শেষ উপহার।

যাহা কিছু ছিল সব দিনু শেষ করে’
ডালাখানি ভরে,—
কাল কি আনিয়া দিব যুগল চরণে
তাই ভাবি মনে।
বসন্তে সকল ফুল নিঃশেষে ফুটায়ে দিয়ে
তরু তার পরে
একদিনে দীনহীন, শূন্যে দেবতার পানে
চাহে রিক্ত করে!

আজি দিন শেষ হলে যদি মোর গান
হয় অবসান,
কাল প্রাতে এ গানের স্মৃতিসুখ লেশ
রবে না কি শেষ?
শূন্য থালে মৌনকণ্ঠে নতমুখে আসি যদি
তোমার সম্মুখে,
তখন্ কি অগৌরবে চাহিবে না একবার
ভকতের মুখে?


দিই নি কি প্রাণপূর্ণ হৃদিপদ্মখানি
পাদপদ্মে আনি?
দিইনি কি কোনো ফুল অমর করিয়া
অশ্রুতে ভরিয়া?
এত গান গাহিয়াছি, তার মাঝে নাহি কি গো
হেন কোনো গান
আমি চলে গেলে তবু বহিবে যে চিরদিন
অনন্ত পরাণ?

সেই কথা মনে করে দিবে না কি, নব
বরমাল্য তব,

ফেলিবে না আঁখি হতে একবিন্দু জল
করুণা-কোমল,
আমার বসন্তশেষে রিক্তপুষ্প দীনবেশে
নীরবে যে দিন
ছলছল আঁখিজলে দাঁড়াইব সভাতলে
উপহারহীন?

১ পৌষ,
১৩০২।