কর্ম্মফল/চতুর্থ পরিচ্ছেদ



চতুর্থ পরিচ্ছেদ।


 সতীশ। জেঠাই মা!

 জেঠাই মা। কি বাপ্‌!

 সতীশ। আজ ভাদুড়ি সাহেবের ছেলেকে মা চা খাওয়াবেন তুমি যেন সেখানে হঠাৎ গিয়ে পোড়োনা!

 জেঠাই মা। আমার যাবার দরকার কি সতীশ!

 সতীশ। যদি যাও ত তোমার এ কাপড়ে চলবে না, তোমাকে—

 জেঠাই মা। সতীশ তোর কোন ভয় নেই আমি এই ঘরেই থাকব, যতক্ষণ তোর বন্ধুর চা খাওয়া না হয় আমি বার হব না।

 সতীশ। জেঠাই মা, আমি মনে করছি তোমার এই ঘরেই তাকে চা খাওয়াবার বন্দোবস্ত করব। এ বাড়িতে আমাদের যে ঠাসাঠাসি লোক-চা খাবার ডিনার খাবার মত ঘর একটাও খালি পাবার জো নেই! মার শোবার ঘরে সিন্ধুক্‌ ফিন্ধুক্‌ কত কি রয়েচে সেখানে কাকেও নিয়ে যেতে লজ্জা করে।

 জেঠাই মা। আমার এখানেও ত জিনিষ পত্র—

 সতীশ। ওগুলো আজকের মত বা’র করে। দিতে হবে। বিশেষতঃ তোমার এই বঁটি চুপ্‌ড়ি বারকোশগুলো কোথাও না লুকিয়ে রাখলে চলবে না।

 জেঠাই মা। কেন বাবা, ও গুলোতে এত লজ্জা কিসের? তাদের বাড়িতে কি কুট্‌না কুটবার নিয়ম নাই।

 সতীশ। তা জানিনে জেঠাই মা, কিন্তু চা খাবার ঘরে ওগুলো রাখা দস্তুর নয়। এ দেখলে নরেন ভাদুড়ি নিশ্চয় হাসবে, বাড়ি গিয়ে তার বোনদের কাছে গল্প করবে।

 জেঠাই মা। শোন একবার ছেলের কথা শোন! বঁটি চুপ্‌ড়ি ত চিরকাল ঘরেই থাকে! তা নিয়ে গল্প করতে ত গুনি নি!

 সতীশ। তোমাকে আর এক কাজ করতে হবে জেঠাই মা—আমাদের নন্দকে তুমি যেমন করে পার এখানে ঠেকিয়ে রেখো। সে আমার কথা শুনবে না, খালি গায়ে ফস্‌ করে সেখান গিয়ে উপস্থিত হবে।

 জেঠাই মা। তাকে যেন ঠেকালেম কিন্তু তোমার বাবা যখন খালি গায়ে—

 সতীশ। সে আমি আগেই মাসীমাকে গিয়ে ধরেছিলেম তিনি বাবাকে আজ পিঠে খাবার। নিমন্ত্রণ করেছেন, বাবা এসমস্ত কিছুই জানেন না!

 জেঠাই মা। বাবা সতীশ যা মন হয় করিস্‌। কিন্তু আমার ঘরটাতে তোদের ঐ খানাটানা গুলো—

 সতীশ। সে ভাল করে সাফ করিয়ে দেব এখন।