নায়েবমশায়ের হৃদ্যতায় আমায় কৌতুক বোধ হলেও কোনমতে হাসি চেপে রাখি। নিত্য থেকে লীলায় নেমে দেখি না ব্যাপারটা কি রকম দাঁড়ায়। সত্যিকার রাঁধুনি বামুন তো নই আমি! চা খাওয়া শেষ করে নায়েবমশায়ের পেয়ালা নামিয়ে রাখবার জন্য হাত বাড়িয়ে বললাম—দিন আমার হাতে।
নায়েবমশায় সন্তুষ্ট হলেন আমার বিনয়ে। বললেন—না তুমি বামুনের ছেলে, তোমার হাতে এঁটো পেয়ালাটা দেবো কেন? নাম কি বললে যেন?
আগে যে নামটা বলেছিলাম, সেটাই বললাম আবার।
—কি ভেবে দেখলে? চাকরী করবে?
—মাইনে কম। আজ্ঞে ওতে—
—দশ টাকা মাইনে, কম হোল হে? যাকগে, বারো টাকা দেবো দু’ মাস পরে। এখন দশ টাকাতে ভর্ত্তি হও। এখানে অনেক সুবিধে আছে হে—জমিদারের কাছারি, হাটে তোলাটা আসটা, পালপার্ব্বনে প্রজার কাছ থেকে পার্ব্বণী পাবে দু’ চার আনা, তা ছাড়া কাছারীর রাঁধুনী বামুন, ইজ্জৎ কত?
—অতিকষ্টে হাসি চেপে বললাম—আজ্ঞে, তা আর বলতে—
—রাজি?
—আজ্ঞে হ্যাঁ একটা কথা—
—কি?
—শোবো কোথায়?