७8 অনুক্রম সে বিষম বিপদে পড়িয়া গেল। সেদিন যে হালদার-সাহেব তাহার বপুখানি একটি ছোট রিকশ’তে ন্যস্ত করিয়া সেক্রেটেরিয়েটে গৌরাঙ্গ সম্ভাষণে যাইবেন এ কথা অল্পপম একেবারেই ভাবে নাই । অন্যদিন বরং সে কাট রোড ধরিয়াই বাসায় ফিরিত । আজ চেনা লোক এড়াইবার জন্যই সে উপরের পথ ধরিয়াছিল । ফুলের তোড়া-সমেত অনুপম একেবারে হালদার সাহেবের সম্মুখে পড়িয়া অপ্রতিভ হইয় দাড়াইয়া গেল। হালদার-সাহেব তাহাকে দেখিয়া বলিলেন, “এই যে অনুপম, সকাল সকাল ছুটি হয়েছে, তাই আমাদের ওখানে চলেছে ! বেশ, বেশ ! গিন্নি বলছিলেন যে, ললি সারাটা দিন তোমার জন্যে বসে থাকে, কেবল ভাবে, কখন বিকেল হবে, কখন তোমার সঙ্গে বেড়াতে যাবে। বা, বেশ তোড়াটি তে অনুপম, তোমার পছন্দ আছে । ললির জন্তে বঁধিয়েছে বুঝি ? তা বেশ, বেশ ! তোমার অনুরাগ দেখে বড়ই খুলী হলুম। চল এক সঙ্গেই যাই ।” অনুপম অভ্যাস-দোষে বলিতে পারিল না যে, সে ললিতার জন্য তোড়া বাধায় নাই, আর সে অন্যত্র যাইতেছিল। কোনও জবাব না দিয়া রিকশ'র পিছন পিছন সে চলিতে আরম্ভ করিল। পথে যাইতে যাইতে তাহার মণির সঙ্গে দেখা হইল। তখন সে আর কথা না কহিয়া থাকিতে পারিল না । সে বলিয়া উঠিল, “ক’দিন ভয়ানক বিপদে পড়েছি, কিছুতেই যেতে পারছি নে ৷” মণি হাসিতে হাসিতে বলিল, “সে সমস্তই আমি শুনেছি । হারু-দা রোজ তোমার অবস্থার কথা আমায় শুনিয়ে যান। বেী-দির জন্য ফুলের তোড়া নিয়ে যাচ্ছ বুঝি ? বিয়ের সময় নিমন্ত্রণ করতে ভুলে যেয়ে না !” —আজকে শনিবার পেয়ে তোমার স্কুলের দিকে ছুটেছিলুম,
পাতা:অনুক্রম - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।