পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইলেও বুঝিয়াছিল। তাহার পরও এই খাইবার লোভে ও আনন্দে অপুর অন্তরতম হৃদয়ে ঘা লাগিল। তাহার মনে হইল এ কথকঠাকুর অতি অভাজন । ভাবিল, কথকঠাকুর। কখনও কিছু খেতে পায় না, আহা এই লাড়, তাই আমন করে খাচ্ছে-ওকে একদিন মা’কে ব’লে বাসাতে নেমস্তন্ন করে খাওয়াবো।-- করুণা ভালবাসার সব চেয়ে মূল্যবান মশলা, তার গাথুনি বড় পাকা হয়। তাহার শৈশব মনে এই বিদেশী, দুদিনের পরিচিত, বাঙালি কথকঠাকুর তাহার দিদি ও গুলকীর সঙ্গে এক হারে গাথা হইয়া গেল সুদ্ধ এক লাড়ডু, খাইবার অধীর লোভের ভঙ্গীতে। ইহার অল্পদিন পরেই কথকঠাকুর দেশে চলিয়া গেল। রাজঘাটের স্টেশনে কথকঠাকুরের নির্বন্ধাতিশষ্যে হরিহর অপুকে সঙ্গে করিয়া তাহাকে গাভীতে তুলিয়া দিতে গেল। হরিহরের মনে হইল। আজ বাইশ বৎসর পূর্বে সে যাহা করিতে দেশে গিয়াছিল-সেই ব্যক্তি তাহার বর্তমান বয়সের চেয়েও অন্ততঃ আট বৎসর বেশী বয়সে তাহাই করিতে অর্থাৎ নৃতন করিয়া সংসার পাতিতে দেশে চলিয়াছে। সুতরাং তাহারই বা বয়সটা এমন কি হইয়াছে ? কোন কাজ করিবার সময়ের অভাব হইতে পারে তাহার ? গাড়ী ছাডিলে অপুর চোখে জল আসিল। বালকের প্রাণে সময়ে সময়ে বয়স্ক লোকের উপর স্থায়ী সত্যিকার স্নেহ আসে । দুর্লভ বলিয়াই তাহা दद्ध भूलादान। মাঘ মাসের শেষের দিকে একদিন হরিহর হঠাৎ বাড়ী চুকিয়াই উঠানেব। ধাৱে বসিয়া পড়িল । সর্বজয়া কি করিতেছিল, কাজ ফেলিয়া তাড়াতাডি উঠিয়া আসিয়া বলিল,-কি হয়েচে এমন ক’রে বসে পড়লে যে ? স্বামীর মুখের দিকে চাহিয়া কিন্তু মুখের কথাটা তাহার মুখেই রহিয়া গেল। হরিহরের চোখ দুটা জবাফুলের মত লাল, ডান হাতখানা যেন কঁাপিতেছে। সর্বজয়া হাত ধরিয়া তুলিতে আসিতে সে ঘোরা ঘোরা আচ্ছন্নভাবে বলিল-খোকা কোথায় গেল ? খোকা ? সর্বজয়া গায়ে হাত দিয়া দেখিল জরে তাহার গা পুড়িয়া যাইতেছে। সন্তৰ্পণে হাত ধরিয়া ঘরে লইয়া গিয়া তাহাকে বিছানায় শোয়াইয়া দিয়া বলিল --অপু আসচে, তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েচে ওপরের ওই নন্দবাবু, বোধ হয়। গোধুলিয়ার মোড়ে তার দোকানে নিয়ে গ্রিয়েচে,- ع؟ অপু দোকানো যায় নাই, নন্দবাবুর ঘরের সামনে ছাদে বসিয়া বই R89