পাতা:অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NqSR অপরাজিত খাওয়ালাম । তুমি এলেও দটি খেতে পেতে গো-তারই ঐ আলপনা --তাই তো! তুমি ভারী গিন্নী হয়ে উঠেছ দেখছি। লক্ষীপ জো, লোক খাওয়ানো-আমার কিন্তু এসব ভারী ভাল লাগে অপণা-সাঁত্য, মাও খাব ভালবাসতেন—একবার তখন আমরা এখানে নতুন এসেছি-একজন বড়োমত লোক আমাদের উঠোনের ধারে এসে দাঁড়িয়ে বললে,-খোকা ক্ষিদে পেয়েছে, দটো মাড়ি খাওয়াতে পারো ?-আমি মাকে গিয়ে বললাম, মা, একজন মড়ি খেতে চাচ্ছে, ওকে খানকতক রীটি করে খাওয়ালে ভারী খশী হবেখাওয়াবে মা ? মা! কি করলেন বলো তো ? --রাটি তৈরী ক’রে বঝি--তা নয় । মা একটু ক’রে সরের ঘি ক’রে রাখতেন, আমি বোডিং থেকে বাড়িটাড়ি এলে পাতে দিতেন। আমায় খাশী করবার জন্য মা সেই ঘি দিয়ে আট-দশখানা পরোটা ভেজে লোকটাকে ডেকে, দাওয়ার কোলে পিাড়ি পেতে খেতে দিলেন । লোকটা তো অবাক, তার মাখের এমন ভাব হ’ল ! রাত্রে অপণা বলিল-দ্যাখো, মা চিঠি লিখেছেন,-পজোর পর মারারি-দা আসবেন নিতে, পাঁচ-ছ'মাস যাই নি, তুমি যাবে আমাদের ওখানে ? অপাের বড় অভিমান হইল। সে এত আশা করিয়া পাজার সময় বাড়ি আসিল, আর এদিকে কিনা অপণা বাপের বাড়ি যাইবার জন্য পা বাড়াইয়া আছে! সে-ই তাহা হইলে ভাবিয়া মরে, অপণার কাছে বাপের বাড়ি যাওয়াটাই অধিকতর লোভনীয় ! অপ, উদার সরে বলিল-বেশ, যাও । আমার যাওয়া ঘটবে না, ছটি নেই এখন । কথাটা শেষ করিয়া সে পাশ ফিরিয়া শইয়া বই পড়িতে লাগিল । অপণা খানিকক্ষণ পরে বলিল-এবারে যে বইগলো। এনেছ আমার জন্যে,ওর মধ্যে একখানা "চয়নিকা’ তো আনলে না ? সেই যে সে-বার বলে গেলে জন্মাষ্টমীর সময় ? এক-আধা কথার জবাব পাইয়া ভাবিল সারা দিনের কলেষ্ট স্বামীর হয়ত ঘাম আসতেছে । তখন সেও ঘামাইয়া পড়িল । দশমীর। পরদিনই মারারি। আসিয়া হাজির । জামাইকেও যাইতে হইবে, অপণার মা বিশেষ করিয়া বলিয়া দিয়াছেন, ইত্যাদি নানা পীড়াপীড়ি শহর করিল। অপর বলি-পাগল ! ছটি কোথায় যে যাব আমি ? বোনকে নিতে এসেছে, বোনকেই নিয়ে যাও ভাই—আমরা গরীব চাকরে লোক, তোমাদের মত জমিদার নিই-আমাদের কি গেলে চলে ? অপণা বঝিয়াছিল স্বামী চটিয়াছে, এ অবস্থায় তাহার যাইবার ইচ্ছা ছিল না আদৌ, কিন্তু বড় ভাই লাইতে আসিয়াছে সে কি করিয়াই বা ‘না’ বলে ? দোটানার মধ্যে সে বড় মশকিলে পড়িল । স্বামীকে বলিল-দ্যাখো আমি যেতাম না । কিন্তু মর্যারি-দা এসেছেন, আমি কি কিছু বলতে পারি ?• • • • • • রাগ করা না লক্ষীটি, তুমি এখন না যাও, কালীপ জোর ছটিতে অবিশ্যি ক’রে 'ষেওভুলো না যেন । অপণা চলিয়া যাইবার পর মনসাপোতা আর একদিনও ভাল লাগিল না ।