কথামালা (১৯৪৪)/হরিণ ও দ্রাক্ষালতা

হরিণ ও দ্রাক্ষালতা।

ব্যাধগণে তাড়াতাড়ি করাতে, এক হরিণ, প্রাণভয়ে পলাইয়া, দ্রাক্ষাবনের মধ্যে লুকাইয়া রহিল, এবং ব্যাধেরা আর আমার সন্ধান পাইবে না, এই স্থির করিয়া, স্বচ্ছন্দমনে দ্রাক্ষালতা খাইতে আরম্ভ করিল। ব্যাধগণ, হরিণের বিষয়ে নিরাশ হইয়া, ঐ দ্রাক্ষাবনের ধার দিয়া চলিয়া যাইতেছিল। তাহারা লতাভক্ষণের শব্দ শুনিয়া, বনের দিকে মুখ ফিরাইয়া, এবং ঐ স্থানে হরিণ আছে, এই অনুমান করিয়া, শরনিক্ষেপ করিল। সেই শরের আঘাতে হরিণের মৃত্যু হইল। হরিণ, এই কয়টি কথা বলিয়া প্রাণত্যাগ করিল যে, যাহারা বিপদের সময় আমায় আশ্রয় দিয়াছিল, আমি যে তাহাদের অপকারে প্রবৃত্ত হইয়াছিলাম, তাহার সমুচিত প্রতিফল পাইলাম।


দ্রাক্ষালতা—আঙ্গুবফলের গাছ।
স্বচ্ছন্দমনে—নিশ্চিন্তমনে।
প্রবৃত্ত—রত, নিযুক্ত।


সন্ধান—খবর।
নিরাশ—হতাশ।
প্রতিফল-শান্তি, সাজা।