হেমন্ত বললে, “সেকালে মোগল সাম্রাজ্যের সমস্ত মুল্যবান কাগজ-পত্রের ওপরে সম্রাটের পাঞ্জার ছাপ থাকত। কারণ মোগলরা জানত, শীলমোহর বা হাতের সই জাল হ’তে পারে, কিন্তু পাঁচ-আঙুল-সুদ্ধ করতল বা পাঞ্জার ছাপ জাল হওয়া অসম্ভব। পৃথিবীর কোন দুজন মানুষের পাঞ্জার ছাপ একরকম হ’তে পারে না। বাংলা পুলিসের স্যার উইলিয়ম হার্সেল সাহেব পৃথিবীতে সর্ব্বপ্রথমে আসামীদের আঙুলের ছাপ নেবার পদ্ধতি গ্রহণ করেন এই সেদিন—১৮৭৭ খৃষ্টাব্দে। আজ এই পদ্ধতির আদর পৃথিবীর দেশে দেশে। কিন্তু ভারতে এই পদ্ধতির জন্ম বহুকাল আগে। কেবল মোগলদের পাঞ্জার ছাপ নয়, হিন্দুরাও প্রাচীন কাল থেকে দলিলের উপরে নাম-সইয়ের বদলে আঙুলের টিপ-সই ক’রে আসছে। সুতরাং আধুনিক পুলিসের আবিষ্কারের ভেতরে কোনই বাহাদুরি নেই।....
..কিন্তু রবীন, সাজাহান বাদসার পাঞ্জার ছাপ দেখে তোমার কিছু মনে হচ্ছে না?”
—“হচ্ছে বৈকি! মনে হচ্ছে, এ হাতের ছাপ দেখলে সাজাহানকে স্মরণ হয় না!”
—“ঠিক বলেছ। দিল্লী-আগ্রার নানা প্রাসাদে, মস্জিদে, স্মৃতি-সৌধের ছায়ায় গিয়ে দাঁড়ালে যে শিল্পী সাজাহানের সৌন্দর্য্য-প্রীতি দেখলে অভিভূত হয়ে যেতে হয়, এই কি তাঁর নিজের হাতের ছাপ? আধুনিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানুষের
১৩