পাতা:অক্ষয়কুমার বড়াল গ্রন্থাবলী.djvu/১৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
প্রদীপ: সম্পাদকীয় ভূমিকা
৶০

প্রাণাধিকা প্রাণেশ্বরী তারও সনে যুদ্ধ করি,
সেও শত্রুসেনা এক জন!
শত তপস্যার ফল এই শিশু সুকোমল,
এ-ও এক যোদ্ধা বিচক্ষণ!"

Romanticism-এর মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব আছে, একটা বিদ্রোহের ভাবও আছে। রবীন্দ্রনাথের প্রথম স্তরের কবিতায় তাহা সুপরিস্ফুট। কিন্তু বড়ালকবির কাব্যের রূপান্তরে যে দ্বন্দ্ব ও বিদ্রোহের ভাব ফুটিয়াছে, তাহা প্রথম হইতেই অধিক পরিমাণে আত্মস্থ। বড়ালকবি কোথাও নিজেকে হারাইয়া ফেলেন নাই। তাঁহার 'প্রদীপে'র “আবাহন"-কবিতা একনিষ্ঠ ও বিশ্বাসী হিন্দু সাধকের আবাহন,—এ আবাহনের অভিনবত্ব বুঝাইতে হইলে মাঝে মাঝে উধৃত করিতে হয়−−

"হের, এ প্রণবে, সতী,
 স্তম্ভিত ব্রহ্মাণ্ড-গতি;
 দূর বিষ্ণুলোক হ'তে
 আশীর্ব্বাদ আসে স্রোতে,
 ঝর ঝর সপ্ত স্বর্গ, ঝরে শির'পর।
 ক্ষুদ্র নয়, তুচ্ছ নয় নর।”

 ইহা ইহলোক-পরলোকের সন্বন্ধ-বিশ্বাসী হিন্দুর কথা। প্রাণের দুর্ব্বার বেগে বড়ালকবি ঘর হইতে বাহির হইয়াছেন।

 তারপর—

"এস তবে এস ভবে,
সত্যই কৃতার্থ হবে;
এ বিকচ তনু-মন
বিধাতার ধ্যেয় ধন—
দেবাসুর রণক্ষেত্র, সর্ব্বতীর্থ—সার;
উপযুক্ত আসন তোমার।”

কবির সুর এখানে উচ্চ গ্রামে পৌঁছিয়াছে— “যাহা আমার অভিমান ও আমিত্বের আকর, যাহা পাপাসুর ও পুণ্য-দেবতার রণভূমি— এক কথায় যাহা আমার সর্ব্বতীর্থের সারস্বরূপ সেই তনু-মনকে তোমার উপযুক্ত আসন করিয়া দিতেছি।”

 তারপর—

” এল, ভেদি'/ব্রহ্মরন্ধ্র,
 হে আনন্দ—ভূমানন্দ!
উৎপাটিয়া মর্ম্মস্থল
সদ্যঃ-রক্তে ঝল—ঝল—