পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৭
অথৈজল

 —না, আমি ডিসপেন্‌সারিতে শোবো। রাত বেশি নেই। ভোর রাত্রে নৌকো ছাড়বো।

 —কষ্ট করে কেন শোবেন। বড়বৌ আপনার জন্যি পূবির ঘরে তক্তাপোশে বিছেন পেতে রেখেচে।

 তখন যদি নেপাল প্রামাণিকের কথা শুনতাম, তার ভক্তিমতী সতীলক্ষ্মী স্ত্রীর কথা শুনতাম! তারপরে কতবার এ কথা আমার মনে হয়েছিল। কিন্তু তখন আর উপায় ছিল না।

 আমি নেপালের বাড়ী থেকে চলে এলাম ডাক্তারখানায়। নেপাল লণ্ঠন ধরে এগিয়ে দিয়ে গেল। ডাক্তারখানার ওদিকের বারান্দায় নৌকোর মাঝিটা অঘোরে ঘুমুচ্ছে। আমি ঘরে ঢুকে নেপালকে বিদায় দিয়ে বিছানা পাতবার যোগাড় করছি, এমন সময় বাইরে গোবিন্দ দাঁ আর আবদুল হামিদের গলা পেলাম।

 আবাস্থল হামিদ বললে—ও ডাক্তারবাবু, আলো জ্বালুন—ঘুমুলেন নাকি?

 বললাম—কি ব্যাপার?

 নিশ্চয়ই এরা চা খেতে এসেচে। কিন্তু এত রাত্রে আমি দুধ পাই কেথায় যে ওদের পক্ষে চা করি আবার? বিপন্নমুখে দোর খুলে ওদের পাশের ঘরে বসিয়ে শোয়ার ঘর থেকে লণ্ঠন নিয়ে ডিসপেন্‌সারি ঘরে ঢুকেই আমি দেখলাম একটি মেয়ে ওদের সঙ্গে। স্বাভবতই আমার মনে হোল