পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১
অথৈ জল

আজ বন্ধ হোল, সব পথ বন্ধ হোল, বেঁচে থেকে লাভ কি বলো?

 সমাজের পথ কে বন্ধ করলে? অন্য লোকের দোষ দাও কেন, নিজের দোষ দেখতে পাও না?

 —আমি কারো দোষ দিচ্ছিনে শশাঙ্কদা, সবই আমার এই পোড়া অদৃষ্টের দোষ—অদৃষ্টের দোষ—কথা শেষ করে শান্তি নিজের কপালে হাতের মুঠো দিয়ে মারতে লাগলো, আর থামে না। ভালো বিপদে পড়ে গেলাম এ সন্ধ্যাবেলা পথের মধ্যে। বাধ্য হয়ে ওর কাছে গিয়ে ধমক দিয়ে বললাম—এই! কি হচ্ছে ও সব? শান্তি তবুও থামে না, আমি তখন আর কি করি, ওর হাতখানা ধরে ফেলে বললাম—ছিঃ, এ রকম করতে নেই—যাও, বাড়ী যাও—কি কেলেঙ্কারি হচ্ছে এ সব?

 শান্তি বললে—না দাদা, আর কেলেঙ্কারী করে তোমাদের মুখ হাসাবো না। নিজের ব্যবস্থা নিজেই করছি শীগগির—বলে আবারও সেই রকম অদ্ভুত হাসলে।

 —আর যাই কর, আত্মহত্যা মহাপাপ, ও কোরো না—

 —কে বললে?

 —আমি বলছি। শাস্ত্রে আছে।

 শান্তি হেসে বললে—আচ্ছা দাদা, তোমরা শাস্তর মানো?

 —মানি।

 —আত্মহত্যে হলে কি হয়?

 —গতি হয় না।

 —বেশ তো, হাঁ দাদা, আমি ম’লে তুমি গয়ায় পিণ্ডি দিয়ে আসতে পারবে না আমার নামে? বেঁচে থাকতে না পারো