পাতা:অদ্ভুত ফকির - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অদ্ভুত ফকির।
২৭

সক্ষম হইল না। যেদিন হইতে সে জমীদারী পাইল, সেদিন হইতে আর মাঠে ফশল নাই, প্রজাগণ হাহাকার করিতে লাগিল, খাজনা আদায় করা দায় হইয়া পড়িল। অবশেষে গৌরীশঙ্কর হতাশ হইয়া পড়িল। আমিই সেই গৌরীশঙ্কর।” এই বলিয়া গৌরীশঙ্কর স্থির হইলেন।

 আমি এই গল্পের সহিত ফকিরের মৃত্যুর যে কি সম্বন্ধ তাহা বুঝতে পারিলাম না। আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “আপনার গল্পের সহিত ফকিরের মৃত্যুর সম্বন্ধ কি বুঝিলাম না, গল্পের অবতারণা কেন করিলেন?

 গৌরীশঙ্কর ক্ষণ কালমাত্র আমার মুখের দিকে চাহিয়া মুখ অবনত করিলেন। পরে বলিলেন, “অবশ্য আমি নিশ্চয় করিয়া বলিতেছি না; কিন্তু আমার বোধ হয়, এই ফকিরকেই আমার ভাই হরশঙ্কর—”

 আমি চমকিত হইলাম। মনে হইল, গৌরীশঙ্কর তামাসা করিতেছেন। কিন্তু তাঁহার মুখের দিকে চাহিয়া দেখিলাম, তিনি গম্ভীর! আমার অতিপ্রায় বুঝিয়া তিনি পুনরায় বলিলেন, “আপনি অশ্চর্য্যান্বিত হইবেন না। আপনার বেশ জানা আছে যে, যাবজ্জীবন কারাবাসের অর্থ কুড়ি বৎসর কারাবাস। হরশঙ্কর হয়ত কুড়ি বৎসর পরে পুনরায় ফিরিয়া আসিয়াছে। হয়ত সে এরূপ ছদ্মবেশ ধারণ করিয়াছিল, আপনার মুখের আকৃতি পর্য্যন্ত পরিবর্ত্তন করিয়াছিল, কাহারও সাধ্য ছিল না, তাহাকে হরশঙ্কর বলিয়া চিনিতে পারে। আমি সহোদর ভ্রাতা হইলেও হয়ত চিনিতে পারি নাই। অবশেষে হয়ত সুবিধা পাইয়া গোপনে এখানে আসিয়া আমার একমাত্র উপকারী বন্ধু ও সৎ-পরামর্শ