অক্ষরাজিত কলিকাতার ঠিকানা দিয়া বলিয়াছিল, দরকার হইলে এই ঠিকানায় গিয়া তাহার নাম করিলেই তিনি আদর করিয়া থাকিবার স্থান দিবেন । ট্রেনে উঠিবার সময় অপ, সে-কাগজখানা বাহির করিয়া পকেটে রাখিল । রেলের পরানো টাইমটেবলের পিছন হইতে ছিাড়িয়া লওয়া একখানা কলিকাতা শহরের নক্সা তাহার টিনের তোরঙ্গটার মধ্যে অনেকদিন আগে ছিল, সেখানাও বাহির করিয়া বসিল । ইহার পর্বেও অপর শহর দেখিয়াছে, তবও ট্রেন হইতে নামিয়া শিয়ালদহ সেন্টশনের সম্মখের বড় রাস্তায় একবার আসিয়া দাঁড়াইতেই সে অবাক হইয়া গেল । এরকম কাপড় সে কোথায় দেখিয়াছে ? ট্রামগাড়ি ইহার নাম ? আর এক রকমের গাড়ি নিঃশব্দে দৌড়াইয়া চলিয়াছে, অপ, কখনও না দেখিলেও মনে মনে আন্দাজ করিল, ইহারই নাম মোটর গাড়ি । সে বিসময়ের সহিত দ-একখানার দিকে চাহিয়া চাহিয়া দেখিতে লাগিল ; সেইেটশনের অফিস ঘরে সে মাথার উপর একটা কি চাকার মত জিনিস বন বন বেগে ঘারিতে দেখিয়াছে, সে আন্দাজ করিল উহাই ইলেকট্রিক পাখা । যে-ঠিকানা বন্ধ দিয়াছিল, তাহা খাজিয়া বাহির করা তাহার পক্ষে এক মহা মশকিলের ব্যাপার, পকেটে রেলের টাইমটেবলের মোড়ক হইতে সংগ্রহ করা কলিকাতার যে নক্সা ছিল তাহা মিলাইয়া হ্যারিসন রোড খাজিয়া বাহির করিল। জিনিসপত্র তাহার এমন বেশী কিছু নহে, বগলে ছোট বিছানাটি ও ডান হাতে ভারী পাটুলিটা বুলাইয়া পথ চলিতে চলিতে সামনে পাওয়া গেল আমহাসর্ট সন্ট্রীট। তাহার পর আরও খানিক ঘরিয়া সে পঞ্চানন দাসের গলি বাহির করিল। অখিলবাব সঙ্ধ্যার আগে আসিলেন, কালো নাদস নদস চেহারা, অপর পরিচয় ও উদ্দেশ্য শনিয়া খশী হইলেন ও খাব উৎসাহ দিলেন । ঝিকে ডাকাইয়া তখনই খাবার আনাইয়া অপাকে খাইতে দিলেন, সারাদিন খাওয়া হয় নাই জানিতে পারিয়া তিনি এত ব্যস্ত হইয়া উঠিলেন যে, নিজে সন্ধ্যাহিক করিবার জনা আসনখানি মেসের ছাদে পাতিয়াও আহিক করিতে ভুলিয়া গেলেন। সন্ধ্যার সময় সে মেসের ছাদে শইয়া পড়িল । সারাদিন বেড়াইয়া সে বড় काल श्वा अफ़वाहट । সে তো কলিকাতায় আসিয়াছো-মিউজিয়াম, গড়ের মাঠ দেখিতে পাইবে তো ?--বায়োসে কাপ দেখিবে - “এখানে খাব বড় বায়োসে কাপ আছে সে জানে । তাহাদের দেওয়ান।পরের স্কুলে একবার একটা ভ্রমণকারী বায়োসে কাপের দল গিয়াছিল, তাহাতেই সে জানে বায়োস্কোপ কি অদ্ভুত দেখিতে। তবে এখানে নাকি বায়োসে কাপে গল্পের বই দেখায় । সেখানে তাহা ছিল না-রেলগাড়ি দৌড়াইতেছে, একটা লোক হাত পা নাড়িয়া মখভঙ্গি করিয়া লোক হাসাইতেছেএই সব। এখানে বায়োস্কোপে গলেপার বই দেখিতে চায় । অখিলবাবকে জিজ্ঞাসা করিল, বায়োস্কোপ যেখানে হয়, এখান থেকে কত দাির ? অখিলবাবার মেলে খাইয়া, অপ, ইহার-উহার পরামর্শমত নানাস্থানে হাঁটাহাটি করিতে লাগিল, কোথাও বা থাকিবার স্থানের জন্য, কোথাও বা ছেলে পড়াইবার সংবিধার জন্য, কাহারও কাছে বা কলেজে কিনা বেতনে ভীত হইবার যোগাযোগের 6t
পাতা:অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।