আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি এ কি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!
আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!
আমি উত্থান, আমি পতন, আমি অচেতন-চিতে চেতন,
আমি বিশ্ব-তোরণে বৈজয়ন্তী, মানব-বিজয়-কেতন,
ছুটি ঝড়ের মতন করতালি দিয়া,
হাসি’ হা-হা হা-হা হি-হি-হি-হি,
তাজি বোর্রাক্ আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার
হাঁকে চিঁ-হিঁ-হিঁ-হিঁ চিঁ-হিঁ-হিঁ-হিঁ !
আমি বসুধা-বক্ষে আগ্নেয়াদ্রি, বাড়ব-বহ্নি, কালানল,
আমি পাতালে মাতাল অগ্নি-পাথার-কলরোল-কল-কোলাহল !
আমি তড়িতে চড়িয়া উড়ে চলি জোর-তুড়ি দিয়া, দিয়া লম্ফ,
আমি ত্রাস সঞ্চারি ভুবনে সহসা সঞ্চারি’ ভূমিকম্প !
ধরি বাসুকির ফণা জাপটি’,
ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনের পাখা সাপটি’ !
আমি দেব-শিশু, আমি চঞ্চল,
আমি ধৃষ্ট, আমি দাঁত দিয়া ছিড়ি বিশ্ব-মায়ের অঞ্চল !
আমি অর্ফিয়াসের বাঁশরী,
মহা- সিন্ধু উতলা ঘুম-ঘুম,
ঘুম চুমু দিয়ে করে নিখিল বিশ্বে নিঝ্ঝুম
মম বাঁশরীর তানে পাশরি’!
আমি শ্যামের হাতের বাঁশরী।
আমি রুষে উঠে’ যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,
’ভয়ে সপ্ত নরক, হারিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া!
আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অধিল ব্যাপিয়া।
আমি শ্রাবণ-প্লাবন বন্যা,
কভু ধরণীরে করি বরণীয়া, কভু ৰিপুল ধ্বংস-ধন্যা।—
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ণু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা!
পাতা:অগ্নি-বীণা - নজরুল ইসলাম -দ্বিতীয় সংস্করণ.djvu/২২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বিদ্রোহী