সান্ত্বনা
গ্রামের সমস্ত গিন্নী-বান্নী, বৌ-ঝির দল তাকে দেখতে এল। অভয় পরামানিকের বউ বললে—বৌমা ভাল ছিলে তোমরা? তোমার খোকা কোথায়? কত বড়টি হয়েচে দেখি! দাঁড়াও আগে তোমাকে পেন্নাম করি। প্রণাম সেরে সে বসল।
নাপিত-বৌকে দেখে ননীবালা অবাক হয়ে গেল—সঙ্গে সঙ্গে একটা দুঃখের অনুভূতিও তার হল। অভয়ের বউ তার থেকে অন্ততঃ কুড়ি বছরের বড়—প্রায় তার মায়ের বয়সী। তার চুল পেকে গেচে, তবে অবস্থাপন্ন ঘরের বৌ হওয়ার জন্য তার বয়স তত বেশী দেখায় না। কিন্তু অভয়ের বৌ এখনও সিঁদুর পরে, অভয় এখনও বেঁচে আছে। অবশ্য এতে এমন অবাক হবার কিছু নেইও—যতই হোক সত্তরের বেশী বয়স হবে না, কিন্তু···
ননীবালা এই ‘কিন্তু’র উত্তর খুঁজে পেল না। তার আর কি মৃত্যুর বয়স হয়েছিল! ননীবালা পর দিনে দেখতে পেল যে শুধু অভয়ের বউ নয়, তার থেকেও বেশি বয়সের স্ত্রীলোকেরা এখনও পাকা চুলে সিঁদুর পরচে। তবে কেবল সে-ই কেন তাকে এত তাড়াতাড়ি ছেড়ে চলে গেল? গাঁয়ের মেয়েরা তাকে দেখতে এলে এই প্রশ্নই তার মনে থেকে-থেকে বাজতে লাগল।
৮১