পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

చ్చెరిల অধ্যাপক থেকে । নারী-হৃদয়ের ভালবাসা যখন শ্রদ্ধায় পূর্ণ হয়ে ওঠে তখনই সে যায় মহাপুণ্য তীর্থসঙ্গমে । তার মনে হ’ল, কানাইবাবু তার একান্ত অপরিচিত ; একদিন মাত্র চায়ের টেবিলে দেখা, সেইটুকুতেই কানাইবাবু জীবন তুচ্ছ করে পুলিশের হাতের দণ্ড নিলেন কেড়ে। তার চোখের সামনে ভেসে যেতে লাগল চলচ্চিত্রের মত কানাইয়ের বীরত্বের সোপানপরম্পরা, চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল জনে জনে পুলিশের আক্রমণ ও তাদের ভূমিনিপাত। শেষ মুহূর্ত্তে আট দশ জন লোক পড়েছিল তার উপরে, কেবলমাত্র দেহের ভারের দ্বারা করে ফেলেছিল তাকে অবনমিত । স্মরণ হ’তে লাগল তার রক্তাক্ত দেহ, চোখের জল গড়িয়ে পড়তে লাল আপন অনিচ্ছায় ও অজ্ঞাতে তার বসনপ্রান্ত সিক্ত করে । তার একবার মনে হ’ল—কানাইবাৰু কি তাকে ভালবাসেন ? পরক্ষণেই তার মনে হ’ল—সে অসম্ভব । বক্ষ তোলপাড করে' যেন একটা আক্রন্দন হৃদয়ের শূন্যতার মধ্যে ধ্বনিত হতে লাগল। তার মনে হ’ল যে, যে-কোনও আর্ত্ত রমণীর রক্ষার জন্য কানাইবাবু এ কাজ করতৃে পারতেন এবং এখানেও তাই করেছেন । একথা ভাবতে একদিকে যেমন কানাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধায় তার হৃদয় পূর্ণ হয়ে আসতে লাগল অপরদিকে তার মনে হতে লাগল তার ব্যক্তিগত মর্য্যাদা ত তার কাছে কিছুই নেই । তার মনে হতে লাগল কানাই যে শুধু মতপ্রকাশে নির্ভীক তা নয়, সে যে শুধু বলিষ্ঠ তা নয়, তার মন যে শুধু বিদ্যুদগতিতে খেলে তা নয়, তার সমস্ত দেহের বল ঝড়ের মত ছুটে যেতে পারে ক্ষুদ্রতম মনের ইঙ্গিতে । এ ত শুধু নির্ভীকত নয়, এ হচ্ছে দেহ ও মনের বলের একটা অপূর্ব্ব সামঞ্জস্ত, একট। অপূর্ব্ব একাত্ম মিলন, যেমন মিলন দেখা যায় শক ও অর্থের মধ্যে। শক্তি ও শক্তিমান যেন এখানে অভিন্ন হয়ে পেয়েছে প্রকাশ ।