পাতা:অন্ধকারের বন্ধু - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এ-সব কথা তোমার তো জানবার নয়, তুমি তো কখনো সেখানে যাওনি!”

 —“না, তা যাইনি। কিন্তু তুমি তো এ-কথা জানো বন্ধু, সবর্বদা আমার চোখ খোলা রাখি ব'লে কোথাও না গিয়ে ও আমি অনেক কথাই বলতে পারি।”

 আশ্চর্য্য হয়ে ভাবতে লাগলুম, কোন্ সূত্র ধরে হেমন্ত আমার সম্বন্ধে এত কথা জানতে পারলে?; নিজের জামার বোতাম-ঘরে যে ‘কার্নেশান্' ফুলটি গুঁজে রেখেছিলুম হঠাৎ সেইদিকে আমার নজর পড়ল এবং সঙ্গে সঙ্গে বুঝলুম হেমন্তের আবিষ্কারের মূল আছে এই ফুলটিতেই।

 হেমন্ত অর্দ্ধ-মুদিত চোখে আমার ভাবভঙ্গি নিরীক্ষণ করছিল। হাসতে হাসতে যেন অন্তর্যামীর মতই বললে, “না, বন্ধু, না! তুমি যা ভাবছ তা নয়! জামার বোতাম-ঘরের ঐ ফুলটি তুমি কলকাতার কোন বন্ধুর বাড়ী বা ফুলের দোকান থেকেও সংগ্রহ করতে পারতে! ঐ দেখেই আমি এত কথা আন্দাজ করিনি। তোমার জুতোর দিকে তাকালেই দেখবে, ওর নীচের দিকটায় লেগে রয়েছে ভিজে এঁটেল্-মাটি। ও-রকম মাটি কলকাতার কর্দ্দমাক্ত পথেও পাওয়া যায় না। দেখলেই বোঝা যায়, ও হচ্ছে গঙ্গামাটি। জুতো প'রে তুমি নিশ্চয়ই স্নান করবার জন্যে গঙ্গা-গর্ভে নামো নি। সুতরাং আন্দাজে বুঝলুম, তুমি নৌকা-যোগে গঙ্গা পার হয়েছ আর ভাঁটার সময় ব'লে নৌকা ছেড়ে নামতে বাধ্য হয়েছ ঘাট থেকে খানিক

১৫