বেশী নয়। মনে প্রশ্ন উঠল, এই দেড় ঘণ্টা সময় সে কোথায় কাটিয়েছে? লক্ষ্য ক'রে দেখলুম, তার জামার হাতায় তরকারির হল্দে দাগ। জামায় পাণেরও ছোপ্ রয়েছে, জায়গায় জায়গায় পোড়া দাগ। জিজ্ঞাসা ক'রে জানলুম, কাল তার গায়ে ছিল এই জামাটাই। তরকারির দাগ দেখে অনুমান করলুম, থিয়েটার থেকে বাড়ীতে আসবার আগে সে কোন হোটেলে গিয়েছিল—কারণ সাধারণত থিয়েটার দেখে অত রাত্রে কেউ অন্য কোথাও নিমন্ত্রণ রাখতে যায় না। তারপর চিন্তা ক'রে দেখলুম, সিগারেটের আগুনের ফিন্কি লেগে জামায় নানা জায়গা পুড়ে যাওয়া, তরকারির দাগ আর পাণের ছোপ্ লাগা—এ-সব হচ্ছে অজ্ঞানতা আর অসাবধানতার লক্ষণ। নেশা না করলে কেউ এমন বেহুঁস হ'তে পারে না। সেইজন্যেই আন্দাজে বিনোদকে ঐ সব প্রশ্ন করেছি।”
সতীশবাবু বললেন, “অদ্ভূত আপনার তীক্ষ্ণদৃষ্টি। বিনোদকে দেখেই তার আসল চরিত্র আবিষ্কার ক'রে ফেললেন! কিন্তু কাল রাত দশটা পর্য্যন্ত বিনোদ কি করেছে, এ-কথা আপনি জানতে চাইলেন কেন?”
হেমন্ত সহাস্যে বললে, “এ জিজ্ঞাসার জবাব দেবার সময় এখনো হয়নি, আমাকে দয়া ক'রে মাপ করবেন।”
সতীশবাবু অনেকটা যেন নিজের মনে-মনেই মৃদুস্বরে বললেন, “হুঁ, বিনোদ খালি জুয়াই খেলে না, নেশাও করে! হয়তো তার আরো গুণ আছে!”
৩৮