মুখুজ্যে মশায় বাড়ীর ভিতর চলে গেলেন। সত্যই তো, ছেলেপিলে নিয়ে সবাই ঘর করে, কে তোমাকে চটিয়ে গাঁয়ে বাস করবে বল তো?
—তা নয় সনাতনদা। এ জন্যে আমায় কেউ খোশামোদ করুক—এ আমি চাইনে। ডাক্তারি আমার ব্যবসা, কিন্তু সমাজের প্রতি আমারও একটা কর্ত্তব্য আছে, যেটা খুব বড়। যতই তার ওপর রাগ থাকুক, বিপদে পড়ে ডাকতে এলে বরং শত্রুর বাড়ী আমি আগে যাবো! ওই রামপ্রসাদদার যদি আজ কোনো অসুখ হয়, তুমি সকলের আগে সেখানে আমায় দেখতে পাবে!
সনাতনদা কথাটা শুনে একটু বোধ হয় অবাক হয়ে গেল, আমার মুখের দিকে খানিকটা কেমন ভাবে চেয়ে রইল। তারপর কতকটা আপন মনেই বললে—শিবচরণ কাকার ছেলে তুমি, তিনি ছিলেন মহাপুরুষ লোক, এমন কথা তুমি বলবে না তো কে বলবে?
সনাতদা এটা আমার মন রাখবার জন্যে বললে। কারণ এ গ্রামের কে না জানে, আমার বাবা তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তির অর্দ্ধেক উড়িয়েছিলেন মদে আর মেয়েমানুষে। তবে শেষের দিকে হাতে পয়সা যখন কমে এল, তখন হঠাৎ তিনি ধর্ম্মে মন দেন এবং দানধ্যান করতে শুরু করেন। প্রতি শীতকালে গরীব লোকের মধ্যে বিশ-ত্রিশধানা কম্বল বিলি করতেন, কাপড় দিতেন—এসব ছেলেবেলায় আমার দেখা। পৈত্রিক সম্পত্তির যা-কিছু অবশিষ্ট ছিল, তা তিনি উড়িয়ে দেন এই দানধ্যানের