বিরহ

ধীরে ধীরে প্রভাত হল, আঁধার মিলায়ে গেল
ঊষা হাসে কনকবরণী,
বকুল গাছের তলে, কুসুম রাশির পরে,
বসিয়া পড়িল সে রমণী।
আঁখি দিয়ে ঝরঝরে অশ্রুবারি ঝ'রে পড়ে
ভেঙে যেতে চায় যেন বুক,
রাঙা রাঙা অধর দুটি কেঁপে কেঁপে ওঠে কত,
করতলে সকরুণ মুখ।
অরুণ আঁখির পরে, অরুণের আভা পড়ে,
কেশপাশে অরুণ লুকায়,
দুই হাতে মুখ ঢাকে কার নাম ধ'রে ডাকে,
কেন তার সাড়া নাহি পায়।
বহিছে প্রভাত বায় আঁচল লুটিয়ে যায়,
মাথায় ঝরিয়ে পড়ে ফুল,
ডালপালা দোলে ধীরে, কাননে সরসী তীরে
ফুটে ওঠে মল্লিকা মুকুল।
পা দুখানি ছড়াইয়া পূরবের পানে চেয়ে
ললিতে প্রাণের গান গায়,
গাহিতে গাহিতে গান, সব যেন অবসান,
যেন সব-কিছু ভুলে যায়।

প্রাণ যেন গানে মিশে, অনন্ত আকাশ মাঝে
উদাসী হইয়ে চলে যায়,
বসে বসে শুধু গান গায়।