পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধূলার উপর বসিয়া পড়িল, পরে হাত একবার কপালে ঠেকাইয়া আর একবার পোকার কাছে লইয়া গিয়া বার বার দ্রুতবেগে আবৃত্তি করিতে লাগিল—সুদৰ্শন, সুভালাভালি রেখে সুদর্শন, সুভালাভালি রেখে "সুদর্শন, সুভালাভালি রেখে (অবিকল এই রূপই সে অপরের মুখে বলিতে শুনিয়াছে )। পরে সে নিজের কিছু কথা মন্ত্রের মধ্যে জুড়িয়া দিল-অপুকে ভালো রেখো, মাকে ভালো রেখো, বাবাকে ভালো রেখো, ওপাডার খুড়ীমাকে ভালো রেখে-পরে একটু ভাবিয়া ইতস্তত করিয়া-বলিল-নীরেনবাবুকে ভালো রেখো, আমার বিয়ে যেন ওখানেই হয়। সুদর্শন, রাণুদিদিদের মত বাজিবাজন হয়। ভক্তের অর্ঘ্যের আতিশয্যে পোকাটা ধূলার উপর বিপন্নভাবে চক্রাকারে ঘুরিতেছিল, দুৰ্গা মনের সাধ মিটাইয়া প্রার্থনা শেষ করিয়া শ্রদ্ধার সহিত পাশ কাটাইয়া গেল । পাডার ভিতরকার পথে পথে মাথার উপর প্রথম ফাস্তুনের সুনীল, এমন কি অনেকটা ময়ুরকষ্ঠ রংএর আকাশ গাছপালার ফঁাকে ফঁাকে চোখে পড়ে। শেওড়া বনের মাঝখান দিয়া নদীর ঘাটের সরু পথ। সুড়িাপথের দুধারেই আম বাগান। তপ্ত বাতাস আম্র-বাউলের মিষ্ট গন্ধে, বনে বনে মৌমাছি ও কঁাচপোকার গুঞ্জনরবে, ছায়াগহন আমবনে কোকিলের ডাকে, স্নিগ্ধ হইয়া আসিতেছে। বাগানগুলি পার হইয়া চড়কতলার মাঠ। ঘাসে-ভরা মাঠে ছায়া পড়িয়া গিয়াছে। দুৰ্গা ঝোপের মধ্যে সেঁয়াকুল খুজিয়া বেড়াইতে লাগিল-সেঁয়াকুল এখন আর বড় থাকে না, শীতের শেষেই ঝরিয়া যায়। ওই উঁচু ঢিবিতে ঝোপের মধ্যে একটা গাছে অনেক সেঁয়াকুল সেদিনও ত সে খাইয়া গিয়াছে কিন্তু এখন আর নাই, সব ঝরিয়া গিয়াছে, গোলমরিচের মত শুকুনা সেঁয়াকুল ঘন ঝোপের তলা বিছাইয়া পডিয়া আছে। এক বাক শালিক পাখি ঝোপের মধ্যে কিচ কিচ করিতেছিল, দুৰ্গা নিকটে যাইতে উড়িয়া গেল। তাহার মনে খুশির আবার একটা প্রবল ঢেউ আসিল। উৎসবের নৈকট্য, রাণুর দিদির বাসরে রাত জাগা ও গান শুনিবার আশা খুশিতে তাহার ইচ্ছা হইল সে মাঠের এধার হইতে ওধার পর্যন্ত ছুটিয়া বেড়ায়। একবার সে হাত দুটা ছড়াইয়া ডানার মত লম্বা করিয়া দিয়া গানিকটা ঘুরপাক খাইয়া খানিকটা চুটিয়া গেল। সে উড়িতে চায়!- শরীর ৩ তো। হালকা জিনিস-হাত ছড়াইয়া ডানার মত বাতাস কাটিতে কাটিতে যদি शNउन्ना बाहेक ! শুধু শব্দ করিবার আনন্দে সে শুকনা ঝরাপাতার রাশির উপর ইচ্ছা করিয়া St.