গান

তুমি পড়িতেছ হেসে
 তরঙ্গের মতো এসে
  হৃদয়ে আমার।
যৌবনসমুদ্র-মাঝে
 কোন্‌ পূর্ণিমায় আজি
  এসেছে জোয়ার!
উচ্ছল পাগল নীরে
তালে তালে ফিরে ফিরে
এ মোর নির্জন তীরে
  কী খেলা তোমার!
মোর সর্ব বক্ষ জুড়ে
কত নৃত্যে কত সুরে
এসো কাছে যাও দূরে
  শতলক্ষ বার।
তুমি পড়িতেছ হেসে
 তরঙ্গের মতো এসে
  হৃদয়ে আমার।

জাগরণসম তুমি
 আমার ললাট চুমি
  উদিছ নয়নে।
সুষুপ্তির প্রান্ততীরে
 দেখা দাও ধীরে ধীরে
  নবীন কিরণে।
দেখিতে দেখিতে শেষে
সকল হৃদয়ে এসে
দাঁড়াও আকুলকেশে
  রাতুল চরণে
সকল আকাশ টুটে
তোমাতে ভরিয়া উঠে,
সকল কানন ফুটে
  জীবনে যৌবনে।
জাগরণসম তুমি
 আমার ললাট চুমি
 উদিছ নয়নে।

কুসুমের মতো শ্বসি
 পড়িতেছ খসি খসি
  মোর বক্ষ-’পরে।
গোপন শিশিরছলে
 বিন্দু বিন্দু অশ্রুজলে
  প্রাণ সিক্ত করে।
নিঃশব্দ সৌরভরাশি
পরানে পশিছে আসি—
সুখস্বপ্ন পরকাশি
  নিভৃত অন্তরে।
পরশপুলকে-ভোর
চোখে আসে ঘুমঘোর,
তোমার চুম্বন মোর
  সর্বাঙ্গে সঞ্চরে।
কুসুমের মতো শ্বসি
 পড়িতেছ খসি খসি
  মোর বক্ষ-’পরে।

২৯ চৈত্র, ১৩০২