অমুক্রম - "לס\ সেদিন বেড়াইতে গিয়া অনুপম বেশী কথা কহিল না। ললিতা যতদূর পারিল তাহাকে কথা কহাইবার চেষ্টা করিল ; কিন্তু কথা কহাইতে পারিল না। তখন লজ্জায় আর অভিমানে সে চুপ করিয়া গেল। সেদিনকার বেড়ানো যতদূর সম্ভব সংক্ষেপ করিয়া অনুপম মেসে ফিরিয়! গেল । রবিবারের দিন কোনরকমে মধ্যাহ-ভোজন সারিয়া অনুপম মণিমালিনীর বাড়ী চলিয়া গেল । সারা সকালট। ঘুরিয়৷ যে-একটা বড় ফুলের তোড়া জোগাড় করিয়াছিল, সেটাকে লইয়ু, হাট-বাজার এড়াইরা সে নীচের রাস্ত দিয়া ষ্টেশনের পিছন দিয়া পলাইয় গেল । মণিমালিনী তখন একটা জানালার কাছে গালে হাত দিয়৷ বসিয়াছিল, অনুপম কখন আসিল তাহ সে দেখিতে পায় নাই । হঠাৎ মুখ ফিরাইয়া সে দেখিল, দূরে অনুপম তাহার মুখের দিকে চাহিয়৷ দাড়াইয়া আছে, ঘরে আর কেহ নেই। অনুপমের হাতে ফুলের তোড়া দেখিয়া মণির মুখ আবার লজ্জায় লাল হইয়া উঠিল । অনুপম তাহ দেখিয়া কাছে সরিয়া আসিয়া তোড়াটা মণির সম্মুখে রাখিল । মণি মুখখানা ফিরাইয়া বলিল, “নেড়া-দা যে, বসুন।" অনুপম একটু হাসিয়া বলিল, “আজ আবার বস্থন কেন ?” মণি আরও লজ্জা পাইয়া বলিল, “ভুলে গেছি—বসে না, নেড়া-দা !" - অনুপম একখান চেয়ার টানিয়া লইয়া মণির কাছে বসিল । অনেকক্ষণ কেহ কোন কথা না বলিয়া বসিয়া রহিল। তখন অনুপম অধৈর্য্য হইয়া বলিয়া উঠিল, “তোড়াটা কেমন হয়েছে, একবার দেখলে না ?”
পাতা:অনুক্রম - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।