পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
১৩২

এমন কখনো করে? ভেবে চিন্তে অস্থির হতে হয়েছে। সনাতনবাবু তো দু’বেলা হাঁটাহাঁটি করচেন। নৌকার মাঝি ফিরে এসে বললে—বাবু, শেষ রাত্তিরে কোথায় চলে গেলেন হঠাৎ— আমাকে কিছু বলে তো যান নি—সনাতনদা আবার যাবেন বলছিলেন মঙ্গলগঞ্জে খোঁজ নিতে। যান নি বোধ হয়—

 সনাতনদা ভাগ্যিস মঙ্গলগঞ্জে যায়নি। সেখানে গেলেই সব বলে দিতো গোবিন্দ দাঁ বা আবদুল হামিদ। এখনও ওরা অবিশ্যি জানে না। আমি বাড়ি চলে এসেছিলাম না কলকাতায় গিয়েছিলান। সনাতনদা অনুসন্ধান করতে গেলেই ওরা বুঝতে পারতো আমি পান্নার সঙ্গেই চলে গিয়েছি।

 একজন লোককে পাঠিয়ে দিলাম সনাতনদা’র বাড়িতে খবর দিতে যে আমি ফিরে এসেছি।

 সুরবালার মুখ দেখে বুঝলাম এর মনে কোন সন্দেহ জাগেনি। ওর মন তো আমি জানি, সরলা শান্ত স্বভাবের মেয়ে। অতশত ও কিছু বোঝে না। ও আমাকে খাওয়াতে মাখাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়লো।

 তবুও আমার মুখের দিকে চেয়ে চেয়ে ও যেন কি দেখলে।

 আমি বললাম—কি দেখচো?

 —তোমার শরীর ভাল আছে তো?

 —কেন?

 —তোমার মুখ যেন শুকিয়ে গিয়েচে—কেমন যেন দেখাচ্চে—