পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88br অধ্যাপক সেই জন্য কানাই যখন তার অস্তরে সুজাতার জন্য একটা টান অনুভব করত তখন সে সর্ব্বপ্রযত্নে সে ব্যাকুলতাকে চাইত গোপন করতে ; এমন কি, নিজের মনের মধ্যেও চাইত তাকে অস্বীকার করতে, অন্য কোন রকম একটা ব্যাখ্যা দিয়ে মনটাকে চাইত হাল্কা করে? দিতে। কিন্তু জল যেমন চেপে সঙ্কচিত করা যায় না বরং তাকে চাপতে গেলে চাপ হয়ে ওঠে একান্ত দুঃসহ, তেমনি কানাইয়ের অস্তরের মধ্যে স্বজাতার জন্য টানটা ক্রমশঃই উপচিত হয়ে উঠছিল ৷ যতক্ষণ সুজাতাকে দেখতে পেত, তার সঙ্গে কথা কইতে পারত, তার সঙ্গে একত্র কাজ করতে পারত, ততক্ষণ সেই সব অবসরের মধ্য দিয়ে সঞ্চিত ব্যাকুলতার খানিকট পরিতৃপ্তি ঘটতে পারত। তাই আজ সুজাতার আদর্শনে তার ব্যাকুলত তার অন্তরকে করে তুলেছিল ভারাক্রান্ত ও অন্ধকার-মলিন । কানাই যেমন একদিকে ছুটে যেত কাজের মধ্যে জ্যা-নির্মুক্ত শরের মত, অপরদিকে সে নিরস্তর চেষ্টা করত নিজেকে খনন করে আবিষ্কার করতে। তার মনের প্রত্যেক পলিতে কি ভাবগুলি স্ফুট বা অস্ফুট হয়ে রয়েছে তা জানবার জন্য তার ছিল অসীম কৌতুহল। কিন্তু মনের স্থায় বিষয়কে আবিষ্কার করা সকল সময় সহজ নয়। বাইরের স্থঙ্ক বিষয়ের ন্যায় মনের সূক্ষ্ম বিষয়ও আবিষ্কার করতে চেষ্টা করতে গিয়ে আমরা তাদের রূপ ফেলি হারিয়ে, আবিষ্কার হয় অসম্ভব । কি ভিতরে কি বাইরে, বিধাত একে দিয়েছেন একটা সীমারেখা । সেই সীমারেখাকে অতিক্রম কয়ে’ সূক্ষ্মতম রহস্তের রাজ্যে আমরা আমাদের আবিষ্কারকে প্রসারিত করতে পারি না । কানাই অনেক সময় তুলনা করত প্রথম জীবনে মঞ্জরীর প্রতি তার আকর্ষণের সঙ্গে তার বর্তমান জীবনে সুজাতার প্রতি আকর্ষণের ।