আমি দাঁড়িয়ে আছি, ও চলে যাচ্চে—যেতে যেতে হঠাৎ মুখ ফিরিয়ে আমার দিকে চেয়ে বললে—আজ আমাদের শেষ দিন—জানেন তো?
—জানি।
—আপনি আসবেন?
—তা বলতে পারিনে—আজ এত রাত পর্য্যন্ত জেগে। কাল বাড়ীর ডাক্তারখানায় রুগী দেখতে হবে—
—সন্দের পর কাল আরম্ভ হবে তো? আপনি আসবেন, কেমন তো? তার পরেই মাথা দুলিয়ে বললে—ঠিক, ঠিক, ঠিক। যাই—
আমি কিছু বলবার আগেই পান্না হরি ময়রার দোকানের ছেঁচতলার আড়ালে অদৃশ্য হয়ে গেল।
ফিরে চলে এলাম ডাক্তারখানাতে। মাথার মধ্যে কেমন করচে। পান্নার সঙ্গে জীবনের যেন অনেকখানি চলে গেল। জীবনকে এতদিন কিছুই জানিনি, দেখিনি। শুধু ঘুরে মরেছি পাড়াগাঁয়ে ডাক্তারি করে আর সনাতনদার মত গেঁয়ো লোকের প্রশংসা কুড়িয়ে। আজ যেন মনে হোল, এ জীবন একেবারে ফাঁকা, এতে আসল জিনিস কিছুই নেই। নিজেকে ঠকিয়েছি এতদিন।
মাঝি বললে—বাবু, বাড়ি যাবেন তো? নৌকো ছাড়ি?
—একটা শক্ত কেস্ আছে, যাবো কি না তাই ভাবচি।
চলুন বাবু, কাল খাওয়া দাওয়া করে চলে আসবেন।
কাঠের পুতুলের মত গিয়ে নৌকোতে উঠলাম। নৌকো ছাড়লো আমি শুয়ে রইলাম চোখ বুজে কিন্তু পান্নার মুখ