পাতা:অথৈজল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অথৈজল
৭৮

কারো অসুখ করেচে; নইলে এত রাত্রে ওরা দুজনে ডিসপেন্‌সারিতে আসবে কেন?

 ব্যস্ত সুরে বললাম—কী হয়েচে বলো তো? কে মেয়েটি?

 গোবিন্দ দাঁ বললে—বসুন, ডাক্তারবাবু, বসুন—কথা আছে।

 —কে বলো তো, ও মেয়েটি?

 আবদুল হামিদ দাঁত বের করে হেসে বললে—আপনার রুগী। দেখুন তো—

 সেই কিশোরী নর্ত্তকীটি। আমার মাথা যেন ঝিম ঝিম করে উঠলো। মেয়েটির সলজ্জ দৃষ্টি মাটির দিকে নামানো। মনে হোল, ওর কপাল ঘেমে উঠচে ক্লান্তিতে ও সপ্রতিভ কুণ্ঠায়।

 আমি এগিয়ে এসে বলি—কি, কি ব্যাপার? হয়েচি কি?

 গোবিন্দ দাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ করে হেসে উঠলো—আবদুল হামিদের হাসির সুরটা খিক্ খিক্ শব্দে নদীর ধারে পুরোনো শিমুল গাছে শিক্‌রে পাখীর আওয়াজের মত।

 বিরক্ত হয়ে বললাম—আঃ, বলি কি হয়েচে শুনি না?

 গোবিন্দ দাঁ বললে—মাথা ধরেচে, মাথা ধরেচে—নেচে-গেয়ে মাথা ধরেচে, এখন ওষুধ দিন, রোগ সারান।

 টেবিলের ওপর থেকে স্মেলিং সল্টের শিশিটা তুলে বললাম—এটা জোরে শুঁকতে বলো, এখুনি সেরে যাবে।

 আবদুল হামিদ আর একবার শিক্‌রে পাখীর আওয়াজের