নেতাজীর জীবনী ও বাণী/প্রথম আজাদি ঘোষণা
২
প্রথম আজাদি ঘোষণা
[১৯৪৩ সাল ৫ই জুলাই]
“আজ আমার জীবনের সর্ব্বাপেক্ষা গৌরবের দিন। আজ বিধাতা সদয় হইয়া আমাকে অদ্বিতীয় সম্মানে ভূষিত করিলেন। আমি সমস্ত জগতের কাছে ভারতের মুক্তিফৌজের অস্তিত্বের কথা নিবেদন করিবার গৌরব লাভ করিলাম। সিঙাপুরের সমরক্ষেত্রে এই ফৌজ আজ সামরিক শ্রেণীবদ্ধতায় সজ্জিত হইয়াছে, সেই সিঙাপুর যাহা একদা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দুর্ভেদ্য দুর্গ ছিল। এই ফৌজ ব্রিটিশের বন্ধন জোয়াল হইতে ভারতবর্ষকে মুক্ত করিবে। সমস্ত ভারতবাসীর ইহা গর্ব্বের বিষয় যে, এই ভারতীয় ফৌজ সম্পূর্ণ ভারতীয় নেতৃত্বে সংগঠিত হইয়াছে এবং সেই ঐতিহাসিক মূহুর্ত্ত যখন আসিবে ভারতীয় নেতৃত্বেই ইহা সমরাভিযান করিবে। বন্ধুগণ! আমার সৈন্যগণ! “দিল্লী চলো, দিল্লী চলো” ইহাই তোমাদের যুদ্ধধ্বনি হউক। আমি নিশ্চিন্ত জানি যে, শেষ পর্যন্ত আমরা জয়লাভ করিবই। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের মৃতাবশিষ্ট বীরেরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্যতম সমাধিক্ষেত্র প্রাচীন দিল্লীর লালকেল্লায় সশস্ত্র শোভাযাত্রা করিতে পারে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কর্ত্তব্য শেষ হইবে না। এই কথা বিশ্বাস কর যে অন্ধকারে এবং রৌদ্রালোকে সুখে দুঃখে চরমতম দুর্দ্দশায় ও বিজয়ের আনন্দে আমি তোমাদের সঙ্গে থাকিব। আপাততঃ তোমাদিগকে ক্ষুধা তৃষ্ণা, যন্ত্রনা, সুদীর্ঘ পথ এবং মৃত্যু ছাড়া আমার কিছুই দিবার নাই।”
৩
১৯৪৫ সালের জানুয়ারী—“ইস্ফলের পার্ব্বত্য অঞ্চলে এবং চট্টগ্রামের সমতল ভূমিতে ভারতের স্বাধীনতার ভবিষ্যৎ নির্ভর করিতেছে। আমাদের সামরিক ধ্বনি হইবে “দিল্লী চলো” এবং “রক্ত, আরও রক্ত চাই” অর্থাৎ আমরা স্বাধীনতার জন্য রক্তপাত করিব এবং শত্রুর রক্ত ক্ষয় করিব। অসামরিক লোকদের ধ্বনি হবে করো সব নিচবর, বনোসব ফকির (সর্বস্ব বলি দিয়ে ফকির হও)।”