পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক > > ? মেয়ের সংস্পর্শে আসি নি । তোমাকেই প্রথম দেখেছি, তোমাকেই প্রথম ভালবেসেছি । আমাদের পরস্পরের প্রতি ভালবাসাই কি আমাদের চরম সার্থকতা নয় ?” মঞ্জরা ঝঙ্কার দিয়ে উঠে বল্লে—“না, না, কখনই নয় । ভালবাসি আমরা মুখের জন্য, মুখ না হ’লে ভালবাসার মূল্য কি ? পুরুষকে ভালবেসে নারী চায় তার গৃহ, তার গৌরব, তার স্বাচ্ছন্দ্য, তার বিলাস, তার আনন্দ । ভালবাসার মধ্যে ভালবাসার পূর্ণতা নেই, অন্য বস্তুর মধ্য দিয়ে প্রতিবিম্বিত হয়ে এলে তবেই ভালবাসাকে বাস্তব করে পাওয়া যায়। শুধু কথায় ‘ভালবাসি ভালবাসি’র মধ্যে বা চিত্তের ব্যাকুলতার মধ্যে ভালবাসার কোনও প্রতিষ্ঠা নেই। তুমি যদি বল, নিরস্তুপ আমাকে ভালবেসে তুমি সর্ব্বদা আমাকে ধ্যান কর, চিন্তা কর, তোমার মনকে নিরস্তর আমি ব্যাপ্ত করে’ রয়েছি, তবে সে ব্যাপ্তিতে আমার মুখ কি ? যে ব্যাপ্তি সংসারের কাজের মধ্যে আপনাকে প্রতিফলিত করে তুলতে পারবে না সে ভাবুকতার ব্যাপ্তির কোনও মূল্য নেই। এ কথাত তুমি নিজেও স্বীকার করেছ।” কানাই একান্ত আর্ত্তভাবে বল্লে—“ত হ’লে আমি নিরুপায় । তোমাকে আমি ভালবাসি। সেই ভালবাসার আনন্দ মুক্ত করে দেবে আমার চেতনালোককে, তা প্রবৃত্ত করবে আমাকে সহস্রবিধ কাজের মধ্যে, কিন্তু সে কাজ যে হবে তোমার সুখের সাধনা এবং তাকে সঙ্কীর্ণ করে আনতে হবে ধনাহরণের চেষ্টার মধ্যে, এ আমার পক্ষে আমি দেখছি অসম্ভব ।” মঞ্জরী বল্লে—“কেন অসম্ভব ? দশজনের পক্ষে যা সম্ভব তোমার পক্ষে তা সম্ভব হবে না কেন ? তুমি এমন কি ব্রহ্মষি দেবধি এলে যে সংসারের নিয়মকে অতিক্রম করতে চাও ?”