পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৭
অথৈজল

হালে চলে যাবে। নীল কত পায় জানো? আমার সঙ্গে তো খাটতো। আমার আদ্ধেক রোজগার ওর। মুজরোর বায়নার আদ্ধেক, আসরের প্যালা যে যা পাবে, ওর ভাগ নেই। আমার প্যালা বেশি, ও বিশেষ পেতো না। কিন্তু কলকাতা সহরে ওরা দুই বোন, বুড়ো মা—চালাচ্চে তো এক রকম ভালোই। আমাকে বলে, তোমার এত রোজগার তুমি গহনা করলে না দু’খানা। আমি বলি আমার গহনাতে লোভ নেই, তোরা করগে যা। নাচটা আরো ভালো করে শেখবার ইচ্ছে। ভাল পশ্চিমে বাইজির কাছে সাকরেদী করতে ইচ্ছে হয়। গহনা-টহনার খেয়াল নেই আমার। তুমি ভেবোনা, তোমকে সুখে রেখে দেবো।

 ওকে নিয়ে কলকাতা আসবার দিনটা নৌকোতে ও ট্রেনে ওর কি আমোদ। ছেলেমানুষের মত খুসি। বললে—এবার ক্যাস ভাঙ্গো। খুব মান রেখেছে কি বল?

 —তা তো বটে।

 —মোট কত টাকা হয়েছে বলো তো?

 —ষাটষট্টি টাকা স’দশ আনা।

 —আর প্যালা?

 —সে তুমি জানো।

 —একুশ টাকা।

 আমার একটু দুষ্টুমি করবার লোভ হোল।

 বললাম—সাঁতরা বাবুদের নায়েবের কথা শুনলে আরও অনেক বেশি হোত—