তীর্থরেণু/নবাব ও গোয়ালিনী
(গুজ্রাটি গাথা)
সহর ছেড়ে সেপাই নিয়ে গুজরাটের এক গাঁয়,
ছাউনি ফেলে, নবাব সাহেব বেরুলেন সন্ধ্যায়;
অলিগলির ভিতর দিয়ে চল্তে অকস্মাৎ
দেখ্তে পেয়ে গোপের মেয়ে ধর্ত্তে গেলেন হাত!
হাত ছিনিয়ে গোপের মেয়ে কট্মটিয়ে চায়,—
ঈষৎ হেসে নবাব সাহেব ডেকে বলেন তায়,—
“নবাব আমি, আমার সাথে নগরে তুই চল্,
চাষার হাটে রূপের রাশি করিস্ নে নিস্ফল।”
“চাষার গ্রামই ভাল আমার, নগরে দিই খাক্!”
“নবাবকে তুই জবাব করিস্! বড্ড যে দেমাক!”
নবাব বলে “হিঁদুর মেয়ে, শোন্রে আমার বোল্,
সোনায় দেব অঙ্গ মুড়ে ধুক্ড়ি কথা খোল্।”
“লজ্জা ঢেকে ধর্ম্ম রেখে সোনায় মারি লাথি!”
“নবাবকে তুই জবাব করিস্! আঃরে হারামজাদি!”
“এক্লা পেয়ে মন্দ বল, স্পর্ধা তোমার বড়,
ন’ লাখ আমার গুজরাটি ভাই কর্ব্ব ডেকে জড়;
মারি চাপড়,—পাগ্ড়ি উড়াই,—লাল ক’রে দিই মুখ;
নারীর সাথে রঙ্গ করার দেখ্বে কেমন সুখ?
হাঁক দিলে মোর ন’ লাখ ভায়ে ভাঙ্বে তোমার জাঁক,
লাঠির গুঁতোয় পথের পাঁকে খুঁজতে হবে নাক;
নিলাম ক’রে বেচিয়ে দেব নবাবী তাঞ্জাম,
সান্ত্রী সেপাই, ঢাল তলোয়ার, সকল সরঞ্জাম!
টাকা টাকা বেচ্ব টাটু,—দাম্ড়িতে দশ উট”—
গতিক দেখে ঘোড়ায় উঠে নবাব দিলেন ছুট!