পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8వs অধ্যাপক সহকর্ম্মীরূপে স্বজাত ইতিপূর্ব্বে কোন দিন কাউকে ভালবালে নি । তার ছিল কানাইয়ের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা । অধ্যাপকের নীচেই স্থান ছিল কানাইয়ের । সে জানত যে যে কোন বিপদেই সে পড়ুক না কেন, কানাই এসে দাড়াবে তার সামনে এবং তার সহজ স্বন্দর সৌজন্যে এবং চরিত্রের মাহাঝ্যে সে করবে যে কোন আত্মোৎসর্গ তার, জন্য । কাব্যে নাটকে সে যে রকম ভালবাসার কথা পড়েছে তার আরম্ভ ও বিকাশ সে পর্য্যবসিত হ’তে দেখেছে দেহের বিক্ষোভে । তার পবিত্র কুমারী-হৃদয় মনে করেছে এই শ্রেণীর ভালবাসাকে একান্তভাবে ক্লিন্ন ও কলুষিত। জীবনের গোড়া থেকেই তার হৃদয় ছিল উচু তারে বাধা । অধ্যাপকের সংসর্গে এসে সে তার চলে গিয়েছিল উচ্চতম গ্রামে । আবার কানাইয়ের প্রতি স্বজাতার হৃদয় যে শ্রদ্ধায় আনত হয়ে আসছিল সেই আনতির মধ্যে ঘটেছিল যে স্নিগ্ধধারার মৃদু প্রবর্ষণ তাকেও সে শ্রদ্ধা বলে’ প্রণাম করে দূরে ঠেকিয়ে রেখেছিল অনেক দিন । শ্রদ্ধার আনতিতে যে মাধুর্য্য আনে তার সঙ্গে প্রেমের মাধুধ্যের প্রথম স্তর বিচ্ছিন্ন করা অতি কঠিন । কিন্তু সহজ ভাবে পরিস্ফুর্ত্ত হ’ত সুজাতার হৃদয় । সে ছিল আত্মাম্বেষী, তাই সে যখন আবিষ্কার করল যে কানাই তার প্রতি দরদ দেখালে বা তার অভাব বোধ করলে সে হয় আনন্দিত এবং কানাইয়ের অভাব সে পারে না দীর্ঘকাল সহ করতে, তার বুকের মধ্যে কোথায় যেন একটা রগ ওঠে টনটনিয়ে, তখন তার হৃদয়ের মধ্যে উষার প্রথম আলোকের ন্যায় অস্ফুটভাবে অভিব্যক্ত হয়ে উঠল একটা নূতন অনুভব, একটা নূতন বেদন, একটা নূতন সত্য । সে তাকে বধ করতে চেষ্টা করলে না, দমন করতে চেষ্টা করলে না, সে চলল তাকে উজ্জীবিত করে তুলতে হৃদয়ের আনন্দনিষেকে ।