পাতা:অধ্যাত্ম-রামায়ণম্‌ - পঞ্চানন তর্করত্ন.pdf/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b^ শ্রেষ্ঠকে বলিতে লাগিলেন ;–“মহাবল ! যুদ্ধ করিতে তুমি সমর্থ বটে। রাক্ষসীগণ তোমার এই মহাবল মূর্ত্তি দেখিতে পাইবে। শত্র, রাম সমীপে গমন কর । পথে যেন তোমার বিস্তু না হয় " বানর বলিল ;–“আমি ক্ষুধার্ত্ত ; আপনাকে যখন দেখিতে পাইলাম, তখন আমাকে আপনার পারণ করান উচিত হইতেছে । আপনুর চক্ষের উপর যে সকল ফল রহিয়াছে ; তাহার দ্বারা পারণ করিতে আমাকে অনুমতি দিন ।” অনস্তর জানকী “তথাস্থ” বলিয়া অনুমতি করিলে বানর সেই সমস্ত ফল ভোজন করিল। অনন্তর জানকীর নিকট গমনে অনুমতি লইয়া জানকীকে প্রণামপূর্ব্বক প্রস্থান করিল। কিছুদূর গমন করিয়া মনে মনে ভাবিতে লাগিল;—যে দূত স্বামিকার্য্যের জন্য আসিয়া যাহাতে স্বামি ক্লার্য্যের ক্ষতি না হয়, প্রত্যুত স্বামীর অভিপ্রেত) ; এরূপ অপর কোন কার্য্য না করিয়া গমন করে ; সে অধমের মধ্যেই গণ্য । অতএব আমি আরও কিছু কার্য্য করিয়৷ অগ্রে রাবণের সহিত সাক্ষাৎ ও সস্তাষণ করি, অনন্তর রামদর্শনের জন্য গমন করিব । এইরূপ মনে মনে স্থির করিয়া মহাবল হনুমান বৃক্ষসমূহকে উংপাটন করতঃ ক্ষণমধ্যে সেই অশোক-বনিকাকে বৃক্ষশূন্য করিয়া ফেলিল; মাত্র সীতার আশ্রয় শিংশপাবৃক্ষ অবশিষ্ট্র রহিল । (এইরূপে ) সমস্তবন বৃক্ষ-শূন্য করিল। রাক্ষসীগণ হনুমানকে বৃক্ষ সকল উৎপাটন করিতে দেখিয়া সীতাকে জিজ্ঞাসা করিল – এই বানরকপী অপরিচিত ব্যক্তি, কে ?" জানকী বলিলেন;–"রুক্ষসের মায়া তোমরাই বুঝ; আমি আপনার দুঃখশোকের জালায় আপনি মৰি ; উহাকে আমি জানি না।” এই কথা বলিলে রাক্ষসীগণ ভয়াওঁ হইয়া সত্বর রাবণের নিকট গমন করিল ; এবং হনমানের সকল অত্যাচার-কাহিনী রাবণকে নিবেদন করিল ;–“দেব । বানররূপী কোন এক মহাবল প্রাণী সীতার সহিত সন্তাষণ করিয়া ক্ষণ-মধ্যে অশোক-বনিকা উৎপাটন করিল এবং চৈত্য প্রাসাদ ভাঙ্গিয়াফেলিল; সেই অসীম পরাক্রম প্রাণী প্রাসাদ রক্ষকসকলকে হত্যা করিয়া সেইখানেই অবস্থিতি করিতেছে। রাক্ষসরাজ অত্যন্ত অপ্রিয় সেই বনভঙ্গের কথা শ্রবণ করিবামাত্র সত্বর উঠিয়া দুশকোটি কিঙ্কর প্রেরণ করল। এদিকে পর্ব্বতাকার হামান চৈত্য প্রসাদ চুর্ণবিচূর্ণ করিয়া তাহার প্রথম মহলে অবস্থান করিতেছিল ; একটা লৌহময় স্তত্ব, তাহার প্রহরণ হইয়াছিল; লাঙ্গুল গাছট অধ্যাত্ম-রামায়ণ । অল্প অল্প নাড়িতেছিল ; এবং তাহার স্বাভাবিক রক্তবর্ণ, মুখ, ক্রোধে আরও রক্তবর্ণ হইয়াছিল ; অতএব তৎকালে তাহার আকৃতি, সকলেরই ভীতি উৎপাদন করিতেছিল । সে, দলে দলে রাক্ষসদিগকে আসিতে দেখিয়া সিংহনাদ করিয়া উঠিল । তাহা শ্রবণ করিবামাত্র রাক্ষসগণ অতিশয় বিহ্বল হইল। নিখিল-রাক্ষস-হস্তা ভীষণাকুতি হন, মানকে অবলোকন করিয়া রাক্ষসগণ বিবিধ অস্ত্রসমূহ দ্বারা তাহাকে আঘাত করিতে লাগিল । অনস্তর যেমন গজরাজ মশককুলকে ক্ষণমধ্যে নিপেষ করিতে পারে (কোন ক্লেশ হয় না ) ; সেইরূপ হনুমান উঠিয়া মুদগর প্রহারে সেই সমস্ত রাক্ষসগণকে চূর্ণ করিয়া ফেলিল । রাবণ, কিঙ্গরগণকে নিহত হইতে শ্রবণ করিবামাত্র ক্রোধে মূচ্ছি তপ্রায় হইয়া তথায় পাঁচজন দূৰ্দ্ধৰ্ষ সেনাপতি পাঠাইল। হনুমানও তাহাদিগের সকলকেই লৌহস্তস্ত-আঘাতে শমন-সদনে প্রেরণ করিল। অনন্তর, রাবণ ক্রুদ্ধ হইয়া সাতজন মন্ত্রিপুল পাঠাইয়া দিল । বানর-শ্রেষ্ঠ পবননন্দন, সম্মুখাগত সেই সকল মন্ত্রিপুত্রগণকেও পূর্বের ন্যায় লৌহস্তস্তাঘাতে ক্ষণমধ্যে নিঃশেষ করিয়া পুর্ব্বস্থানে অবস্থিতি করত অন্যান্য রাক্ষসদিগের প্রতীক্ষা করিতে লাগিল । অনন্তর, প্রতাপ-সম্পন্ন বলবান রাজকুমার অক্ষ, তথায় গমন করিল। হনুমান তাহাকে দেখিবামাত্র মুদগর গ্রহণ করিয়া আকাশে উখিত হইল ; এবং সত্বর গগনমণ্ডল হইতে তাহার মস্তকে মুদ্গর প্রহার করিল। এইরূপে হনুমান কুমার অক্ষকে বধকরিয়া সমস্তসৈন্ত নিঃশেষ করিল। অনস্তর রাক্ষসশ্রেষ্ঠ রাবণ, কুমার অক্ষের নিধন । বার্ত্ত শ্রবণ করিবামাত্র মহাক্রোধে অধীর হইয়। ইন্দ্রজিৎকে বলিল ;–“পুত্র! আমার পুত্রঘাতী শত্রু যেখানে অবস্থিতি করিতেছে, আমি সেখানে গমন করিতেছি, সেই শক্রকে নিহত করিয়া ব৷ বন্ধন করিয়া তোমার সমীপে আনয়ন করিব।” ইন্দ্রজিং পিতাকে বলিল –“মহামতি! আপনি শোক পরিত্যাগ করুন। আমি থাকিতে তুঃখিতের হ্যায়, নিঃসহায়ের স্যায়, এরূপ বাক্য বলিতেছেন কেন ? তাত ! আমি বানরকে ব্রহ্মাস্ত্রপাশে বন্ধন করিয়া সত্বর লইয়া আসিব “ বীরবিক্রম ইশ্রজিৎ, এই বলিয়া রথরোহণপূর্বক বহুতর রাক্ষসগণে পরিবৃত হইয়া বায়ুপুত্র সমীপে গমন করিল। অনস্তুর বীরবর মারুতি রাক্ষসগণের সিংহনাদ শ্রবণ করিয়া স্তন্তু উদ্যত করত গরুড়ের