হেমন্ত বললে, “দেখুন, কিছুকাল আগেও অপরাধের সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক ছিল না বিশেষ কিছুই। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চুরি আর খুনের মামলার তদন্ত আরম্ভ হয়েছে খুব একালেই। আগে কোন লোকের উপরে সন্দেহ হ'লে তার কাছ থেকে স্বীকার-উক্তি আদায় করবার জন্য তাকে দেওয়া হ’ত অমানুষিক যন্ত্রণা। তার ফলে কেউ কেউ মারা পড়ত এবং অনেকে প্রাণের ভয়ে নির্দ্দোষ হ'লেও মিথ্যা ব'লে অপরাধ স্বীকার করত। য়ুরোপে এমন সব ঘটনাও ঘটেছে, পুলিস সন্দেহ ক'রে একজনকে যন্ত্রণা দিয়ে মেরে ফেলেছে, তারপর প্রকাশ পেয়েছে সত্যিকার অপরাধী হচ্ছে আর-একজন লোক ৷ আসল কথা আগে অনেক ক্ষেত্রেই পুলিসের বুদ্ধির জোরে নয়, যন্ত্রণার চোটেই আসামীর অপরাধ প্রকাশ পেত ৷
“কিন্তু আজকের ধারা ভিন্নরকম। একালে পুলিস যদি যন্ত্রণা দিয়েও আসামীকে অপরাধ স্বীকারে বাধ্য করে, তাহ'লে আদালতে তা গ্রাহ্য হয় না। কিন্তু য়ুরোপের আধুনিক পুলিসকে যন্ত্রণার দ্বারা অপরাধীর দোষ আবিষ্কার করতে হয় না। তার কারণ পুলিস এখন বিজ্ঞানের সাহায্য পায় ৷ অপরাধীর স্বীকার-অস্বীকার নিয়ে পুলিস। মাথা ঘামায় না, ঘটনাস্থলে পাওয়া আসামীর ব্যবহার-করা কাপড়, জামা, জুতো, টুপী, লাঠি, ছোরা-ছুরি প্রভৃতি অনেক রকম জিনিষের ভিতর থেকে পুলিস বিজ্ঞানের সাহায্যে আশ্চর্য্য সব তথ্য আবিষ্কার করতে পারে। আসামী অপরাধ অস্বীকার করলেও দণ্ড থেকে মুক্তি পায় না ৷
৬০