পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
১৯০

মেজেতে পাতলে। বললে—কত টাকা গো? এই দশ, এই পাঁচ—

 —থাক, গুনচো কেন?

 —তুমি নেবে না?

 এখন রাখো তোমার কাছে। খরচ পত্তর তুমিই তো করবে।

 —আমার বাক্স নেই। তোমার বাক্সে রাখো।

 —তাহোলে এক কাজ করো। টাকা নিয়ে বাজারে যাও, দু’টো চায়ের ডিসপেয়ালা, ভালো চা, চিনি, এ বেলার জন্য কিছু মাছ আর আলু পটল আনো। মাছের ঝোল ভাত করি। একখানা পা-পোষ কিনে এনো তো? যত রাজ্যির ধূলো শুদ্ধু ঘরে ঢোক তুমি।

 —তা আর বলতে হয় না।

 —না হয় না, তুমি জুতো ঘরে নিয়ে ঢুকো না। পাপোষ একখানা এনো, ওখানে থাকবে। আর ধুনো এনো, সন্দেবেলা ধুনো দেবো।

 —তুমি যে সাধু হয়ে উঠলে দেখচি। আবার ধুনো?

 পান্না বিরক্তমুখে বললে—আহা কি যে রঙ্গ করো। গা যেন জ্বলে যায় একেবারে। ও মুখ ঘুরিয়ে নাচের ভঙ্গিতে চলে গেল।

 কি সুন্দর লাবণ্যময় ভঙ্গি ওর। চোখ ফেরানো যায় না। সত্যি, কোন স্বর্গে আমায় রেখেচে ও? ওকে পেয়ে দুনিয়া ভুল হয়ে গিয়েচে আমার। আমার পূর্ব্ব দুষ্পাঠ্য কথা