশল করিয়া ইহাদিগকে দূর করিতে না পারিলে, আমাদের সুবিধা নাই। অতএব যাহাতে ইহারা মেষগণের নিকট হইতে যায়, এমন কোন উপায় করা আবশ্যক।
এই স্থির করিয়া, তাহারা, মেষগণের নিকট বলিয়া পাঠাইল, আইস, আমরা অতঃপর সন্ধি করি। কেন চিরকাল পরস্পর বিবাদ করিয়া মরি। যে সকল কুকুর তোমাদের রক্ষণাবেক্ষণ করে, তাহারাই সমস্ত বিবাদের মূল। তাহারা অনবরত চীৎকার করে, তাহাতেই আমাদের বিষম কোপ জন্মে। তাহাদিগকে বিদায় করিয়া দাও; তাহা হইলে, চিরকাল আমাদের পরস্পর সম্ভাব থাকিবে। নির্ব্বোধ মেষগণ, এই কুমন্ত্রণায় ভুলিয়া, কুকুরদিগকে বিদায় করিয়া দিল। এইরূপে তাহারা রক্ষকশূন্য হওয়াতে, বাঘেরা অনায়াসে তাহাদের প্রাণসংহার করিয়া ইচ্ছামত উদরপূর্ত্তি করিল। শত্রুর কথায় ভুলিয়া, হিতৈষী বন্ধুকে দুর করিয়া দিলে, নিশ্চিত বিপদ ঘটে।
বলবান্—বলশালী, বলিষ্ঠ। |
পর্য্যবেক্ষণ করিতে—চৌকি দিতে। |
|
তাৎপর্য্য।—যাহারা আত্মীয় বিচ্ছেদ করাইয়া দেয়, তাহারা ঘোর শত্রু।