পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক 886. নেমেছে তা কানাই বাবুর প্রত্যক্ষ করবার কথা নয়—তবে কি এই ছায়া কানাইবাবুর মনেই নেমেছে? কানাইবাবুর মনেও তা হ’লে কারুর অদর্শনে ছায় পড়ে ! ঈষৎ একটু অস্ফুট হাসি এল তার মুখে, যেন ফুটনোন্মুখ গোলাপ কুঁড়ির পাপড়ির ঈষৎ প্রসারণ মাত্র । সে মনে মনে ভাবল—কানাইবাবুর মধ্যে অনেক জিনিষ দেখেছি। র্তার অক্লান্ত তপস্যা, তার তীক্ষু বিচারবুদ্ধি, সাহসিকতা, কর্ম্মঠত, এমন কি বিনা অস্ত্রে দশবিশজন লোকের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমে যাওয়াও দেখেছি, কিন্তু এ কি অঘটন ঘটনা যে আমি তার কাছে না থাকায় তাব মনে একটা অন্ধকারের ছায়া পড়বে ! কারুর মনে প্রবেশ করার কোনও স্বাভাবিক চেষ্টা বা উন্মুখত স্বজাতার ছিল না। তবে চেষ্টা না করলেও অনেকের মন সহজেই পড়ে ধর । কিন্তু কানাইয়ের মন ছিল না সে জাতীয় । নিরন্তর ব্যায়ামচৰ্চাতে তার মুখের পেশী হয়েছিল কঠিন, রং ছিল কালো। অন্তরে ক্ষণে ক্ষণে ওঠে যে ভাবতরঙ্গ তা আলোছায়ায় নেচে যেত না তার মুখে । তার দু'টি কালে চোখ কোন সময় থাকত নিম্প্রভ, কোন সময় থাকত প্রশাস্ত, কোন সময় হয়ে উঠত দীপ্ত । তার ব্যবহার ছিল সংযত, ভদ্রতা বা শিষ্টতার অতিবাহুল্য তার ছিল না । কারুর উপর কানাই যখন রাগৃত, ঘুসিট মুখের উপর পড়বার পূর্ব পর্য্যন্ত সে অনুমানই করতে পারত না যে সে রেগেছে । স্বজাতার প্রতি ব্যবহারে তার যতটুকুই বন্ধুত্ব প্রকাশ পাক না কেন, সে এমন কোনও অবকাশ পায় নি যাতে সেই ব্যবহারকে সাধারণ বন্ধুত্বের অনুরাগের চেয়ে সে বেশী আর কিছু মনে করতে পারে। তার মন অনেক সময় খুজ্যেছ কানাইয়ের চিত্তকে আবিষ্কার করবার জন্য, কিন্তু ফুলের কুঁড়ি যেমন তার সমস্ত গন্ধকে তার নিজের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে চেপে রেখে দেয় তার পাপড়িগুলির