কর্ম

  ভৃত্যের না পাই দেখা প্রাতে।
দুয়ার রয়েছে খোলা,  স্নানজল নাই তোলা,
  মূর্খাধম আসে নাই রাতে।
মোর ধৌত বস্ত্রখানি  কোথা আছে নাহি জানি,
  কোথা আহারের আয়োজন।
বাজিয়া যেতেছে ঘড়ি, বসে আছি রাগ করি,
  দেখা পেলে করিব শাসন।
বেলা হলে অবশেষে  প্রণাম করিল এসে,
  দাঁড়াইল করি করজোড়।
আমি তারে রোষভরে  কহিলাম, ‘দূর হ রে,
  দেখিতে চাহি নে মুখ তোর।’
শুনিয়া মূঢ়ের মতো  ক্ষণকাল বাক্যহত
  মুখে মোর রহিল সে চেয়ে;
কহিল গদ্‌গদস্বরে,  ‘কালি রাত্রি দ্বিপ্রহরে
  মারা গেছে মোর ছোটো মেয়ে।’
এত কহি ত্বরা করি  গামোছাটি কাঁধে ধরি
  নিত্যকাজে গেল সে একাকী।
প্রতি দিবসের মতো ঘষামাজা মোছা কত,
  কোনো কর্ম রহিল না বাকি।

১৮ চৈত্র ১৩০২