—তা নয় গো। তুমি গাঁয়ের ডাক্তার, ডাক্তারকে হাতে রাখতে সবাই চেষ্টা করে।
—না না, ও আমি ভাল বাসি নে। লোকের অযথা ব্যয় করিয়ে দিতে চাইনে আমি। ও আনা তোমার উচিত হয়নি।
—আহা! কথার ছিরি ছ্যাখো না। আমি বুঝি ছাঁদা বেঁধে আনতে গিয়েছিলাম—ওরা তো পাঠিয়ে দিলে ঝি দিয়ে।
পৈতৃক আমলের দোতলা কোঠা বাড়ী। আহারাদি সেরে পূর্বদিকের ঘরে বিশ্রাম করতে গেলাম। বড় পালঙ্কখাটে পুরু গদি তোশক পাতা ভাল বিছানা। সুরবালার নিজের হাতের সুচের কাজের বালিশ-ঢাকা, বালিশের-ওয়াড়। খাটের ঝালরও ওর নিজের হাতের। এই একটা বিষয়ে আমার শৌখিনতা আছে স্বীকার করছি, ভালো বিছানা না হোলে ঘুম হবে না কিছুতেই। তা ছাড়া, ময়লা কোনো জিনিস আমি দেখতে পারিনে, দশদিন অন্তর মশারি ধোপার বাড়ী দিতে হবেই। আমার এক রোগীর বাড়ী থেকে পুরনো দামে একখানা বড় আয়না কিনেছিলাম, ওপাশের দেওয়ালে সেটা বসানো, সুরবালার শখের ড্রেসিং টেবিল পালঙ্কের বাঁ ধারে, তিনখানা নতুন বেতের চেয়ার এবার ক’লকাতা থেকে আনিয়েছি পুরবালার ফরমাশ মত খান আষ্টেক বৌবাজার স্টুডিওর ছবি—কালীয় দমন, রাসলীলা, অন্নপূর্ণার শিবকে ভিক্ষাদান, শ্রীশ্রীলক্ষ্মী, শ্রীশ্রীসরস্বতী, ইত্যাদি। আমার পছন্দসই আছে একখানা বিলিতি ল্যাণ্ডস্কেপ—সেও ওই বৌবাজারের দোকানেই কেনা।